হাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে বিষধর সাপের আনাগোনা, আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা

  © সংগৃহীত

বেশ কিছুদিন ধরেই ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির সাপের দেখা মিলছে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি) ক্যাম্পাসে। এতে করে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিরাজ করছে সাপের আতঙ্ক। হাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে সব থেকে বেশি যে সাপ দেখা যাচ্ছে তা হলো বিষধর শঙ্খিনী সাপ। 

এই শঙ্খিনী সাপ কেউটে, শাখামুটি নামেও পরিচিত। ইংরেজিতে এর নাম ব্যান্ডেড ক্রেইট (Banded Krait) এবং বৈজ্ঞানিক নাম Bangarus fasciatus। এই সাপ খুব বিষধর হলেও মানুষের জন্য মোটেও ক্ষতিকর নই। বাংলাদেশের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত এই সাপের কামড়ে কোনো মানুষের মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। বরং সাধারণ মানুষ দেখলেই পালানোর চেষ্টা করে ঝোপঝাড়ে লুকিয়ে থাকে। 

শঙ্খিনী সাপ বাংলাদেশের পরিবেশ উপযোগী অন্যতম একটি দৃষ্টিনন্দন সাপ। সারা শরীর জুড়ে কালো হলুদ ডোরা কাটা এই সাপের লেজ টা ভোতা হওয়ায় গ্রামের মানুষের কাছে দুমুখো সাপ হিসেবেও পরিচিত এই সাপ। 

খুবই শান্ত ও লাজুক সভাবের এই সাপ শিকারে ভীষণ তীব্র ও বিষধর। এটি সাধারণত রাসেল ভাইপার, গোখরোর মতো বিষধর সাপদের খেয়ে ফেলে যা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। পাশাপাশি যে এলাকায় এই সাপ বসবাস করে সেখানে কোনো বিষধর সাপ থাকে না। প্রকৃতি সংরক্ষণের আন্তর্জাতিক সংগঠন আইইউসিএন এটিকে বাংলাদেশে বিপন্ন এবং বিশ্বে বিপদমুক্ত বলে বিবেচনা করে এবং বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্স অনুষদের জেনারেল এনিমেল সায়েন্স এন্ড নিউট্রিশন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. উম্মে সালমা বলেন, আমিও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কোয়াটারে থাকি সেখানেও সম্প্রতি বেশ কয়েকবার সাপের দেখা মিলেছে। এর ফলে বেশ ভয়ে ভয়েই দিন কাটাতে হচ্ছে। আর শঙ্খিনী সাপ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাকারী বিপন্ন প্রাণীগুলোর একটি। সাপ যেমন পরিবেশ রক্ষার জন্য জরুরী তেমনি সাপের বিষ জীবনরক্ষাকারী ওষুধ তৈরিতেও প্রয়োজন। সাপ বিষয়ে জ্ঞান গবেষণা আমাদের অনুষদের একটি কার্যক্রম। সম্মানিত ডিন স্যারের সাথে আলোচনা করে খুব দ্রুত ক্যাম্পাসের সাপ গুলো সংরক্ষণ করা এবং গবেষণায় কাজে লাগানোর বিষয়ে পদক্ষেপ নেবো।

এছাড়াও তিনি ক্যাম্পাসে অবস্থানরত সকলকে সাবধানে চলাফেরা করার এবং ঝোপঝাড় এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

হাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে শঙ্খিনী সাপ ছাড়াও অন্যান্য বিষধর সাপেরও দেখা পাওয়া গেছে। যেকোনো সময় ঘটে যেতে পারে দুর্ঘটনা। হাবিপ্রবির মেডিকেল সেন্টারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাপের বিষের কোনো প্রতিকারক বা এন্টিভেনোমের মজুদ নেই। এতে হুমকির মুখে ক্যাম্পাসে অবস্থানরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জীবন। তবে প্রাথমিক চিকিৎসা এবং ২৪ ঘণ্টা অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা রয়েছে বলেছে জানায় মেডিকেল সেন্টার কতৃপক্ষ।


সর্বশেষ সংবাদ