দিশেহারা হয়ে তখন শুধু কান্নাই করেছি: নিপুন (ভিডিও)

নিপুন বিশ্বাস
নিপুন বিশ্বাস  © টিডিসি ফটো

ব্যাপক সমালোচনার মুখে নিপুন বিশ্বাসকে ভর্তি করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) কর্তৃপক্ষ। একটি আসন বাড়িয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানা গেছে। আজ মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমিটির এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।

এ খবর শুনে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী নিপুন। আর সঙ্গে সঙ্গে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার তার স্বপ্নও পূরণ হতে যাচ্ছে। রাতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এ সংবাদ জানানোর পর ক্যাস্পাসে তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় নিপুন বিশ্বাস বলেন, আমি গতকাল দুপুর ১২টার ৮ মিনিটে ক্যাম্পাসে আসার পর শুনতে পাই আমার আসনে আরেকজন ভর্তি হয়ে গেছে। তখন আমি একবারে দিশেহারা হয়ে অজ্ঞান হয়ে যায়, কিছুই বলতে পরছিনা। আর শুধু কান্না আর কান্না আসছে। আমি ভাবলাম, এতো কিছু ম্যানেজ করে আসলাম আবার কিভাবে বাবা-মাকে মুখ দেখাবো। 

তিনি আরও বলেন, এখন আমি শুনলাম আমাকে ভর্তির সুযোগ দেওয়া হচ্ছে এবং এটা শুনে খুব খুশি হয়েছি। ধন্যবাদ জানাবো বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে। তারা আন্তরিকভাবে সাহায্য না করলে হয়তো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন আমার পূরণ হতো না।

জানা যায়, নিপুনের বাড়ি নীলফামারী সদর উপজেলার লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়নে। তার বাবা প্রেমানন্দ বিশ্বাস পেশায় একজন নরসুন্দর। গত রবিবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেল ৫টায় যবিপ্রবির স্বাস্থ্যবিজ্ঞান অনুষদের শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগে ২০২০-২১ সেশনে তৃতীয়বারের মতো ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তি অনুসারে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টার মধ্যে উপস্থিত হতে না পারায় ভর্তি হতে পারেননি নিপুন বিশ্বাস। তিনি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছান ততক্ষণে বেজে যায় ১২টা ৮ মিনিট। ১৫ হাজার টাকায় মাইক্রোবাস ভাড়া করে ক্যাম্পাসে এসেছিলেন তিনি।

ভুক্তভোগী নিপুন তখন বলেছিলেন, তার কোনো স্মার্টফোন নেই, যে কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ঢুকে নোটিশটি দেখতে পারেননি। এমনকি তার মোবাইলে (সাধারণ ফোন) বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোনো কল বা মেসেজও যায়নি। মাঝরাতে তার এক বড় ভাই ফোন করে বিজ্ঞপ্তির বিষয়টি জানান। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি আশপাশের লোকজন ও নিকটাত্মীয়দের কাছ থেকে ধার করে ২৩ হাজার টাকার ব্যবস্থা করেন।

এরপর নির্দিষ্ট সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছানোর জন্য ১৫ হাজার টাকায় একটি মাইক্রোবাস ভাড়া করেন। কিন্তু যশোর থেকে নীলফামারীর দূরত্ব বেশি এবং রাস্তার অবস্থা খারাপ হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছাতে দুপুর ১২টা ৮ মিনিট বেজে যায়।

তিনি যখন গাড়িতে ছিলেন তখন এক বড় ভাইকে ফোন করে বলেন, তার ক্যাম্পাসে পৌঁছাতে দেরি হবে। ক্যাম্পাসের ওই বড় ভাই বিষয়টি ডিনকে জানান। নিপুন যখন ক্যাম্পাসে পৌঁছান তখন জানতে পারেন মেরিট লিস্টে তিনি প্রথমে থাকলেও তৃতীয় সিরিয়ালে থাকা এক শিক্ষার্থীকে ভর্তি নেওয়া হয়েছে। এরপর অনেক অনুনয়-বিনয় করেও ভর্তি হতে পারেননি নিপুন।


সর্বশেষ সংবাদ