কুয়েট শিক্ষার্থীদের সাথে সংহতি জানিয়ে এবার অনশনে চুয়েটের শিক্ষার্থীরা
- চুয়েট প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৫৩ PM

কুয়েট শিক্ষার্থীদের এক দফা দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে অনশনে বসেছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুর দেড়টা থেকে ১২ ঘণ্টার জন্য প্রতীকী অনশনে বসেছেন তারা। সরজমিনে দেখা যায়, চুয়েটের স্বাধীনতা চত্বর এলাকায় বিভিন্ন কার্ড ও ফেস্টুন হাতে তারা এই প্রতীকী অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন।
অনশনকারী শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা এই ১২ ঘণ্টা কোনো প্রকার আহার বা পানীয় গ্রহণ করবেন না। জানা যায়, মূলত কুয়েট উপাচার্যের পদত্যাগ, কুয়েট শিক্ষার্থীদের সংহতি ও তাদের কষ্ট ভাগাভাগি করে নিতেই এমন উদ্যোগ নিয়েছেন চুয়েটের শিক্ষার্থীরা।
অনশনরত চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ইফতেখার মাহমুদ বলেন, ‘কুয়েটের শিক্ষার্থীরা ২ দিনের অধিক সময় ধরে অনশন করে যাচ্ছে। তাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা এখন আশংকাজনক। কিন্তু এখনো কুয়েট প্রশাসন এবং উপাচার্য তাদের ব্যর্থতা স্বীকার করেনি। তাই আমরা কুয়েট শিক্ষার্থীদের এক দফার প্রতি সংহতি জানিয়ে ১২ ঘণ্টার জন্য অনশনে বসেছি। আমাদের ভাইয়েরা ঐদিকে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে সেটা আমরা চোখ বুজে সহ্য করতে পারিনা। যদি এই ১২ ঘণ্টার ভিতরে কুয়েটের উপাচার্য পদত্যাগ না করে তাহলে আমরা আরো কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করবো।’
অনশনরত চুয়েট শিক্ষার্থী কম্পিউটার বিজ্ঞান ও কৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিন মুনকার বলেন, ‘যদি আজকে কুয়েট শিক্ষার্থীরা হেরে যায় তাহলে জুলাই হেরে যাবে। এই সংগ্রাম শুধু কুয়েটের একার নয়, এই সংগ্রাম সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানো প্রতিটি মানুষের। চুয়েটের শিক্ষার্থীরা প্রহসনের বিরুদ্ধে এই অনশনে সংহতি প্রকাশ করছে।’
কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের ২০ আবর্তের শিক্ষার্থী আতফান নূর বলেন, ‘আজকে আমাদের এখানে বসার সবচেয়ে বড় কারণ বাংলাদেশের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো শিক্ষার্থী যদি কোন নির্যাতনের শিকার হয় তবে সেটি আমাদের হৃদয়ে আঘাত করে। আমরা দেখেছি কুয়েটের যেসব শিক্ষার্থী রাজনৈতিক হামলার শিকার হলো পরবর্তীতে তাদের নামেই মামলা হল। এক্ষেত্রে একজন ছাত্রের সবচেয়ে বড় সাপোর্ট পাওয়ার কথা ছিল তার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তবে সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন সমর্থন তো পেলোই না উল্টো তাদের কেই বহিষ্কার করা হলো। কুয়েটে যে ঘটনা হলো সেই ঘটনায় যদি আজ প্রশাসন পার পেয়ে যায় তবে বাংলাদেশের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্যাসিজম কায়েম করবে। এই ঘটনায় যদি বাংলাদেশের প্রতিটা বিশ্ববিদ্যালয় কুয়েটের পাশে দাঁড়াতে না পারে তাহলে এটি শিক্ষার্থী হিসেবে লজ্জার। সেই জায়গা থেকে আমরা কুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বপক্ষে আজ অনশনে বসেছি।’
উল্লেখ্য, উপস্থিত শিক্ষার্থীরা কুয়েটে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় পরোক্ষ মদদদাতা হিসেবে কুয়েট উপাচার্য কে দায়ী করেন। তারা আরো বলেন, স্থানীয় সন্ত্রাসীর হামলার শিকার হওয়া কুয়েট শিক্ষার্থীদেরকে বহিষ্কারাদেশ প্রদান করার ঘটনা ফ্যাসিবাদী আচরণ স্বরূপ। তারা কুয়েট উপাচার্য কর্তৃক এমন ফ্যাসিবাদী আচরণের নিন্দা জানান।