উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে কুয়েট শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫:০৫ PM , আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০১:২৫ AM

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্যের পদত্যাগসহ মোট ৬ দফা দাবি নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান করছেন আন্দোলনরত ৮০ জন শিক্ষার্থী। আজ রবিবার দুপুর ২টার দিকে সেখানে তারা অবস্থান করেন। এ সময় শহীদ মিনারে ব্যাপক পুলিশ প্রটোকল এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবস্থান লক্ষ্য করা যায়। ঢাকায় অবস্থানরত কুয়েটের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরাও তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন।
এসময় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদেরকে সেফটি দিবে বললেও স্যাররা সেফটি নিশ্চিত করতে পারেনি। উপাচার্যের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি, আপনি আমাদেরকে সেফটি দেন। আপনারা জেনে থাকবেন কুয়েট ক্যাম্পাস থেকে আর্মি ক্যাম্প মাত্র ১০ মিনিটের দূরত্ব। সেই আর্মি আসতে ৪ ঘণ্টা লাগিয়েছিল। রক্তাক্ত হয়েছে আমাদের অনেক ভাই।
তারা আরও বলেন, অনেকে ঢাকায় ভর্তি আছে। মাথায় ২৬টি সেলাই লেগেছে এমন অবস্থায় আছে। হাতের হাড় তিন ভাগ হয়েছে। ডাক্তার বলছে, হয় হাত কেটে ফেলতে হবে অথবা উপরওয়ালার উপর আস্থা রাখতে হবে। আর কোনো কিছু করার নেই।
শিক্ষার্থীরা বলেন, ওই অবস্থায় ১৮ তারিখ সন্ধ্যায় যখন আমরা উপাচার্য স্যারের কাছে গিয়ে বলি, স্যার আপনি স্বীকার করেন আজকের এ ঘটনা আপনি ভালোভাবে হ্যান্ডেল করতে পারতেন। আপনি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারতেন। কিন্তু আপনি পারেননি। এ দায়ভার আপনার। তখন স্যার বলেছেন, উনি ব্যর্থ হননি।
তারা বলেন, কুয়েটের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর একটা মানুষ কুয়েট ছাত্রদের নিরাপত্তা দিতে পারেনি। ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকে বহিরাগত ছাত্রদল, যুবদল সন্ত্রাসীরা আমাদের কুপিয়েছে।
তারা প্রশ্ন তুলেন, দশ মিনিটের দূরত্ব থেকে আর্মি আসতে কীভাবে দুই ঘণ্টা সময় লাগে? যেখানে আমাদের মতে সময় লেগেছে চার ঘণ্টা।
শিক্ষার্থীরা বলেন, এমতাবস্থায় ছাত্ররা ৬ দফা দাবি নিয়ে প্রশাসনের কাছে উপস্থিত হয়। সেই ৬ দফার প্রথম ৫টি দফা এরকম ছিল যে, কুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে সম্পূর্ণ, ছাত্র রাজনীতির সাথে সংযুক্ত থাকলে তাকে বহিষ্কার এবং ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে। ছাত্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, যারা আহত হয়েছে তাদের সহায়তা দিতে হবে এবং কুয়েটের প্রশাসনকে স্বীকার করতে হবে যে ছাত্রদল কর্তৃক সাধারণ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে এবং যারা এই সন্ত্রাসী হামলার সাথে সংযুক্ত ছিল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং মামলা করতে হবে।
কিন্তু এই ৫টি দাবি মেনে নেওয়ার কথা আশ্বস্ত করা হলেও তা মেনে নেওয়া হয়নি বলে জানান তারা।
তারা বলেন, ৬ নম্বর দফাটি ছিল- উপাচার্য স্যার এবং উপ-উপাচার্য স্যারকে পদত্যাগ করতে হবে। কারণ, উনি আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেননি। এমতাবস্থায় উনি বলেছেন যে উনি পদত্যাগ করবেন না। সবশেষে আমরা প্রধান উপদেষ্টার নিকট আমাদের কষ্টের কথা তুলে ধরে একটি স্মারকলিপি প্রেরণ করি।
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে তারা বলেন, যে সরকার ছাত্র জনতার রক্তের উপর দাঁড়িয়ে আছে তার কাছ থেকে কোনো উত্তর না পেয়ে আমরা এখানে উপস্থিত হয়েছি। আমরা কাউকে কষ্ট দিতে আসিনি। আমরা জানাতে এসেছি যে আমরা নিরাপদ একটা ক্যাম্পাস চাই।
‘‘আমরা পড়াশোনা করতে এখানে এসেছি, আমরা গুলি খেতে এখানে যাই না। আমাদের ৬টি দাবি মেনে নেওয়া না পর্যন্ত, নতুন উপাচার্য নিয়োগ হওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা ক্যাম্পাসে নিরাপদ অনুভব করছি না।’’
এসময় তারা জানান, একটি দল এখন প্রধান উপদেষ্টার কাছে গিয়ে স্মারকলিপি জমা দিবে এবং ফিরে এসে পরবর্তী প্রেস ব্রিফিং করবে।