চুয়েটের ১৮ ছাত্রলীগ নেতা বহিষ্কার
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৩:৩১ PM , আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৪:৩১ PM

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা-নির্যাতন এবং ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডসহ বিভিন্ন ঘটনায় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) আবাসিক হল থেকে ১৮ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা সবাই চুয়েট ছাত্রলীগের নেতা। একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে আরও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা কেন নেওয়া হবে না, সেটি জানতে চেয়ে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির ২৮১তম সভায় (জরুরি) এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সাময়িক বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন চুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি তোফাইয়া রাব্বি, মো. ইমাম হোসেন, মো. সাদিকুজ্জামান, ইউসুফ আবদুল্লাহ, মো. তানভীর জনি, ইফতেখার সাজিদ ও শাকিল ফরাজী; সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ তৌফিকুর রহমান, সৌমিক জয়, তালহা জুবায়ের, মাহমুদুল হাসান, মো. রিফাত হোসাইন, মইনুল হক এবং সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আজহারুল ইসলাম, ইরফানুল করিম, আশিকুল ইসলাম, তাহসিন ইশতিয়াক, আবদুর রহমান।
এছাড়াও আরও তিনজনকে কেবল কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। তারা হলেন, চুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিজয় হোসেন, সহসভাপতি চিন্ময় কুমার দেবনাথ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. রাকিব উদ্দিন চৌধুরী।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বহিষ্কার ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে আবাসিক হলে মদ্যপানে অভিযুক্ত এক শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে গতকাল দুপুর ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবনের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রাতের মধ্যে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের হল থেকে বহিষ্কার করবেন বলে জানান। একই সঙ্গে অভিযোগ প্রমাণ হওয়া সাপেক্ষে তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হবে বলেও জানানো হয়। এরপর বিক্ষোভ প্রত্যাহার করেন শিক্ষার্থীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চুয়েটের সমন্বয়ক মাহাফুজার রহমান বলেন, ‘স্বৈরাচার সরকার পতনের পর থেকে আমরা বারবার ছাত্রলীগের বিচারের দাবিতে প্রশাসনের কাছে গিয়েছি। শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসন অবশেষে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নিল। আমরা আশা করি, দ্রুত তদন্তপ্রক্রিয়া শেষ করে তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও বহিষ্কার করা হবে। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি আমরা জানিয়েছি।’
জানতে চাইলে ছাত্রকল্যাণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম শৃঙ্খলা কমিটির সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ২৬ ফেব্রুয়ারি বেলা ৩টার মধ্যে ওই ১৮ শিক্ষার্থীসহ ২১ জনকে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে। তাদের জবাব এবং অভিযোগের বিপরীতে পাওয়া তথ্য-প্রমাণের আলোকে পরবর্তী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মাহমুদ আবদুল মতিন ভূঁইয়া বলেন, শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে কয়েকজন ছাত্রের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হলে শাস্তি আরও বাড়ানো হবে। যদি কোনো শিক্ষার্থী তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা না থাকার বিষয়টি প্রমাণ করতে পারেন, তবে তাদের শাস্তি স্থগিত হবে। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সিন্ডিকেটের কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি। তাই অধিকতর তদন্তের জন্য আরেকটি কমিটি গঠিত হয়েছে। ওই কমিটির প্রতিবেদন দিলে এর আলোকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী ওই শিক্ষকের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।