সেদিন আবরারকে নিজে গাড়িতে তুলে দিয়েছিলেন মা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ১২:১৭ AM , আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ১২:২৬ AM
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের ৫ বছর পূর্ণ হয়েছে। ফেসবুকে ভারতবিরোধী স্ট্যাটাস দেওয়ার জেরে ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর বুয়েটের শেরে বাংলা হলে ছাত্রলীগের হাতে খুন হন তিনি। আবরার ফাহাদকে যেদিন হত্যা করা হয়ছিল সেদিন বাড়ি থেকে ফেরার সময় তাকে তার মা গাড়িতে তুলে দিয়েছিলেন।
রবিবার (৬ অক্টোবর) রাতে আবরার ফাহাদকে নিয়ে তার ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজের ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টে এসব কথা বলেন। ফাইয়াজ বুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী।
আরও পড়ুন: আবরার হত্যাকাণ্ডের ৫ বছর কাল: ‘শিবির ধরা হয়েছে’ খবরে বুয়েটের হলে জড়ো হয়েছিল ছাত্রলীগ
আবেগঘন পোস্টে ফাইয়াজ বলেন, ‘২০১৯ সালের আজ অর্থাৎ ৬ অক্টোবর ভাইয়া ঢাকাতে যায়। ২৬ই সেপ্টেম্বরে কুষ্টিয়াতে আসার পরেই ইলিশ আর ভারতের সাথে চুক্তি নিয়ে দুটি পোস্ট দিয়েছিলো। সেদিন আম্মু নিজে ভাইয়াকে গাড়িতে তুলে দিয়ে আসছিলো। এরপর মাত্র ১৩-১৪ ঘন্টার মধ্যে ওকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করা হয়। আর ২০ ঘণ্টা পরই বাসায় আসে মৃত্যুর সংবাদ।’
তিনি আরও বলেন, সেদিন সকালে যাওয়ার আগে ৯টার দিকে আম্মু আমাকে ডেকেছিলো। ভাইয়া চলে যাচ্ছে, ওঠ। কিন্তু ভাইয়া বলে, ‘না থাক, অনেক রাতে ঘুমাইছে ঘুমাতে দেও। আমি চলে গেলাম। তুই বেশিদিন থাকিস না তাড়াতাড়ি ঢাকা চলে আসিস।’ যাওয়ার আগের রাতে আম্মুকে ভাইয়া বলেছিলো, ‘আম্মু অনেক ছারপোকা কামড়ায়। পিঠে একটু হাত বুলিয়ে দেও তো। কোনো দাগ হয়ে গেছে নাকী? আচ্ছা তোমার কাছে কী এমন কোনো ওষুধ আছে যা লাগালে আর কামড়াবে না আমাকে?’ It has been a long time brother.’.
আরও পড়ুন: বুয়েটের হলে আবরারকে পিটিয়ে হত্যার পর সিঁড়িতে লাশ ফেলে রাখে ছাত্রলীগ
প্রসঙ্গত, আবরার ছিলেন ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র। থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে। সেখান থেকে ডেকে নিয়ে ওই রাতে তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করে বুয়েট ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী। এরপর রাত ৩টার দিকে হলের সিঁড়ির করিডোর থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। এ নিয়ে দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
হত্যাকাণ্ডের পরদিন আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে রাজধানীর চকবাজার থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মাত্র ৩৭ দিনে তদন্ত শেষ করে একই বছরের ১৩ নভেম্বর চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক মো. ওয়াহিদুজ্জামান। আসামিদের মধ্যে তিনজন মামলার শুরু থেকেই পলাতক।
২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৫ জনের যাবজ্জীবনের আদেশ দেন আদালত। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামানের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।