সহকারী প্রক্টর থেকে পদত্যাগ করে শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে বুটেক্স শিক্ষক 

  © সংগৃহীত

সারাদেশে শিক্ষার্থী হত্যার বিচারের দাবির প্রেক্ষিতে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিতে অংশ নিতে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) শিক্ষকদের আহ্বান করেন শিক্ষকরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির অংশ হিসেবে 'সহকারী প্রক্টর' পদে থাকা এক শিক্ষক তাঁর অতিরিক্ত পদের জন্য শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা রেখে কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারবেন না শুনে সরে আসলেন উক্ত পদ থেকে। অত:পর অংশ নিলেন কর্মসূচিতে।

বুধবার (৩১ জুলাই) ইয়ার্ণ ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. সুলতান মাহমুদ-এর সাথে ঘটে ঘটনাটি। তিনি সহকারী প্রক্টর হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্বে ছিলেন। সারাদেশে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, হত্যা, গ্রেপ্তার, মামলা, হয়রানির প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিতে পালনের উদ্দ্যোগ নেওয়ার সময় জানতে পারলেন দায়িত্বে থেকে উক্ত কর্মসূচি তিনি পালন করতে পারবেন না। অত:পর তিনি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির জন্য পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে কর্মসূচিতে অংশ নেন।

তিনি পদত্যাগপত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের নিকট জমা দেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৮ অক্টোবর, ২০২৩ তারিখ হতে একজন সহকারী প্রক্টর (অতিরিক্ত দায়িত্ব) হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলাম। উক্ত পদে থেকে স্বীয় কর্তব্য পালনে সীমাবদ্ধতা এবং ব্যক্তিগত কারণে সহকারী প্রক্টর পদ থেকে আজ পদত্যাগ পত্র দাখিল করছি।

অতিরিক্ত দায়িত্ব হতে সরে আসার বিষয়ে ড. মো. সুলতান মাহমুদ বলেন, সহকারী প্রক্টর হিসেবে যেসব দায়িত্ব আছে তা নানা সীমাবদ্ধতার কারণে হয়ে উঠছিল না। এর সাথে যুক্ত হয়েছে বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলনের ন্যায্য দাবি। পদে থাকা অবস্থায় নাকি সংহতিও প্রকাশ করা যাবে না। শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির বিষয়টা শিক্ষক হিসেবে আমাকে সবসময় তাড়া করে। শিক্ষক হিসেবে ন্যায্যতার পক্ষে আমাকে অবস্থান নিতেই হবে। এ অবস্থানের বিপরীতে ছোট একটা পদ ছেড়ে দেওয়া কঠিন কিছু না। বরং পদ ছেড়ে দিয়ে যদি ন্যায্যতার পক্ষে যদি কথা বলতে পারি তাহলে এটা আমার জন্য প্রাপ্তি। একটু হলেও আমার ভেতরে বেদনা লাঘব হবে যে ছাত্রদের জন্য কিছু কথা প্রকাশ্যে বলতে পারছি।

শিক্ষকের উক্ত কার্যক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইকবাল হোসেন ইমন বলেন, মার্চ ফর জাস্টিস কর্মসূচিতে যোগ দেয়ার জন্য সহকারি প্রক্টর দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াতে হয়েছে সুলতান স্যারকে। ব্যথিত হইলাম এ কারণে যে ছাত্রদের সাথে দাঁড়ানো শিক্ষকদেরই আমরা প্রশাসনে চাই। কিন্তু আনন্দিত এই জন্যে যে স্যার জুলুম মেনে নেন নি। যে শক্তি উনাকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে দেয় না উনি মেরুদন্ড সোজা করে তা ত্যাগ করেছেন। শিক্ষক হিসেবে এমন উদাহরণই ছাত্রদের সামনে আসা উচিত।

তিনি আরও বলেন, সাধারণ ছাত্রদের পক্ষ থেকে বলব আমরা স্যারের সাথে আছি। যেভাবে উনি আমাদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। একইসাথে তাকে পুনরায় সহকারী প্রক্টরের পদে বহাল রাখার দাবি জানাচ্ছি।


সর্বশেষ সংবাদ