পুড়ে মারা যাওয়া বুয়েট ছাত্রী লামিশা অতিরিক্ত ডিআইজির মেয়ে

পুলিশের এডিশনাল ডিআইজি নাসিরুল ইসলাম ও লামিশা
পুলিশের এডিশনাল ডিআইজি নাসিরুল ইসলাম ও লামিশা  © সংগৃহীত

রাজধানীর বেইলি রোডে বহুতল ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত হয়েছেন দেশের শীর্ষ বিদ্যাপীঠ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্রী লামিশা ইসলাম। তিনি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে কর্মরত অতিরিক্ত ডিআইজি মো. নাসিরুল ইসলাম বিপিএমের মেয়ে লামিশা।

২০১৮ সালে অসুস্থতাজনিত কারণে লামিশার মারা যান মা। এরপর ছোট বোন আর বাবাকে আগলে রাখতেন লামিশা। দুই কন্যা সন্তানের কথা চিন্তা করে পুলিশ কর্মকর্তা বাবা ডিআইজি মো. নাসিরুল ইসলাম আর বিয়ে করেননি। স্কুল-কলেজ পেরিয়ে লামিশা ভর্তি হয়েছিলেন দেশসেরা বিদ্যাপীঠে। কিন্তু মেধাবী এই শিক্ষার্থীর জীবন প্রদীপ নিভে গেল রাজধানীর বেইলি রোডের আগুনে।

এ নিয়ে বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক আবেগঘন বার্তা দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ছোট বেলায় মা হারা পরিবারে লামিশারা ছিল দুই বোন। হঠাৎ আগুনে আবারও বিধ্বস্ত হলো এ পরিবারটি। বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে আগুনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনও বলেছিলেন, ‘আমাদের একজন সহকর্মীর মেয়ে মারা গেছেন।’ পরে জানা যায়, সেই মেয়েটিই নিহত লামিশা ইসলাম।

আরও পড়ুন: বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলেকে খুঁজছেন বাবা

লামিশাকে হারিয়ে বাবা পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত ডিআইজি (রিক্রুটমেন্ট অ্যান্ড ক্যারিয়ার প্ল্যানিং-১) নাসিরুল ইসলাম হয়ে পড়েছেন বাকরুদ্ধ। তার সহকর্মীরাও শোকে স্তব্ধ হয়ে গেছেন।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটে রাজধানীর বেইলি রোডের একটি ভবনে কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টে আগুন লাগার সংবাদ আসে ফায়ার সার্ভিসের কাছে। এরপর ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিটের চেষ্টায় রাত ১১টা ৫০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

এ ঘটনায় অন্তত ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এছাড়া, গুরুতর আহত হয়েছেন অন্তত ২২ জন। আহত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শেখ হাসিনা বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট এবং রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। নিহতদের মধ্যে ৩৫ জনের মরদেহ পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দিয়েছে প্রশাসন।

পরিস্থিতিকে ভয়াবহ উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যারা এখন পর্যন্ত বেঁচে আছেন, তাদের বেশিরভাগের শ্বাসনালি পুড়ে গেছে। আহতরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বার্ন ইউনিটে ভর্তি আছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সবাইকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

ভয়াবহ এই আগুনের ঘটনার নেপথ্যের কারণ, ভবনের অগ্নি নিরাপত্তা ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণসহ হতাহত বেশি হওয়ার কারণ অনুসন্ধানে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর।


সর্বশেষ সংবাদ