বশেমুরবিপ্রবির ২৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা

পাখির চোখে বশেমুরবিপ্রবি
পাখির চোখে বশেমুরবিপ্রবি  © ফাইল ছবি

আজ ৮ জুলাই। ২২ পেরিয়ে ২৩ বছরে পদার্পণ করলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি)। বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া ১৯৯৯ সালে শুরু হলেও ২০০১ সালের ৮ জুলাই জাতীয় সংসদে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’ আইন পাসের মাধ্যমে জাতির পিতার জন্মভূমি গোপালগঞ্জে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে বশেমুরবিপ্রবি। নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে এগিয়ে চলছে প্রতিষ্ঠানটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা তুলে ধরেছেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি খাদিজা জাহান তান্নি-

বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে উচ্চশিক্ষার বিশ্বজনীন প্রাঙ্গন, যা একজন শিক্ষার্থীর সেকেন্ড হোম হিসেবে বিবেচ্য। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যায়তনিক পড়াশোনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতার বিকাশ সাধনে গবেষণামূলক কর্মকাণ্ডেও জোর দেওয়া দরকার। এছাড়াও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পারস্পরিক সহাবস্থানের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করে তুলা আবশ্যক। সনদসর্বস্ব শিক্ষাব্যবস্থার বাহিরে গিয়ে উদ্ভাবনী শক্তির উন্নয়ন, প্রযুক্তিগত সমৃদ্ধি, দক্ষতা অর্জনে সহায়ক ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন। সময়ের পরিক্রমায় সাফল্যের প্রতিটি শাখায় অবাধ বিচরণ হোক আমাদের সবার প্রিয় শিক্ষাঙ্গনের।
[রেহেনুমা কবির সোবনা, শিক্ষার্থী, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ]

নিজেকে নতুন করে খুঁজে পাওয়ার কেন্দ্র হলো বিশ্ববিদ্যালয়। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে অনেক চাহিদা থাকলেও স্মৃতি কি ভূলা যাবে এই ৫৫ একরের! নিজেকে হারিয়ে ফিরে ক্লান্তি আর হতাশা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই ছোড়েন আক্রোশের বুলি, আলোচনা থেকে সমালোচনা, আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জনে সেই তারাই গর্ব করে বলেন, 'আমার বিশ্ববিদ্যালয়'। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে একটাই প্রত্যাশা  বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ছড়িয়ে পড়ুক দেশ থেকে বিদেশ, কাটিয়ে উঠুক সকল সীমাবদ্ধতা।
[মো. মুমিনুর রহমান, শিক্ষার্থী, ফিসারিজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসাইন্স বিভাগ]

বঙ্গবন্ধুর নামে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে আগামীতে বাংলাদেশের এক নম্বর বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে দেখতে চাই। বিশ্ববিদ্যালয়কে ঐ পর্যায়ে নিয়ে যেতে আমাদের ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী সবারই প্রচেষ্টা লাগবে। সেই অনুযায়ী আমরা কাজ করছি। বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে প্রত্যাশা হলো আমরা আমাদের যত প্রতিকূলতা, বাধা- বিপত্তি আছে সবকিছু পার করে জাতির জনকের নামের এই বিশ্ববিদ্যালয়ের, নামের মর্যাদা বৃদ্ধি করতে পারি ইনশাআল্লাহ।
[ড. মো: কামরুজ্জামান, প্রক্টর]

শৈশব  কৈশোর পেরিয়ে যৌবনে পদার্পণ করা দক্ষিণ বাংলার আলোর বাতিঘর প্রিয় বশেমুরবিপ্রবি। কৈশোর বা ছেলেবেলায় একটু-আধটু হোচট খাওয়া বা ভুল করা অস্বাভাবিক নয়। আমি আশা করি এবং স্বপ্ন দেখি কৈশোরের এই হোচট/ভুল করাকে পেছনে ফেলে সত্যিকারের আলোর বাতিঘর হিসেবে সমগ্র জাতি তথা দেশের কল্যাণে সামনে থেকে রাষ্ট্রকে নেতৃত্ব দেবে এই বিশ্ববিদ্যালয়।আমি বিশ্বাস করি শিক্ষা-গবেষণা ও মেধা বিকাশে এক সময় এই বিশ্ববিদ্যালয়ই দেশসেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাতারে উঠে আসবে দক্ষিন বাংলার সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় যদি সাইকেল হয়, তাহলে শিক্ষক হচ্ছে তার চালক, শিক্ষার্থী হচ্ছে প্যাডেল আর গবেষণা হচ্ছে তার ব্রেক। একজন শিক্ষক যখন নিজের জ্ঞানের সংকীর্ণতা থেকে বের হতে পারবে বিশ্ব ও দেশ সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞান রাখবে তখন তার শিক্ষার্থীরা হবে উন্নত জ্ঞানের অধিকারী এবং তারা জায়গা করে নিতে পারবে বিশ্বের দরবারে। তখনি বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে যাবে। শিক্ষকদের অভিজ্ঞতা, পাঠদানে নতুনত্ব এবং গবেষণা বান্ধব পরিবেশই পারে উন্নত এবং তথ্যজ্ঞানে সমৃদ্ধ শিক্ষার্থী তৈরি করতে যারা পরবর্তীতে দেশ ও বিশ্বের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করবে।
[ফায়েকুজ্জামান মিয়া টিটু, সহ-সভাপতি, শিক্ষক সমিতি]

প্রত্যাশাতো অনেক আছে কিন্তু সেই তুলনায় প্রাপ্তি কম। আমি নিজেই সন্তুষ্ট না। আগে আমি এর চেয়ে বেশি গতিতে কাজ শেষ করেছি। তারপরও এখানে  ৫-৭ বছরে যে সংস্কৃতি তৈরি হয়েছিল সেটা কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রচেষ্টায়ই এই পরিবর্তন হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি। কিন্তু আমাদের লোকবল নেই, কর্মকর্তা নেই, শিক্ষক নেই।

অবকাঠামোর ক্ষেত্রেও এখানে সুনির্দিষ্ট প্লান নেই। যে মেইন গেট ছয়মাসে হওয়ার কথা সেটি শেষ হতে এখন আরও ছয়মাস লাগবে, ম্যুরালের কাজ শুরুই হয়েছে কিছুদিন আগে। লাইব্রেরি আটভাগের একভাগ নির্মাণ হয়েছে অথচ প্রথম ফেজেই এটা পুরোপুরি শেষ হওয়া উচিত ছিল। এখন আমি চেষ্টা করব তৃতীয় ফেসে এটি শেষ করার।

ক্যাফেটেরিয়া  চালু করেছি তবে খাবারে আরও বৈচিত্র্য আনতে হবে। ল্যাবসহ অন্যান্য অবকাঠামোর জন্য নতুন জায়গা অধিগ্রহণেরও কাজ চলছে। এছাড়া আমি চেষ্টা করবো আগামী এক বছর বা আমার মেয়াদের মধ্যেই সমাবর্তন আয়োজন করার। এর জন্য অনেক কাজ করতে হবে। আগামী দুই মাসের মধ্যেই এ উপলক্ষে একটা কমিটি গঠন করে কার্যক্রম শুরুর চিন্তাভাবনা করছি।
[অধ্যাপক ড. একিউএম মাহবুব, উপচার্য]


সর্বশেষ সংবাদ