বুয়েট তার নিজস্ব স্ট্যান্ডার্ড ধরে রেখেছে: সালমান এফ রহমান

বুয়েটে গবেষণা অনুদান প্রদান অনুষ্ঠান
বুয়েটে গবেষণা অনুদান প্রদান অনুষ্ঠান  © টিডিসি ফটো

বাংলাদেশে সেই পাকিস্তান আমল থেকে এখন পর্যন্ত একটি প্রতিষ্ঠান বুয়েট যেটা তার নিজস্ব স্ট্যান্ডার্ড ধরে রেখেছে। বুয়েট গ্র্যাজুয়েট বললেই সব জায়গায় আলাদা মূল্যায়িত হওয়া যায় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা জনাব সালমান এফ. রহমান। মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বুয়েটের রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (রাইজ)-এর উদ্যোগে গবেষণা অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেছেন। 

বুয়েটের বর্তমান প্রশাসনের প্রশংসা করে সালমান এফ. রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে গবেষণার বিকল্প নেই। বুয়েট রাইজ সেন্টারের মাধ্যমে যে উদ্যোগ নিয়েছে তা আমাদের লক্ষ্য অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আমার পক্ষ থেকে এবং আমার অধীনে যে সেক্টরটি রয়েছে তার পক্ষে থেকে বুয়েটকে সব ধরণের সহযোগিতা করা হবে। 

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-এর আন্ডারগ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের ৭২টি গবেষণা প্রস্তাবনার বিপরীতে ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। ১৫৫টি গবেষণা প্রস্তাবনা জমা পড়লে সেখান থেকে বাঁছাই করে সময়উপযোগী ও চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবিলায় সহায়ক এই ৭২টি প্রস্তাবনায় অর্থায়ন করা হয়। এসব গবেষণা কার্যক্রমে বুয়েটের প্রায় ১৩০ জন শিক্ষার্থী সংযুক্ত থাকবে।

গবেষণা কার্যক্রমে অর্থায়নের প্রক্রিয়া সম্পর্কে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-এর উপাচার্য অধ্যাপক ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেন, একটা সময় শুধু পোস্ট গ্র্যাজুয়েটদের রিসার্চ গ্রান্ট প্রদান করা হতো। তবে আমি দেখেছি আমাদের অনেক আন্ডারগ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীর বিদেশের বিভিন্ন ভাল কনফারেন্স ও সেমিনারে রিসার্চ প্রোপোজাল অ্যাক্সেপ্ট হয়। তবে ফান্ডের অভাবে তারা সেটি উপস্থাপন করতে যেতে পারে না। এ কারণে আমি ডিএসডব্লিউ (পরিচালক, ছাত্রকল্যাণ) হওয়ার পর অ্যালামনাইয়ের মাধ্যমে কিছু ফান্ডের ব্যবস্থা করি। পরবর্তীতে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব নেয়ার পর এই বিষয়টিতে আরও গুরুত্ব দেই। 

রাইজ (রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং) গঠনের মাধ্যমে ফান্ড তৈরি করার উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন ইন্ড্রাস্ট্রির সঙ্গে সমঝোতা করার মাধ্যমে তাদের আরএনডি ফান্ড (রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) থেকে অর্থ সংগ্রহ করি। বিনিময়ে তারাও আমাদের গবেষণার আউটকাম থেকে নিজেদের প্রতিষ্ঠানকে আরো সমৃদ্ধ করে। আমরা এখন পর্যন্ত রাইজের মাধ্যমে ৮.৩৬ কোটি টাকার ফান্ড সংগ্রহ করেছি যার মধ্যে রয়েছে দেশীয় প্রতিষ্ঠান থেকে ৪২% এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ৫৮%।

আরও পড়ুন: শিক্ষার্থী নির্যাতনে বেপরোয়া রাবি ছাত্রলীগ, রক্ষা পাচ্ছেন না শিক্ষকরাও

অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনারের বক্তব্যে বুয়েটের মাননীয় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল জব্বার খাঁন বলেন, আমরা বুয়েট থেকে আপনাদেরকে যে গ্র্যাজুয়েট দেব তারা হলো ট্রাইঅ্যাঙ্গেল এক্সপেরিয়ান্স। যাদের এক কর্ণারে থাকছে নলেজ, অন্য কর্ণারে পাওয়ার স্কিল এবং তার চূড়ায় থাকবে অ্যাটিটিউড। সুতরাং আত্মবিশ্বাস কিংবা দক্ষতায় কোনো ঘাটতি থাকবে না আমাদের গ্র্যাজুয়েটদের। 

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-এর মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা জনাব সালমান এফ. রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জনাব জিয়াউল হাসান এনডিসি বিশেষ অতিথি ও বুয়েটের মাননীয় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল জব্বার খাঁন গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। উক্ত অনুষ্ঠানে রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (রাইজ)-এর পরিচালক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ আনিসুজ্জামান তালুকদার স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন।

এছাড়াও অনুষ্ঠানে বুয়েটের ডিনবৃন্দ, বিভাগীয় প্রধানগণ, বিভিন্ন দপ্তরের পরিচালকবৃন্দ, বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, ছাত্র-ছাত্রীসহ ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার প্রতিনিধিগণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।


সর্বশেষ সংবাদ