শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মুসলিম শিক্ষার্থীদের জন্য নামাজ বাধ্যতামূলক করার তথ্যটি ভুয়া

ভুয়া ও ভিত্তিহীন পোস্ট
ভুয়া ও ভিত্তিহীন পোস্ট  © টিডিসি ফটো

“আগামী মাস থেকে দেশের প্রত্যেকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মুসলিম শিক্ষার্থীদের জন্য নামাজ বাধ্যতামূলক করা হবে– শিক্ষামন্ত্রী” শীর্ষক শিরোনামে সম্প্রতি একটি তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমার স্ক্যানার বাংলাদেশ  এক প্রতিবেদনে বলছে, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির বক্তব্য দাবি করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মুসলিম শিক্ষার্থীদের জন্য নামাজ বাধ্যতামূলক করা হবে দাবিতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া তথ্যটি সত্য নয় বরং এই ধরণের কোনো বিষয় নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কিংবা শিক্ষা মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তি কোনো বক্তব্য প্রদান করেননি।

ভুয়া ও ভিত্তিহীন পোস্ট

ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপ, পেজ ও আইডিতে প্রচারিত এমন কিছু ভুয়া ও ভিত্তিহীন আরও কিছু পোস্ট দেখুন এখানেএখানে এবং এখানে

আরও পড়ুন: ধর্মীয় বাধ্যবাধকতা নিয়ে কোনো আদেশ জারি হয়নি: শিক্ষা উপমন্ত্রী 

কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এর ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ২০১৯ সালের ৫ ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। যেখানে তিনি বিষয়টিকে গুজব বলে নিশ্চিত করেছেন। পরের দিন ৬ ফেব্রুয়ারি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসেও ‘ধর্মীয় বাধ্যবাধকতা নিয়ে কোনো আদেশ জারি হয়নি: শিক্ষা উপমন্ত্রী’ শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

মূলত, ২০১৯ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে “শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মুসলিম শিক্ষার্থীদের জন্য নামাজ বাধ্যতামূলক করা হবে” দাবি করে কোনোরূপ তথ্য সূত্র ছাড়াই তথ্যটি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার হয়ে আসছে। সাম্প্রতিক সময়ে একই তথ্যটি বিভিন্ন ফেসবুক পেজ ও গ্রুপের মাধ্যমে নতুন করে প্রচার করা হচ্ছে।

২০১৯ সালে ছড়িয়ে পড়া তথ্যটির প্রেক্ষিতে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর ফেসবুক আইডি হতে প্রকাশিত এক পোস্টের মাধ্যমে জানানো হয়, “মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি বা আমি ধর্মীয় কোনো বাধ্যবাধকতা বা ধুমপান এই সমস্ত বিষয় নিয়ে কোনো আদেশ জারি করি নাই। প্রয়োজনবোধে আমরা এখতিয়ারাধীন যেকোনো বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রনালয় দ্বারা লিখিত আদেশ জারী করবো। উড়ো খবর দিয়ে ফেইক আইডি থেকে ছড়ানো তথ্য, ভালো হোক বা মন্দ হোক, সবসময়ই গুজব। গুজব থেকে সাবধান থাকুন”।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের ২১ তারিখ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার পর ফেব্রুয়ারির ২২ তারিখ পর্যন্ত দুই দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়িয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এই সময়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট অনেক বিষয়ে মন্তব্য গণমাধ্যমে খুঁজে পাওয়া গেলেও ধর্মীয় বিধিবিধান পালন সংক্রান্ত কোনো মন্তব্য খুঁজে পাওয়া নি।

সুতরাং, কোনো প্রকার দায়িত্বশীল সূত্র ব্যতীত, শিক্ষামন্ত্রীর মন্তব্য দাবি করে ‘আগামী মাস থেকে দেশের প্রত্যেকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মুসলিম শিক্ষার্থীদের জন্য নামাজ বাধ্যতামূলক করা হবে’ শীর্ষক শিরোনামে একটি তথ্য সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে; যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং মিথ্যা।

সূত্র: রিউমার স্ক্যানার বাংলাদেশ


সর্বশেষ সংবাদ