বাকী টাকা চাওয়ায় ঢাবির ক্যান্টিন মালিককে পেটালেন ছাত্রলীগ নেতা

  © টিডিসি ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ভর্তি জালিয়াতিতে অভিযুক্ত ইশতিয়াক আহমেদ ইমনের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের ক্যান্টিন পরিচালক মো. শাহাবুদ্দিনকে রুমে ডেকে মারধর ও ছাত্রদের ভেতরে রেখে ক্যান্টিনে তালা লাগিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার সকালে ওই হলের ৩২২নম্বর রুমে ডেকে ক্রিকেট স্ট্যাম্প দিয়ে পিটিয়ে শাহাবুদ্দিনকে আহত করে ইমন। পরে আবার ক্যান্টিনে গিয়ে শাহাবুদ্দিনকে না পেয়ে ক্যান্টিনের ফ্যান ভাংচুর করেন ও নাস্তা করা অবস্থায় শিক্ষার্থীদের ভেতরে রেখে ক্যান্টিনে তালা লাগিয়ে দেন।

ইমনের বিরুদ্ধে এর আগে ভর্তি জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়েও অভিযোগ রয়েছে। ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষে ম্যানেজমেন্ট বিভাগে ভর্তি হলে নির্ধারিত সময়ে ক্লাস-পরীক্ষা না দেয়ায় বর্তমানে অছাত্র হিসেবে হলে থাকারও অভিযোগ রয়েছে এ ছাত্রের বিরুদ্ধে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র খালিদ হাসান রবিন ক্যান্টিন থেকে ৩,৪২০ টাকা বাকি খেয়েছেন। এই টাকা চাইলে রবিন শাহাবুদ্দিনকে ‘ইমন ভাইয়ের’ সাথে দেখা করতে বলেন। সেই দেখা করতে ৩২২ নম্বর রুমে এসে ইমনের স্ট্যাম্পের আঘাতের শিকার হন শাহাবুদ্দিন। এ সময় ইমন অশ্লীল ও অশ্রাব্য গালমন্দ করেন। মারধরের স্বীকার হয়ে শাহাবুদ্দিন কোন কিছু না বলে হলের বাইরে চলে যান।

পরে ২য় দফা মারার জন্য ক্যান্টিনে যান ইমন। শাবুদ্দিনকে না পেয়ে লাথি দিয়ে একটি ফ্যান ভেঙে ৩ টুকরা করে ফেলেন তিনি। গালিমন্দের পর ক্যান্টিন থেকে তালা নিয়ে দরজায় তালা লাগিয়ে দেন। এ সময় সকালের নাস্তা করা অবস্থায় শিক্ষার্থীরা ক্যান্টিনের ভেতরে আটকা পরে যান।

‍মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহাবুদ্দিন তাঁর ফুলে যাওয়া হাত দেখিয়ে বলেন, আমি কিছুই বলিনি। মার খেয়ে চলে আসছি।

এর আগে চ্যানেল ২৪ এর ‘সার্চ লাইট’ প্রতিবেদনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা ও বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় ইমনের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণের সংবাদ প্রচারিত হয়েছে। ভর্তি পরীক্ষায় জড়িত থাকার অভিযোগ থাকায় তখন হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ লিমন সকাল হওয়ার আগে ইমনকে হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেবার হল ছাড়লেও রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ছাত্রলীগের সভাপতি হওয়ার পর থেকে আবার বহাল তবিয়তে হলে থাকছেন তিনি। শোভন সভাপতি থেকে পদত্যাগ করলেও শোভনের কয়েকজন অনুসারীর ছত্রছায়ায় থাকায় হল প্রশাসনও তাঁর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয় হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ লিমন বলেন, ‘আমি বিষয়টি জেনেছি। শাহাবুদ্দিন ভাইয়ের গায়ে হাত তোলার মতো বিষয়টি একদমই কাম্য নয়। ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে কারো এমন কার্যক্রম মেনে নেয়া হবে না। আজকে রাতের মধ্যেই এর উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

ভর্তি জালিয়াতির ঘটনা প্রকাশের পর থেকে তার ব্যবহার করা আগের ফোন নম্বর বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি। নতুন নম্বরও গোপন রাখেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান বলেন, ‘আমি খবর শুনে আবাসিক শিক্ষকদের নিয়ে ক্যান্টিন পরিদর্শন করেছি। ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। আবাসিক শিক্ষক, হল সংসদ, ও ঘটনায় জড়িতদের নিয়ে মিটিং করেছি। পরে অধ্যাপক ড. আফজালের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। আগামী ৩ দিনের মধ্যে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ এছাড়া বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর গোলাম রব্বানীকেও ঘটনা অবহিত করেছেন বলে জানান তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence