জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলের ছাদে ঘুমাচ্ছে ঢাবি শিক্ষার্থীরা

শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে ছাদে ঘুমাচ্ছে
শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে ছাদে ঘুমাচ্ছে  © আব্দুল্লাহ হিল বাকী

মাঝরাতে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় গরম সহ্য করতে না পেরে ছাদে গিয়ে ঘুমাচ্ছে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মুহসীন হলের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) শিক্ষার্থীদের ছাদে ঘুমানোর একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়।

জানা গেছে বুধবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে মুহসীন হলে কারেন্ট চলে যায়। এতে শিক্ষার্থীরা গরম সহ্য করতে না পেরে হলের ছাদে কাথা, বাঁলিশ নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। এসময় শিক্ষার্থীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই ছাদে ঘুমিয়ে পড়েন।

শিক্ষার্থীদের ছাদে ঘুমানোর বিষয়ে জানতে চাইলে মুহসীন হলের আবাসিক শিক্ষক একেএম ইফতেখারুল ইসলাম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের ছাদে ঘুমাতে নিষেধ করেছি। কিন্তু শিক্ষার্থীরা আমাদের কথা না শুনে গরমের কারণে ছাদে গিয়ে ঘুমায়। বিষয়টি প্রতিদিনের ঘটনা না। তবে যেহেতু বিষয়টি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাহীনতার তাই এর পরে যেন এমন ঘটনা না ঘটে আমরা সেদিকে খেয়াল রাখবো।

এবিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুর দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, শিক্ষার্থীদের ছাদে ঘুমানোর বিষয়টি অমানবিক। এ বিষয়ে হল কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি অভিযোগ করে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা উপাচার্য স্যারের সাথে কথা বলবো।

এদিকে শিক্ষার্থীদের ছাদে ঘুমানোর ছবিটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

সালমান হুদা নামে একজন ছবিতে কমেন্ট করে লিখেছেন, মানুষজনের কথা শুনলে মনে হয় ,সবার বাসায় এসি আর জেনারেটর আছে। জিবনে একটুও গরম দেখে নাই। ৪ বছরে মাত্র এক দুবার কারেন্ট যায় তাও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে তাও মেনে নিতে পারে না। মাত্র ৪ ঘণ্টার মধ্যে ঠিক করে দিছে তাও খুশি না। ইস্যু দরকার একটা।

এন মুহিত লিখেছেন, দেশের রাজধানীতে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর মত জায়গায় বিদ্যুৎ এর একটা সমস্যা নিরসন করতে ৩-৫ ঘন্টা লেগে যাওয়ায় বুঝা যায় আমাদের ব্যবস্থাপনা এখনো কত বাজে...। কোথাও যেকোনো সমস্যা হতেই পারে কিন্তু তা সমাধানের ব্যবস্থা ভাল থাকবে এটাই সাভাবিক প্রত্যাশা। আর এখানে ট্রান্সমিটার নষ্ট হওয়ার ৩০-৫০ মিনিট পর আসে, বলে এটা নাই সেটা নাই,আবার চলে যায়, ২ ঘন্টা পরে আসে, ডিমে তালে চলে আরকি, দেশের প্রাণ কেন্দ্রে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় এ অবস্থা, অন্য স্থানে হলেতো আগামী দুদিনেও ঠিক হতনা হয়তো

মাহিন আন নুর রিখেছেন, ভাই অনিয়মের বিরুদ্ধে আওয়াজ অবশ্যই তুলতে হবে কিন্তু এটা রেয়ার কেস! ট্রান্সমিটার বার্স্ট হলে এখানে আপনি প্রশাসনকে কিভাবে কি দোষ দিবেন! আর এইটাও যদি অনিয়ম হয় তাইলে আরো ঢের বড় বড় অনিয়ম চোখের সামনেই হয় সেগুলো নিয়েও কথা বইলেন। আমি এই ঘটনার পক্ষে বলছি না কিন্তু এইটা নিয়েও যদি এভাবে আওয়াজ তোলার কথা বলেন তাইলে আসলে যখন আওয়াজ দরকার হবে তখন মানুষের কাছে গুরুত্ব হারাবেন। এটাকে স্রেফ একটা যান্ত্রিক গোলযোগ হিসেবেই নিলে ভালো হতো। হলে ছাদে ঘুমানো হলের ছাত্রদের কাছে আহামরি কঠিন কিছু না। সবাই এটা ভালোভাবেই বুঝি।

মিজানুর রহমান রনি লিখেছেন, বাংলাদেশের কোথাও যেহেতু বিদ্যুৎ যায় না , এই পর্যন্ত দেশের কোন মানুষ যেহেতু রাতে কোনদিন এরকম সাফার করে নাই, পৃথিবীর কোথাও যেহেতু ট্রান্সফরমার নষ্ট হওয়ার ইতিহাস নাই সেহেতু আপনাদের উচিত ছিল রাতেই ভিসির বাড়ির সামনে অবস্থান নেয়া।

নার্গিস আখতার নামে একজন লিখেছেন, এসব ব্যাপার গুলো আমার কাছে সংসার জীবনের গল্পের মতো মনে হয়। সংসারের কত অভাব অনটনের কথা যেমন ঘরের মাঝেই লুকিয়ে রাখে ঢাবিয়ানরাও তেমনি তাদের এমন দূর্ভোগের কথা শুধু নিজেদের গ্রুপেরই রাখে। থাকা, খাওয়া, টাকা পয়সা কতজনের কতো কষ্ট! বাইরের সবাই ভাবে ঢাকা ভার্সিটির ছাত্র মানেই তাদের জীবনের সব ব্যাপার গুলোও হয়ত ভার্সিটির নামের মতোই টপ ক্লাসের।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence