প্রশাসনের সিলগালা হাসপাতালে অপারেশন, শিক্ষার্থীর মৃত্যু

শালিখায় সিলগালা করা আল হেরা হাসপাতালে অপারেশনের সময় এক মাদ্রাসা ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে
শালিখায় সিলগালা করা আল হেরা হাসপাতালে অপারেশনের সময় এক মাদ্রাসা ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে  © ইন্টারনেট

মাগুরার শালিখায় প্রশাসনের সিলগালা করা আল হেরা হাসপাতালে অপারেশনের সময় নির্জালা খাতুন নামে এক মাদ্রাসাছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে মাগুরা সরকারি সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স কারিমুন্নেসাকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার আড়পাড়া বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

সরকারি নিবন্ধন না থাকায় ২৯ মে হাসপাতালটির কার্যক্রম বন্ধ করে সিলগালা করেছিল স্বাস্থ্য বিভাগ। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন মাগুরার সিভিল সার্জন শহিদুল্লাহ দেওয়ান।

অ্যাপেনডিসাইটিস অপারেশনে মারা যাওয়া ১৪ বছর বয়সী নির্জালা খাতুন আড়পাড়া বাজার এলাকার নাজমুল হোসেনের মেয়ে। সে স্থানীয় কুমারকৃঠা দাখিল মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

নির্জালার চাচাতো ভাই মিরাজ মোল্লা বলেন, ‘শুক্রবার বিকেলে আল হেরা হাসপাতালে নির্জালাকে ভর্তি করা হয়। আজ সকাল ১০টায় অপারেশন শুরু হয়। সেখানে এক মহিলা ডাক্তার ছিলেন বলে জানি। আমার চাচার সঙ্গে পাঁচ হাজার টাকায় অপারেশনের কথা হয় হাসপাতালটির মালিক বাচ্চুর। সকালে অপারেশনের সময় আমরা বাচ্চুর স্ত্রী সিনিয়র নার্স কারিমুন্নেসাকে দেখতে পাই।

‘বেলা ১১টার দিকে আমার বোনের শরীর ঠান্ডা হতে থাকলে আমরা ওকে মাগুরা সদর হাসপাতালে নিতে চাই। ক্লিনিক মালিক বাচ্চু ও তার স্ত্রী বাধা দেন। একপর্যায়ে তারা ৪০ কিলোমিটার দূরে যশোরে নিতে বলেন। অথচ মাগুরার দুরত্ব ১৪ কিলোমিটার। যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক জানান, নির্জালা মারা গেছে আগেই।’

মাগুরার সিভিল সার্জন বলেন, ‘ওই হাসপাতালের কোনো কাগজপত্র নেই। ২৯ মে অভিযান চালিয়ে তাদের সব কার্যক্রম বন্ধ করে দিই। সিলগালা করার পরও তারা কার্যক্রম চালাচ্ছিল, তার প্রমাণ এই অপারেশন। বন্ধ ক্লিনিকে কোনোভাবেই চিকিৎসা দেয়া যাবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আল হেরা হাসপাতালে অজ্ঞান করার ডাক্তার নাই, অপারেশন থিয়েটার কার্যকর নয়। এরপরও এক চিকিৎসক যশোর থেকে এসে অপারেশন করেছেন। তাকে এখনও বের করা সম্ভব হয়নি। কাজ চলছে।

‘ভুল অপারেশন নাকি অন্য কিছু তা বিষয় নয়। অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিকে কোনো রেজিস্টার্ড চিকিৎসক সেবা দিতে পারেন না। আমার হাসপাতালের এক নার্স এর সঙ্গে জড়িত কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

শালিখা থানার ওসি বিশারুল ইসলাম বলেন, ‘ওই হাসপাতালে আমরা সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে গিয়েছিলাম। এক নার্সকে আটক করা হয়েছে।’


সর্বশেষ সংবাদ