হাবিপ্রবি ছাত্রের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, পরিবারের অভিযোগ—হত্যা

শুক্রবার ডিআইরইউতে হাবিপ্রবি ছাত্র মিজানুর রহমানের পরিবারের সংবাদ সম্মেলন
শুক্রবার ডিআইরইউতে হাবিপ্রবি ছাত্র মিজানুর রহমানের পরিবারের সংবাদ সম্মেলন  © সংগৃহীত

দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) ছাত্র মিজানুর রহমানের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে পরিবার। শুক্রবার (৮ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করা হয়।

তবে পুলিশ বলছে, বান্ধবীর সঙ্গে মনোমালিন্যের হওয়ায় মিজানুর আত্মহত্যা করেছেন। প্রাথমিক তদন্ত ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে এ কথা বলছে পুলিশ। মিজানুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশেই বাঁশেরহাট এলাকায় ছাত্রাবাসে থেকে লেখাপড়া করতেন। সেখান থেকে গত ১৮ মার্চ তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে মিজানুরের বাবা আবদুস সাত্তার বলেন, গত ১৮ মার্চ রাতে পুলিশ ফোন করে জানায়, মিজানুরের অবস্থা ভালো না। সে সময় দ্রুত দিনাজপুর হাসপাতালে যেতে বলা হয়। হাসপাতালের মর্গে মিজানুরের লাশ পাওয়া যায়।

হাবিপ্রবির প্রক্টর মামুনুর রশিদ ও ছাত্রাবাসের মালিক রেজাউল ইসলাম জানান, ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন মিজানুর। বিভিন্ন সূত্রে ছবি সংগ্রহ করে দেখা যায়, তার এক হাত বাঁধা ছিল, পা মেঝের সঙ্গে বাঁকানো ছিল। আত্মহত্যা করলে গলায় যে দাগ থাকার কথা, তাও ছিল না। এ জন্য আদালতে হত্যা মামলা করা হয়েছে বলে জানান আবদুস সাত্তার।

আরো পড়ুন: র্থ সাউথ শিক্ষার্থীর মৃত্যু- চালক-সহকারীর দায় স্বীকার

মিজানুরের পরিবারের দাবি, তাকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু পুলিশ কোনো ধরনের সহযোগিতা করছে না। ছাত্রাবাসের মালিক রেজাউল ইসলাম ও তার আট সহপাঠীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে পরিবারের পক্ষ থেকে। অভিযোগে মিজানুরের সঙ্গে  ওই ছাত্রাবাসের দুই শিক্ষার্থীর বিরোধের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

দিনাজপুরের কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আসাদুজ্জামান এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘দরজা ভেঙে মিজানুরের লাশ উদ্ধার করা হয়। তখন ঝুলন্ত অবস্থায় ছিলেন তিন। এ ঘটনায় প্রথমে অপমৃত্যু মামলা করে পরিবার।’

ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে এসেছে, আত্মহত্যা করেছেন মিজানুর। তার বান্ধবীর সঙ্গে মনোমালিন্য হওয়ায় আত্মহত্যা করেছেন বলেই মনে হয়েছে। তাঁর পরিবার আদালতে পিটিশন মামলা করেছে। ওই মামলার তদন্ত চলছে বলেও জানান আসাদুজ্জামান।

ছাত্রাবাসের মালিক রেজাউল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, তিনি ছাত্রাবাসে থাকেন না। মিজানুরের বান্ধবী রাতে তাকে ফোন করে জানান, তাকে মোবাইল ফোনে পাচ্ছেন না। পরে ছাত্রাবাসে এক ছাত্রকে কল করে জানান বিষয়টি। তবে ওই ছাত্র ছাত্রাবাসে উপস্থিত না থাকায় আরেকজনকে দেখতে বলেন। তিনি গিয়ে মিজানুরের কক্ষের দরজা বন্ধ পান, ভেতরে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলতে দেখেন। পরে পুলিশ ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মামুনুর রশিদ বলেন, ‘ছাত্রাবাসের মালিক ও কয়েকজন ছাত্রের বিরুদ্ধে মিজানুরের পরিবার মামলা করেছে বলে শুনেছি। যাঁরা তার মৃত্যুর খবর শুনে গিয়েছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে। তদন্তে যেন সত্যটি বেরিয়ে আসে। কেউ যেন হয়রানির শিকার না হন।’


সর্বশেষ সংবাদ