জব্দকৃত মাদক বিক্রির অভিযোগে দুই ওসি বদলি

ওসি মো. কামরুজ্জামান ও খন্দকার জাকির হোসেন।
ওসি মো. কামরুজ্জামান ও খন্দকার জাকির হোসেন।   © সংগৃহীত

নরসিংদীতে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ওসি মো. কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে উদ্ধার হওয়া ৯৬ কেজি মাদক প্রায় ১৫ লাখ টাকায় বিক্রি করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি জানাজানির পর প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে মো. কামরুজ্জামান ও কোর্ট পুলিশের ওসি খন্দকার জাকির হোসেনকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে ঢাকার রেঞ্জ অফিসে সংযুক্ত করা হয়েছে।

শনিবার (১৫ মার্চ) পুলিশের ঢাকা রেঞ্জর ডিআইজি এ কে এম আওলাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ আদেশ দেওয়া হয়।

জানা গেছে, চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি শিবপুর উপজেলার সৃষ্টিঘর আটাশিয়া এলাকায় মনির হোসেনের লটকন বাগান থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ৯৬ কেজি গাজা উদ্ধার করেন তৎকালীন ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক আব্দুল গাফফার। জব্দ তালিকায় ৯৬ কেজি গাঁজার বাজার মূল্য দেখিয়েছেন ১৯ লাখ ২০ হাজার টাকা দেখিয়ে আদালতে উপস্থাপন করা হয়।

আদালতের জব্দকৃত ৯৬ কেজি গাঁজা (মাদক) ধ্বংস করে বা পুড়িয়ে ফেলার নির্দেশ প্রদান করেন। কিন্তু নরসিংদী ডিবি পুলিশের ওসি মো. কামরুজ্জামান নরসিংদী কোর্ট পুলিশের ওসি খন্দকার জাকির হোসেনকে ম্যানেজ করে এই ৯৬ কেজি গাঁজা মাধবদী আলগী এলাকার মাদক কারবারি মায়া প্রধানের কাছে বিক্রি করে দেয়।

প্রতিকেজি গাঁজার বাজার মূল্য ২৫ হাজার টাকা হলেও চিহ্নিত ১৫ হাজার টাকা কেজি ধরে ১৪ লাখ ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করে বলে অভিযোগ উঠে। পরে সেই টাকা ডিবির ওসি ও কোর্টের ওসি ভাগ বাটোয়ারা করে নেয়। বিষয়টি জানাজানি হলে নরসিংদী পুলিশ সুপারের নিকট মৌখিক অভিযোগ করেন দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য।  তবে আদালতের নথিতে দেখা যায় জব্দকৃত ৯৬ কেজি মাদক ধ্বংস করা হয়েছে।

অভিযোগ অস্বীকার করে নরসিংদী গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ওসি মো. কামরুজ্জামান বলেন, আমাদের অফিসার আলামত জব্দ করেছে এবং তা তালিকা করে কোর্টে পাঠিয়েছে। কোর্ট রিসিভ করে তা ধ্বংস করেছে। এই অর্ডারও আমার অফিসে আছে। এখন কোর্ট ধ্বংস করেছে না করে নাই, সেটা তো কোর্টের ব্যাপার। এখানে আমার কি লাইঅ্যাবিলিটি আছে? এখানে আমার তো কোনো জবাব নেই। তাছাড়া এই আলামত ধ্বংস করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটের।

৯৬ কেজি গাঁজা বিক্রির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটা ভিত্তিহীন একটি অভিযোগ। এখানে আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। আমি বিক্রি করলে কোর্ট কি ধ্বংস করলো?’

নরসিংদী কোর্ট পুলিশের ওসি খন্দকার জাকির হোসেন বলেন, ‘ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মালামাল ধ্বংস করা হয়েছে। মালামাল আমার হাতে আসেনি, আমার মাধ্যমে যাইওনি। শুধু দায়িত্বে ছিলাম বলে বলির পাঠা হলাম। আমি কোনো অপরাধ করিনি।’

নরসিংদী পুলিশ সুপার মো. আব্দুল হান্নান বলেন, ওসি ডিবির বিরুদ্ধে উদ্ধার হওয়া মাদক ধ্বংস না করে বিক্রির একটি মৌখিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে অফিসিয়ালি তদন্ত চলছে। তাই কোনো মন্তব্য করতে চাই না। প্রথমে সত্য-মিথ্যা যাচাই হোক। তদন্ত শেষে এর বিস্তারিত বলা যাবে।


সর্বশেষ সংবাদ