ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলি ছুঁড়ে স্বর্ণের দোকানে ডাকাতির চেষ্টা, অতঃপর...
- ঝালকাঠি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১০ মার্চ ২০২৫, ০৯:৫৭ AM , আপডেট: ১০ মার্চ ২০২৫, ০৯:৫৭ AM

ঝালকাঠি শহরে একদল দুর্বৃত্ত ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে স্বর্ণের দোকানে ডাকাতির চেষ্টা করেছে। এতে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। রোববার (৯ মার্চ) সন্ধ্যায় শহরের ডাক্তারপট্টি এলাকায় পিকআপে করে আসা কিছু দুর্বৃত্ত দোকানগুলোয় ডাকাতির উদ্দেশ্যে হামলা চালায়। তারা প্রথমে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে এবং পরে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে।
এতে এলাকায় আতঙ্ক তৈরি হলে মানুষ ছোটাছুটি শুরু করেন। এ সময় ব্যবসায়ী এবং স্থানীয় লোকজন দ্রুত প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। এতে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। পালানোর সময় তারা পথে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বরিশালের দিকে চলে যায়।
জেলার পুলিশ সুপার উজ্জল কুমার রায় নিজেই গাড়ি নিয়ে পিকআপটিকে ধাওয়া করেন। তবে দুর্বৃত্তরা বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুলিশ লাইনসের সামনে ও বরিশাল-ঝালকাঠি আঞ্চলিক মহাসড়কের ষাটপাকিয়া এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এরপর তারা বরিশালের দিকে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় আহত হন পুলিশ সদস্যসহ বেশ কয়েকজন। আহতদের মধ্যে পুলিশ কনস্টেবল আজহারুল ইসলাম, উপপরিদর্শক (এসআই) সারোয়ার হোসেন মোল্লা এবং এক অজ্ঞাতপরিচয় শিশুও রয়েছেন।
স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ইফতারের সময় শহরের ডাক্তারপট্টি এলাকায় নীল রঙের পিকআপে চড়ে চার থেকে পাঁচজন তরুণ ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে কয়েকটি স্বর্ণের দোকানে লুটের চেষ্টা করে। এ সময় ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ তাদের ধাওয়া দেন। দুর্বৃত্তরা এ সময় কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে; ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। পালানোর সময় ওই পিকআপ থেকে পথে পথে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
যেসব জায়গায় ককেটলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে, সেসব জায়গায় কয়েকজন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ ষাটপাকিয়া এলাকায় লোকজন দুর্বৃত্তদের প্রতিরোধের চেষ্টা করেন। তখন কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তারা বরিশালের দিকে চলে যায়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা মাহবুবুর রহমান বলেন, লুটের উদ্দেশ্যে একদল তরুণ নীল রঙের পিকআপে চড়ে ডাক্তারপট্টির একাধিক স্বর্ণের দোকানে হানা দেওয়ার চেষ্টা করে। পরে জনতার প্রতিরোধে তারা পালিয়ে যায়।
বিমল কর্মকার নামে আরেক স্বর্ণ ব্যবসায়ী বলেন, সন্ধ্যায় ইফতারের মুহূর্তে ডাক্তারপট্টি এলাকায় একদল দুর্বৃত্ত পিকআপে করে এসে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ভীতি সৃষ্টি করে প্রথমে মা কালী জুয়েলার্সে ডাকাতির চেষ্টা চালায়। তবে স্থানীয় লোকজনের প্রতিরোধের মুখে তারা ষাটপাকিয়া হয়ে বরিশালের দিকে পালিয়ে যায়।
আরো পড়ুন: শাহবাগ ব্লকেডের ডাক ৩০ কলেজের শিক্ষার্থীদের, সড়কেই করবেন ইফতার
ঘটনার পর বিএনপির সদস্যসচিব শাহাদাৎ হোসেনের নেতৃত্বে দলের নেতা-কর্মীরা ঘটনাস্থলে বিক্ষোভ মিছিল করেন। তিনি বলেন, পতিত স্বৈরাচারের দোসররা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি করার জন্য এবং মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য ডাকাতি চেষ্টা, বোমা বিস্ফোরণ ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটিয়েছে। জেলা বিএনপি এ ধরনের কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে। বিএনপি জনগণকে সাথে নিয়ে এ ধরনের অরাজকতা ও অপকর্ম প্রতিরোধ করবে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, দুর্বৃত্তদের আচরণ দেখে মনে হচ্ছে, এটি ডাকাতির চেষ্টা বা উদ্দেশ্য নয়। শহরজুড়ে আইনশৃঙ্খলার অবনতি সৃষ্টি করাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য। তাৎক্ষণিক পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তদন্ত শুরু করেছে। সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে অপরাধীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, এটি একটি পরিকল্পিত অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা ছিল। অপরাধীদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।