বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে মসজিদের চাল আত্মসাতের অভিযোগ, প্রতিবাদ করায় মারধর

আহত হয়ে হাসপাতালে
আহত হয়ে হাসপাতালে  © সংগৃহীত

পাবনার চাটমোহরে একটি মসজিদের চাউল আত্মসাতের প্রতিবাদ করায় স্থানীয়দের মারধর করেছেন ফৈলজানা ইউনিয়ন বিএনপি সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম। শুক্রবার (৭ মার্চ) ফৈলজানা ইউনিয়নের কদমতলী মিনাজ মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন কদমতলী মিনাজ মোড় গ্রামের জয়নাল আবেদীনের স্ত্রী সালমা খাতুন (৩৫), তার শিশু সন্তান সোহেল (১১) ও আলাউদ্দিন আলীর স্ত্রী আলপনা খাতুন (৩২)।

আহত সালমা খাতুন বলেন, 'মিনাজ মোড় জামে মসজিদে দুই টন চাল বরাদ্দ পাওয়া যায়।

সেই চাল বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করেন সাইফুল, মতিন গং। তার প্রতিবাদ করেছিলেন আমার স্বামীসহ এলাকার অনেকে। সেই ক্ষোভে সকালে এসে তারা আমাদের বাড়িঘরে হামলা চালায়। তাদের বাধা দিতে গেলে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন তারা।

স্থানীয় বাসিন্দা লোকমান হোসেন (৬০) বলেন, 'বুধবার উপজেলা থেকে দুজন অফিসার আমাদের এলাকায় গিয়ে বলেন, ১৫ দিন আগে মিনাজ মোড় জামে মসজিদে সরকারিভাবে দুই টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। পেয়েছেন কি না। কিন্তু আমরা কেউ কিছু জানি না। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, সাইফুল, মনিরুল ইসলাম, মসজিদ কমিটির ক্যাশিয়ার আব্দুল মতিন মিলে চাল তুলে বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

তখন অফিসারের সামনে ক্যাশিয়ার মতিন বলেন, তিনি টাকা পাননি, এ বিষয়ে কিছু জানেনও না।'
বৃহস্পতিবার গ্রামের মুসল্লিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে (ইউএনও) গিয়ে এ বিষয়ে অভিযোগ দেন। এ সময় খবর পেয়ে মসজিদ কমিটির ক্যাশিয়ার মতিন ইউএনও কার্যালয়ে হাজির হয়ে সবার সামনে বলেন, তারা চাউল বরাদ্দ পেয়েছেন এবং তুলে বিক্রি করেছেন। 

অভিযোগ দেওয়ার জেরে শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে সাইফুল, তার সহযোগী মনিরুল, মতিন, সাদিকুল, শামীম, জাহাঙ্গীরসহ ১৫-২০ জন হামলা চালায়। এ সময় তাদের বাধা দিতে গেলে নারী-শিশুসহ অনেককে মারধর ও বাড়ি ভাঙচুর করে তারা।

এতে পাঁচজন আহত হয়।

সাইফুল বলেন, 'মসজিদে টাকা আত্মসাতের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। চাল তুলে বিক্রি করেছিলেন মসজিদের ক্যাশিয়ার। তিনি তো স্বীকার করেছেন যে তার কাছে টাকা আছে। তাহলে তো কোনো সমস্যা থাকার কথা না। ইতোপূর্বে টাকার জন্য ক্যাশিয়ারকে ওই পক্ষ মারধর করেছিল। সেই কারণে আজকের মারধরের ঘটনা ঘটতে পারে। তবে আজকের মারধরের সঙ্গে আমি জড়িত নই। মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।'

চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুসা নাসের চৌধুরী বলেন, বৃহস্পতিবার গ্রামবাসী একটি অভিযোগ দিয়েছে। একই দিন মসজিদ কমিটির ক্যাশিয়ার টাকা দিয়ে দেবেন বলে জানান। কিন্তু আজকে মারধরের ঘটনাটি দুঃখজনক। ফৌজদারি অপরাধ হওয়ায় এখন আইনগতভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


সর্বশেষ সংবাদ