অনৈতিক সম্পর্কে রাজি না হওয়ায় ভাবিকে ছুরিকাঘাতে হত্যা
- নোয়াখালী প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:০০ PM , আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৩১ PM
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে অনৈতিক সম্পর্কে রাজি না হওয়ায় ভাবিকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছেন দূরসম্পর্কের এক দেবর। ওই সময় গৃহবধূর সঙ্গে থাকা শ্বশুর রেজাউল হককেও ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন।
আজ মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের হাজীপুর এলাকার মাইল্যা বাদশা মিয়ার বাড়ির সামনের সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শাহনাজ আক্তার পিংকি (৩৫) উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পৌর হাজীপুর এলাকার নোয়াবাড়ির কুয়েতপ্রবাসী জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী ও দুই ছেলের মা।
অভিযুক্ত দেবর সাইফুল ইসলাম ওরফে খালেদ (৩০) একই বাড়ির ডিশ লিটনের ছেলে।
নিহতের বড় বোন ফারজানা আক্তার সুমি বলেন, পারিবারিকভাবে ১৬ বছর আগে পিংকির সঙ্গে জাহাঙ্গীরের বিয়ে হয়। ঘাতক খালেদ পিংকির দূরসম্পর্কের চাচাতো দেবর এবং একই বাড়ির বাসিন্দা। বছরখানেক আগে পিংকির ব্যবহৃত মোবাইল নষ্ট হয়ে যায়। স্বামী প্রবাসে থাকায় তার বড় ছেলের মাধ্যমে সেটি বাজার থেকে মেরাকত করে আনতে দেন খালেদকে। ওই সময় খালেদ মোবাইল থেকে পিংকির স্বামীকে পাঠানো ব্যক্তিগত ছবিও-ভিডিও নিজের মুঠোফোনে নিয়ে নেন। এরপর ওই ছবি ও ভিডিও দিয়ে পিংকিকে ব্ল্যাকমেইল করে সাত লাখ টাকা নেন। একই কায়দায় অনৈতিক সম্পর্কে জড়ানোর চেষ্টা চালান।
আরও পড়ুন: স্ত্রীকে হত্যা করে পাশে শুয়েছিলেন স্বামী
ফারজানা আরও বলেন, এরপর খালেদ আরও টাকা দাবি করেন এবং অনৈতিক সম্পর্কে রাজি না হওয়ায় পিংকিকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেন। কিছুদিন আগে এ নিয়ে আদালতে মামলা করেন পিংকি। গত দুই মাস আগে পিংকির স্বামী দেশে এলে এসব বিষয় নিয়ে তার ওপর হামলা করেন খালেদ।
পিংকির দুলাভাই বাবর হোসেন বলেন, মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে স্বামীর বাড়ি থেকে শ্বশুর রেজাউল হকের (৭২) সঙ্গে চৌমুহনী পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডে বাবার বাড়িতে যাচ্ছিলেন পিংকি। ওই সময় তারা চৌমুহনী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাদশা মিয়ার বাড়ির সামনের সড়কে পৌঁছালে খালেদ তাদের গতি রোধ করেন। সেখানে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে পিংকিকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে খালেদ। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। তখন পুত্রবধকেূ বাঁচাতে চেষ্টা করলে শ্বশুর রেজাউল হোসনকেও ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত করা হয়। পরে স্থানীয়রা পিংকি ও তার শ্বশুরকে উদ্ধার করে চৌমুহনী লাইফ কেয়ার হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক পিংকিকে মৃত ঘোষণা করে।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত ২ মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ
চৌমুহনী লাইফ কেয়ার হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আবু তালেব বলেন, পিংকিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরে নিহতের স্বজনেরা মরদেহ নিয়ে যান।
বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লিটন দেওয়ান বলেন, নিহত গৃহবধূর পরিবারের সঙ্গে খালেদের পরিবারের আগে থেকে দ্বন্দ্ব ছিল। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষে এসব বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে। নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।