গোপনে সহকর্মীকে বিয়ে, প্রথম স্ত্রীর মামলায় কারাগারে কলেজশিক্ষক

অভিযুক্ত কলেজ শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেন
অভিযুক্ত কলেজ শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেন  © সংগৃহীত

স্ত্রী-সন্তান থাকার পরও গোপনে সহকর্মীকে বিয়ে, যৌতুকের জন্য স্ত্রী নির্যাতনসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ উঠেছে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের হিসাববিজ্ঞানের প্রভাষক জাহাঙ্গীর হোসেনের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে প্রথম স্ত্রীর আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনে মামলার পর তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে আদালতের মাধ্যমে ওই শিক্ষককে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে।

মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে মধ্য বড়কুল গ্রামের শহীদুল্লাহর ছেলে ও বর্তমান হাজীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক জাহাঙ্গীর হোসেনের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় ঢাকা ডেমরা থানার সারুলিয়া এলাকার আবুল হোসেন খন্দকারের মেয়ে রোকসানা ইয়াছমিনের। তাদের সংসারে এক বছর বয়সী একটি পুত্রসন্তান রয়েছে। এরই মধ্যে তিনি বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়ান হাজীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষিকা শারমিন আক্তারের সঙ্গে; যা গড়ায় বিয়ে পর্যন্ত। 

অভিযোগে আরও বলা হয়, বিয়ের পর প্রথম স্ত্রীকে তাড়াতে শুরু হয় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। তারই ধারাবাহিকতায় প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে সংসার করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ১০ লাখ টাকা তার বাবার কাছে থেকে এনে দিতে চাপ দেয়। তবে দাবিকৃত টাকা শ্বশুর দিতে অস্বীকার করায় শিক্ষক জাহাঙ্গীর তার স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। একপর্যায়ে শিশু সন্তানসহ স্ত্রীকে ঘর থেকে বের করে দেন ওই শিক্ষক। পরে বিষয়টি নিয়ে সালিশ বৈঠকে বসলেও সমাধান হয়নি। বরং তাকে ১০ লাখ টাকা না দিলে সংসার করবে না বলে জানায়। বর্তমানে শিশু সন্তানকে নিয়ে অসহায় জীবনযাপন করছে প্রথম স্ত্রী রোকসানা।

প্রথম স্ত্রী বাদী হয়ে যৌতুক নিরোধ আইনে ঢাকা সিএমএম আদালতে মামলার পর আদালতের নির্দেশে অভিযুক্ত জাহাঙ্গীরকে গত ২৪ নভেম্বর গ্রেপ্তার করে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ। ওই দিনই তাকে চাঁদপুরের আদালতে হাজির করে জামিন চাইলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

আরও পড়ুন: ‘১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের আবেদনের সময় বাড়ছে না’

হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রশিদ জানান, আদালতের আদেশে আমরা তাকে গ্রেফতার করে চাঁদপুর আদালতে সোপর্দ করেছি। আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণ করেছেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেনের প্রথম স্ত্রী ভুক্তভোগী রোকসানা ইয়াছমিন জানান, সন্তান গর্ভে আসার পর থেকেই তিনি অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে। সন্তান জন্ম হওয়ার কয়েকদিন পরই তিনি আমাকে ফোন করে জানান, তিনি বিয়ে করেছেন। এরপর তিনি আমার এবং সন্তানের খোঁজ খবর নেওয়া বন্ধ করে দেন।’

ভুক্তভোগী এই নারী অভিযোগ করে বলেন, ‘জাহাঙ্গীরের যে সংসার আছে, সেটি শিক্ষিকা শারমিন জানতেন। তারপরও একজন শিক্ষক হয়ে কীভাবে তার সঙ্গে সম্পর্কে জড়ালেন? আমার সংসার ধ্বংস করে দিয়েছেন ওই শিক্ষিকা। কেন আমার ছোট্ট সন্তান তার পিতার স্নেহ থেকে বঞ্চিত। আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি সংসারটা টিকিয়ে রাখতে। এখন আমরা ন্যায় বিচার চাই।

কলেজ অধ্যক্ষের কাছে এর বিচার চাইলে তিনি কোনো সমাধান না করে এড়িয়ে যান বলে অভিযোগ ওই নারী।

এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মাসুদ হোসেন বলেন, প্রথম স্ত্রীর বাবা এসে বিষয়টি আমাকে জানানোর পর বসে সমাধানের চেষ্টা করেছি। তখন কোনও কারণ না থাকায় আমরা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যেতে পারিনি। এখন সে গ্রেপ্তার হয়েছে, তাই আমরা চাকরিবিধি অনুযায়ী এখন ব্যবস্থা নিবো।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence