পরীক্ষার খাতা কেড়ে নেওয়ায় শিক্ষককে ছাত্রের চড়-থাপ্পড়

পরীক্ষার খাতা কেড়ে নেওয়ায় শিক্ষককে ছাত্রের চড়-থাপ্পড়
পরীক্ষার খাতা কেড়ে নেওয়ায় শিক্ষককে ছাত্রের চড়-থাপ্পড়  © ইন্টারনেট

পরীক্ষার খাতা কেড়ে নেওয়াকে কেন্দ্র করে শিক্ষককে থাপ্পড় মেরেছে এক ছাত্র। চুয়াডাঙ্গা ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষা চলাকালীন এ ঘটনাটি ঘটে। রোববার (৮ অক্টোবর) রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এই ঘটনার সিসিটিভির ফুটেজ ছড়িয়ে পড়লে তা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে তোলপাড় শুরু হয়।

এই ঘটনা জানতে পেরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) শারমিন আক্তারকে প্রধান করে ইতিমধ্যে চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন জেলা প্রশাসক। তিন কার্যদিবসের মধ্য কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, ওই স্কুলে রোববার সকাল ১০টায় এসএসসির হিসাব বিজ্ঞান পরীক্ষা চলাকালীন পরীক্ষায় হলের দায়িত্বে ছিলেন বাংলা বিভাগের সহকারী শিক্ষক হাফিজুর রহমান।

পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টা ১১ মিনিটে পরীক্ষার্থী সাইফুল আমিন শীর্ষ অন্যদের দেখে লেখায় প্রথমে তাকে নির্ধারিত আসন থেকে সরিয়ে সামনের একটি বেঞ্চে বসানো হয়। আবারও পেছনে ঘুরে অন্যের খাতা দেখে লেখছিল সে। 

বিষয়টি দায়িত্বরত শিক্ষকের নজরে এলে তিনি ছাত্রের খাতা কেড়ে নেওয়ায় তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় ধাক্কা দিয়ে ছাত্রকে বেঞ্চে বসতে বলেন শিক্ষক। 
এরপর কয়েক মিনিট ওই ছাত্র তার নির্ধারিত আসনে বসে থাকে। তবে কিছু সময় পর সাইফুল বেঞ্চ থেকে উঠে কিছু বুঝে ওঠার আগেই শিক্ষকের দুই গালে চড়-থাপ্পড় মারা শুরু করে। পরে তারা দুই জনই বাইরে চলে যান। 

বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বিষয়টি বিদ্যালয়ের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমাকে জানালে। জেলা প্রশাসক চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করেন। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- সদর সার্কেলর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনিছুজ্জামান লালন, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আতাউর রহমান ও ভিক্টোরিয়া জুবিলি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেখ সফিয়ার রহমান । তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।

এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দাবি, ক্লাসে যাওয়ার মতো পরিবেশ চান তারা। ছাত্রের এমন আচরণে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। এছাড়া 
সাবেক ছাত্ররা জানান, তারাও এ স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। শিক্ষকদের সঙ্গে কখনো তারা বেয়াদবি করেননি। এটি একটি জঘন্যতম ঘটনা। ছাত্রের শাস্তি ছাড়া কোনো সমাধান নেই।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেখ সফিয়ার বলেন, পরীক্ষা চলাকালে একজন শিক্ষককে এক ছাত্র লাঞ্ছিত করেছে। বিষয়টি আমরা তার অভিভাবক ও জেলা প্রশাসককে জানিয়েছি। জেলা প্রশাসক আমাদের পাশে থাকবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। 

জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এর প্রেক্ষিতে চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিন কার্যদিবসের মধ্য প্রতিবেদন দেবে কমিটি। প্রতিবেদন পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দায়ী ছাত্রকে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


সর্বশেষ সংবাদ