ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে ৭২ লাখ টাকার চেক আদায়, ওসিকে প্রত্যাহার

ওসি শেখ মোস্তাফিজুর রহমান
ওসি শেখ মোস্তাফিজুর রহমান  © ফাইল ছবি

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবা এলাকার আবু জাফর ওরফে ঠান্ডু চোকদার নামে এক ব্যবসায়ীকে থানায় নিয়ে পিটিয়ে ৭২ লাখ টাকার চেক লিখে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। ওই ব্যবসায়ী ২ জুন এ ঘটনার বিচার চেয়ে পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।

অভিযুক্ত দুই পুলিশ কর্মকর্তা হলেন- নড়িয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনির ও পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোস্তাফিজুর রহমান।

এরই মধ্যে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমানকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। প্রত্যাহারের পর তাকে পুলিশ লাইনে পদায়ন করা হয়েছে।

এ ঘটনার তদন্ত করার জন্য পুলিশ সুপার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। শরীয়তপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোহাম্মদ বদিউজ্জামান অভিযোগের তদন্ত করছেন।

পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানা সূত্র জানায়, জাজিরার আহাদী বয়াতিকান্দি গ্রামের শাহীন আলম শেখ নামে এক ব্যক্তি ও তার সহযোগী ছোট কৃষ্ণনগর গ্রামের সেকান্দার মাদবরের কাছ থেকে গত ২১ মে ১৭ হাজার ডলার, নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনতাই করা হয়। তাতে ২১ লাখ ১৫ হাজার ২৫০ টাকা খোয়া গেছে, এমন অভিযোগ এনে ৯ জনকে আসামি করে ২৩ মে মামলা করেন শাহীন আলম। ওই মামলায় নাওডোবা বাজারের ব্যবসায়ী ঠান্ডু চোকদারের চার আত্মীয়কে আসামি করা হয়।

পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগে ঠান্ডু চোকদার বলেন, ৩১ মে রাতে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানা পুলিশ তাকে বাড়ি থেকে থানায় তুলে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে নড়িয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনির ও পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার ওসি শেখ মোস্তাফিজুর রহমান তাকে চাপ দেন ছিনতাই মামলার আসামি সাদ্দাম চোকদার, তার বাবা বাদশা চোকদার, বকুল চোকদার ও বকুল চোকদারের বাবা রশিদ চোকদারের পক্ষ থেকে ৭২ লাখ টাকা দেওয়ার জন্য। বিনিময়ে নাওডোবা বাজারে থাকা ওই ব্যক্তিদের দুটি দোকান তাকে লিখে দেওয়া হবে।

পুলিশের এমন প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় দুই পুলিশ কর্মকর্তা তাকে মারধর করেন। ওসির কক্ষে আটকে চোখ বেঁধে তাকে ২ ঘণ্টা পেটানো হয়। একপর্যায়ে ৭২ লাখ টাকার চেক লিখে দিতে রাজি হলে তার চাচা রশিদ চোকদারের জিম্মায় ভোরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরদিন সকালে ন্যাশনাল ব্যাংক নাওডোবা শাখার হিসাব নম্বরের পাঁচটি চেকের মাধ্যমে ৭২ লাখ টাকা লিখে দেন। ওই চেকগুলো ওসি মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে দেওয়া হয়। জনৈক মো. শহীদুল ইসলামের নামে চেকগুলো লিখে রাখে পুলিশ। এ ছাড়া তার কাছ থেকে দুটি নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পেও স্বাক্ষর নেওয়া হয়।

পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর পাঁচটি চেক উদ্ধার করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা। তবে নড়িয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের কাছে আসামির আত্মীয়কে নির্যাতন করে চেক লিখে নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি তা অস্বীকার করেন। এ বিষয়ে আর কিছু বলতে তিনি রাজি হননি।

পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার ওসি অভিযোগের বিষয়ে বলেন, আমরা কোনো ব্যক্তিকে উঠিয়ে এনে নির্যাতন করিনি। কারও চেক সই করে আমরা কেন নেব। এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন। পুলিশ কি কারও চেক নিতে পারে?

এ বিষয়ে শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার সাইফুল হক বলেন, পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানা এলাকার এক ব্যক্তি একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। তাকে ডেকে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে, এমন অভিযোগ করেছেন দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। ঘটনাটি তদন্তের জন্য কমিটি করা হয়েছে। কমিটি কাজ করছে। তদন্ত প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাবে না।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence