স্কুলছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করায় ছাত্রলীগ নেতাকে মারধর!

আহত ছাত্রলীগ নেতা
আহত ছাত্রলীগ নেতা  © ফাইল ছবি

লক্ষ্মীপুরে দশম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে উত্ত্যক্তের ঘটনায় স্বজনদের হাতে পিটুনি খেয়ে মনোয়ার হোসেন নামে এক ছাত্রলীগ নেতা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে সদর উপজেলার লাহারকান্দি ইউনিয়নের চাঁদখালী বাজারে এ ঘটনা ঘটে। আহত মনোয়ার লাহারকান্দি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক।

তবে বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মনোয়ার দাবি করেন, কোনো মেয়েকে উত্ত্যক্তের সঙ্গে তিনি জড়িত নন। ছাত্রদল-শিবিরের রাজনীতি ছেড়ে ছাত্রলীগে যোগ দেওয়ার জন্য বলায় তাকে মারধর করা হয়েছে। হামলাকারীরা বিএনপি-জামায়াতের সদস্য। স্থানীয়রা তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

এদিকে, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী লাহারকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য জাবেদ হোসেন মামুন বলেন, মনোয়ার এক স্কুলছাত্রীকে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে উত্ত্যক্ত করে। এতে ছাত্রীর স্বজনরা তার কাছে ঘটনাটি জানতে চায়। এ ঘটনায় মনোয়ার তাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। পরে উভয়পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এখানে রাজনৈতিক কোনো ঘটনা নেই।

স্থানীয় সূত্র জানায়, বুধবার রাতে লাহারকান্দি ইউনিয়নের চাঁদখালী বাজারে মনোয়ারের কাছে ছাত্রীর মামা মো. বিজয় ও চাচাতো ভাই মো. জিয়ান উত্ত্যক্তের কারণ জানতে চান। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে মারামারি হয়। পরে মনোয়ারকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

তবে প্রত্যক্ষদর্শী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের একাধিক নেতা ঘটনাটি রাজনৈতিক কোনো হামলা নয় বলে জানিয়েছেন। তাদের দাবি, মনোয়ার এক স্কুলছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করতেন। এ ঘটনায় মারধরের শিকার হন। দলীয় পদবি রক্ষায় তিনি এখন জামায়াত-বিএনপির হামলা বলে প্রচার করছেন।

ওই ছাত্রীর বাবা বলেন, বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে আমার মেয়েকে মনোয়ার উত্ত্যক্ত করতো। একাধিকবার কুপ্রস্তাবসহ নানা ধরনের হুমকি দিয়েছে। ভয়ে আমার মেয়ে প্রথমে কাউকে কিছু বলেনি। সম্প্রতি এক সহপাঠীর মাধ্যমে মনোয়ার তাকে একটি চিরকুট দেয়। এর পর সে বিষয়টি আমাদের জানায়। বুধবার রাতে স্থানীয় বাজারে মনোয়ারকে বিষয়টি নিয়ে জিজ্ঞাসা করতেই সে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। পরে লোকজন নিয়ে এসে আমার শ্যালক বিজয়, ভাইয়ের ছেলে হৃদয়, রিফাত ও জিয়ানকে মারধর করে। এখন উল্টো মনোয়ার হাসপাতাল ভর্তি হয়ে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে পুলিশ দিয়ে আমাদের হয়রানি করছে।

লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তফা কামাল বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তবে এ বিষয়ে কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এর আগে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে মনোয়ারকে ২০২১ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি লাহারকান্দি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। পরে গত ৭ জুন মনোয়ারের অব্যাহিত প্রত্যাহার করে স্বপদে বহাল করে সদর উপজেলা ছাত্রলীগ।


সর্বশেষ সংবাদ