এবার কাফনের কাপড় মাথায় বেঁধে ফেনী পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের মিছিল
- ফেনী প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৩৯ PM , আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৩৯ PM

জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতির রায় হাইকোর্ট কতৃর্ক বাতিলসহ ছয় দফা দাবিতে ফেনীতে কাফনের কাপড় মাথায় বেঁধে গণমিছিল করেছেন ফেনী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।
আজ শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) বাদ জুমা ফেনী পলিটেকনিক জামে মসজিদের সামনে থেকে একটি গণমিছিল শুরু হয়। মিছিলটি ফেনী সদর হাসপাতাল মোড়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে জুলাই ২৪ শহীদ স্মৃতি চত্বরে এসে প্রতিবাদ সমাবেশে মিলিত হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবি মানার জন্য নানা প্রতিবাদী স্লোগান দেন।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, ক্রাফট ইন্সট্রাক্টর পদে কর্মরত ব্যক্তিরা মূলত অষ্টম শ্রেণি কিংবা এসএসসি পাস। তাদের বেশির ভাগেরই কারিগরি কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। অথচ এই পদে নিযুক্ত ব্যক্তিদের ‘জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর’ হিসেবে প্রমোশন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীদের জন্য অযৌক্তিক ও অসম্মানজনক। জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতির রায় হাইকোর্ট কতৃর্ক বাতিলসহ ৬ দফা দাবিতে তাদের আজকের গণমিছিল। অনতিবিলম্বে সব দাবি পূরণ না হলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেন তারা।
আরও পড়ুন: ডিবির পৃথক অভিযানে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের ৬ নেতা গ্রেফতার
ফেনী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের রাতুল নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘৬ দফা দাবিতে আমরা বেশ কয়েকদিন আন্দোলন চালিয়ে আসছি। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে আমাদের কেন্দ্রীয় ছাত্র প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসে দাবিগুলো মনে নেওয়া হবে। গতকাল সে বিষয়ে বৈঠক ডেকে সেখানে শিক্ষা উপদেষ্টা ও সচিব কেউ ছিলেন না। তারা বলছেন আমাদের দাবিগুলো যৌক্তিক। তবে যৌক্তিক দাবি মেনে নিতে তাদের সমস্যা কোথায়!’
সুসান সানি নামের অপর এক শিক্ষার্থী বলেন, ক্রাফট ইন্সট্রাক্টররা কারিগরি ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আসেন না তারা মূলত ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের ল্যাব সহকারী কর্মচারী এবং সাধারণত অষ্টম বা এসএসসি পাস। তাদের ডিপ্লোমার শিক্ষক হওয়ার মতো কোনো যোগ্যতা নেই। এসব পদে যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যাক্তিদের নিয়োগ দিতে হবে।
নিলয় নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোনোভাবেই নিয়োগ দেওয়া উচিত নয়। এই পদে সংশ্লিষ্ট টেকনোলজির ডিপ্লোমা গ্রাজুয়েটদেরই নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন। কারণ ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের সুবিধা অসুবিধা একজন ডিপ্লোমা গ্রাজুয়েটই ভালো বুঝবেন। কারিগরি সেক্টরের যারা পড়াশোনা করে গেছে তারাই এ সেক্টর সম্পর্কে ভালো বুঝবে।
আরও পড়ুন: কুর্মিটোলা হাসপাতালে শয্যা-সংকট, বিড়ম্বনায় নতুন রোগীরা
শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত ছয় দফা দাবির মধ্যে রয়েছে
১. ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদোন্নতির রায় বাতিল ও বিতর্কিত নিয়োগবিধি সংশোধন।
২. চার বছর মেয়াদি মানসম্পন্ন কারিকুলাম চালু এবং ধাপে ধাপে তা ইংরেজি মাধ্যমে পরিচালনা।
৩. উপসহকারী প্রকৌশলীর (১০ম গ্রেড) পদে ডিপ্লোমা পাস শিক্ষার্থীদের নিয়োগ নিশ্চিত।
৪. কারিগরি শিক্ষা প্রশাসনে বহিরাগত জনবল নিয়োগ বন্ধ এবং শুন্য পদে কারিগরি ডিগ্রিধারী নিয়োগ।
৫. ‘কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়’ নামে আলাদা মন্ত্রণালয় ও কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন।
৬. ডিপ্লোমা পাস শিক্ষার্থীদের জন্য একটি উন্নতমানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা।
প্রসঙ্গত, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ক্রাফট ইন্সট্রাক্টররা জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে প্রমোশনের জন্য আদালতে মামলা করলে সোমবার (১৮ মার্চ) আদালত তাদের পক্ষে রায় দেন। আর এই রায় প্রত্যাখান করাসহ ৬ দফা দাবিতে সারাদেশের পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময়ে নানা কর্মসূচি পালন করে।