ইট-সুরকির নিচে গলিত লাশ, কাটা হাত দেখে ফাঁস ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ১২ এপ্রিল ২০২৫, ১০:১৯ AM

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে রাস্তার পাশে ইট-সুরকির স্তূপে দেখা মেলে একটি কাটা হাত। সঙ্গে সঙ্গে দুর্গন্ধে টের পান পথচারীরা। পরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করলে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। ইট-সুরকি সরিয়ে দেখা যায়, বস্তা ও কাপড় মোড়ানো অবস্থায় রয়েছে তিনটি খণ্ডবিখণ্ড অর্ধগলিত মরদেহ।
শুক্রবার (১২ এপ্রিল) সকালে সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি পশ্চিমপাড়া এলাকায় ঘটেছে এই মর্মান্তিক ঘটনা। নিহত তিনজন একই পরিবারের—পোশাককর্মী লামিয়া আক্তার (২২), তাঁর চার বছর বয়সী ছেলে আব্দুল্লাহ লাবিব এবং মানসিক ভারসাম্যহীন বড় বোন স্বপ্না আক্তার (৩৫)। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে লামিয়ার স্বামী মো. ইয়াসিনকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, আখতার হোসেনের বাড়ির পেছনের রাস্তার পাশে চাপা দেওয়া ছিল লাশ তিনটি। বস্তা মোড়ানো লামিয়া ও স্বপ্নার দেহ ছিল বিচ্ছিন্ন ও খণ্ডবিখণ্ড করা। তাদের মাথা, হাত-পা কেটে আলাদা করে ফেলা হয়। অন্য বস্তায় পাওয়া যায় শিশুপুত্র আব্দুল্লাহর মরদেহ, যাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে।
ধারণা করা হচ্ছে, চার-পাঁচ দিন আগেই তাদের হত্যা করা হয় এবং গুমের উদ্দেশ্যে লাশ চাপা দিয়ে রাখা হয়েছিল। লাশগুলো ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, হত্যার স্থান থেকে মাত্র ২৫ গজ দূরে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতেন লামিয়া ও ইয়াসিন। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, ইয়াসিন একজন বখাটে, চুরি ও মাদকে জড়িত। তার স্ত্রীর কাছে নিয়মিত টাকা চাইতেন, না পেলে চলত নির্যাতন। স্বপ্না ছিলেন প্রতিবন্ধী, তাকেও আশ্রয় দিয়েছিলেন লামিয়া।
ঘটনার দিন সকালে এলাকাবাসী ইয়াসিনকে আশপাশে ঘোরাঘুরি করতে দেখেন। পরে লাশ উদ্ধারের সময়ই উপস্থিত থাকা অবস্থায় তাকে আটক করা হয়।
নিহতদের খালা শিরিন বেগম জানান, “চার দিন ধরে মেয়েদের কোনো খোঁজ পাচ্ছিলাম না। বাসায় তালা দেওয়া ছিল। এসে দেখি এমন বিভৎস ঘটনা।”
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহীনুর আলম বলেন, ইয়াসিন একজন চিহ্নিত চোর ও মাদকসেবী। টাকা-পয়সা নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে প্রায়ই দ্বন্দ্ব হতো। এই দ্বন্দ্ব থেকেই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) তারেক আল মেহেদী জানান, ইয়াসিনকে আটক করা হয়েছে এবং আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।