বিয়েবাড়িতে বরপক্ষকে উদ্ধার করতে গিয়ে থানার ওসিও অবরুদ্ধ, অতঃপর...
- গাইবান্ধা প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ০২:১৩ PM , আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ০২:১৩ PM

‘গেটের টাকা’ ও ‘নরম ভাত’ দেওয়া নিয়ে বাগবিতণ্ডা, ধাক্কাধাক্কি ও ভাঙচুরের মধ্যে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে বরপক্ষের লোকজন অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন কনের বাড়িতে। তাদের উদ্ধার করতে গিয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজেই অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে এবং উদ্ধার করা হয় ওসিসহ অবরুদ্ধ ব্যক্তিদের।
আজ রবিবার (৬ এপ্রিল) সকালে সেনাবাহিনীর গাইবান্ধা ক্যাম্পের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মো. ওয়াজেদ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) দিবাগত রাতে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ছাপড়হাটী ইউনিয়নের পশ্চিম ছাপড়হাটী হাজিপাড়া গ্রামে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে গিয়ে এ ঘটনা ঘটে। পরদিন শুক্রবার (৪ এপ্রিল) দিবাগত রাতে কনের বাড়িতে অবরুদ্ধ হওয়া বরপক্ষের লোকজনকে উদ্ধার করতে গিয়ে সুন্দরগঞ্জ থানার ওসিও অবরুদ্ধ হন।
আরও পড়ুন: ঢাবির ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটে ভর্তি নিয়ে যা জানা যাচ্ছে
স্থানীয় সূত্র জানায়, পশ্চিম ছাপড়হাটী হাজিপাড়া গ্রামের প্রবাসী মো. দুখু মিয়ার স্কুলপড়ুয়া মেয়ের সঙ্গে পাশের রামজীবন ইউনিয়নের মো. আয়নাল হকের ছেলে মো. সবুজ সরকারের (২৮) বিয়ে হয়। শুরু থেকেই গেটের টাকা নিয়ে বাগবিতণ্ডা হয়। এরপর খাবার পরিবেশনের সময় ভাত নরম হওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়ে বরপক্ষ। একে একে তারা ভাতের প্লেট ছুড়ে ফেলেন, চেয়ার ভাঙচুর করেন।
কনের বাবার অনুপস্থিতিতে অনুষ্ঠান তদারকির দায়িত্বে থাকা কনের জেঠা পরিস্থিতি শান্ত করতে গেলে বরপক্ষের একাংশ তার কলার ধরে মাটিতে ফেলে মারধর করে। স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে অধিকাংশ বরযাত্রী পালিয়ে যান, তবে বরসহ কয়েকজনকে আটক করেন এলাকাবাসী।
পরদিন শুক্রবার অবরুদ্ধ থাকা লোকজনের পরিবার সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেয়। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে রাতেই ওসি মো. আবদুল হাকিম আজাদের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল উদ্ধার অভিযানে যায়। তবে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। কনে পক্ষের লোকজন পুলিশের দিকে ঢিল ছুড়তে শুরু করেন এবং একপর্যায়ে ওসিকে অবরুদ্ধ করে ফেলেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওসিসহ পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করেন।
আরও পড়ুন: ট্রেনে নারী যাত্রীকে উত্ত্যক্ত, প্রতিবাদ করায় ৪ ছাত্রদলকর্মীকে ছুরিকাঘাত
এ বিষয়ে সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মো. ওয়াজেদ হোসেন বলেন, ‘ওসি সাহেব ফোন করেছিলেন, আমরা দায়িত্ববোধ থেকে ঘটনাস্থলে যাই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা আমাদের কাজ। গিয়ে ওসিসহ সবাইকে উদ্ধার করি। তবে এলাকাবাসী আমাদের কথা শোনেনি। এমন আচরণ খুবই দুঃখজনক।’
সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি মো. আবদুল হাকিম আজাদ বলেন, ‘বিয়ের বাড়িতে মামলার ভুক্তভোগী তিনজন আটকা ছিলেন। তাদের উদ্ধার করতে গেলে আমাদের লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়া হয়। আমি পেছনে পড়ে গিয়ে পাশের একটি বাড়িতে আশ্রয় নিই। পরে ওই বাড়িটিও ঘিরে ফেলে উত্তেজিত জনতা।’