নতুন পাঠ্যবই আসার আগেই বাজারজাতকরণ হচ্ছে গাইড বই, বিক্রির জন্য ১৪ লাখে চুক্তি

প্রতীকী ছবি ও লোগো
প্রতীকী ছবি ও লোগো  © টিডিসি ফটো

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন পাঠ্যবই আসার আগেই গাইড বই বাজারজাতকরণ করতে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের সাথে ১৪ লাখ টাকার চুক্তি করেছে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতি। চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম শ্রেণি হতে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছে উচ্চমূল্যে গাইড বই বিক্রি করবে 'আল ফাতাহ পাবলিকেশনস'। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ১১ ডিসেম্বর ভূঞাপুর স্কাউট অফিসে মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির নেতাদের হাতে ১৪ লাখ টাকা তুলে দেয় প্রকাশনা সংস্থাটি। মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতি সেখান থেকে ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা সমিতির সোনালী ব্যাংকের হিসাব নম্বরে (৬০০৩০০২১৬৯৪০৭) জমা করেন। 

সূত্রটি আরও জানিয়েছে, গত বছর মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতি 'লেকচার পাবলিকেশনসের' সাথে ৭ লাখ টাকার চুক্তি করেছিল, তবে কোম্পানি ২ লাখ টাকা দিয়েছিল। কিন্তু শিক্ষার্থীরা বই না কেনায় বাকি ৫ লাখ টাকা পরিশোধ করেনি প্রকাশনা সংস্থাটি। ফলে এই বছর লেকচার পাবলিকেশনসের সাথে নতুন করে দরকষাকষি না করে সমিতির নেতারা আল ফাতাহ পাবলিকেশনসের সাথে চুক্তি করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক মাদ্রাসা শিক্ষক জানান, পাঠ্যবই এখনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসেনি। সেইখানে আগেই গাইড বই বাজারে আনতে এবং শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিতে মোটা অঙ্কের টাকা নেয়া হয়েছে। শিক্ষকদের দেয়া ওই টাকা গাইড বইয়ের মূল্যে যুক্ত হয়ে প্রকাশনা সংস্থাটি বই বাজারে ছাড়বে। এতে বেশি দামে গাইড বই কিনতে হবে শিক্ষার্থীদের।

ভূঞাপুর ফাযিল মাদরাসার সুপার আব্দুস সোবহান বলেন, 'আল ফাতাহ' গাইড বই প্রকাশনা সংস্থাটির কাছ থেকে ১৪ লাখ টাকা নিয়েছে শিক্ষক সমিতির নেতারা। সেখান থেকে সমিতির হিসাব নম্বরে ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা জমা দেয়া হয়েছে। বাকি টাকা কী হয়েছে সেটা সমিতির নেতারাই জানেন।'

বাংলাদেশ জামিয়াতুল মোদার্রেছীন ভূঞাপুর শাখার সভাপতি ও দাখিল মাদ্রাসার সুপার আফসার উদ্দিন বলেন, 'কোনো প্রকাশনা সংস্থার সাথে চুক্তি হয়নি। মাদ্রাসার কিছু শিক্ষক ভুল তথ্য ছড়াচ্ছেন।' 

সমিতির হিসাব নম্বরে একদিনে ৯ লাখ ৫০ টাকা জমা হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, 'শিক্ষকদের কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা জমা হয়েছে।'

বাংলাদেশ জামিয়াতুল মোদার্রেছীন ভূঞাপুর শাখার সাধারণ সম্পাদক ও বিলচাপড়া দাখিল মাদরাসার সুপার মাজহারুল ইসলাম তালুকদারের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, 'এই বিষয়ে মোবাইলে কথা বলা যাবে না।'

এ বিষয়ে আল ফাতাহ পাবলিকেশনসের ভূঞাপুর প্রতিনিধি নাহিদ ইসলাম বলেন, 'গাইড বই বাজারজাতের বিষয়ে মাদ্রাসা সমিতির শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানতে পারেন। মোবাইলে এই বিষয়ে কিছু বলার নেই।'

লেকচার পাবলিকেশনসের ভূঞাপুর প্রতিনিধি রিপন জানান, 'গত বছর চুক্তি হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু এবছর কোনো চুক্তি হয়নি।'

এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পপি খাতুন বলেন, 'এ বিষয়ে এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'


সর্বশেষ সংবাদ