ছাত্রলীগের গাড়ি ভাঙচুরের ভিডিও করায় বাকৃবিতে সাংবাদিককে মারধর

ছাত্রলীগের গাড়ি ভাঙচুরের ভিডিও করায় বাকৃবিতে সাংবাদিককে মারধর
ছাত্রলীগের গাড়ি ভাঙচুরের ভিডিও করায় বাকৃবিতে সাংবাদিককে মারধর  © টিডিসি ফটো

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) ২৬ মার্চের বিভিন্ন ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ দেখতে চাওয়া নিয়ে ছাত্রলীগের একপক্ষ রাস্তা অবরোধ ও গাড়ি ভাঙচুর করেছে। এসময় পেশাগত দায়িত্ব পালন করার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাংবাদিকের ফোন কেড়ে নিয়ে মারধর করে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী।

সোমবার (২৭ মার্চ) বিকাল সোয়া ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেডিয়াম সংলগ্ন নিরাপত্তা শাখার সামনে ওই ঘটনা ঘটে। আহত সাংবাদিক ময়মনসিংহ লাইভ অনলাইন পোর্টালে কর্মরত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ওমর আসিফ।

প্রত্যক্ষ্যদর্শী সূত্রে জানা যায়, ২৬ মার্চের ছাত্রী লাঞ্ছনার ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখায় বিক্ষোভ করে ছাত্রলীগের একটি পক্ষ। তারা বাকৃবির হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হল, ফজলুল হক হল, শামসুল হক হল ও ঈশা খাঁ হলের ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। বিক্ষোভের একপর্যায়ে নিরাপত্তা শাখার উভয় পাশের রাস্তা বন্ধ করে দেন আন্দোলনকারীরা।

আরও পড়ুন: ছাত্রীদের গায়ে হাত দেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা: বাকৃবি ছাত্রলীগ

এ সময় একটি প্রাইভেটকার ভাঙচুর করা হয় এবং ড্রাইভারসহ গাড়ির যাত্রীদের মারধর করা হয়। গাড়ি ভাঙচুরের সময় আন্দোলনকারীদের মধ্যে ২ জন আঘাত পায় ও তাদের হেলথ কেয়ারে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।

গাড়ি ভাংচুরের ভিডিও ধারণ করতে গেলে ময়মনসিংহ লাইভ অনলাইন পোর্টালে কর্মরত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ওমর আসিফের উপর চড়াও হয় শামসুল হক হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শাহীন সুমনসহ আরও কয়েকজন। এসময় তারা কিল ঘুষি মারতে থাকে সাংবাদিক আসিফকে। মারধরের সময় তার ফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয় এবং অকথ্য ভাষায় তাকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আহত ওমর আসিফকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথ কেয়ার সেন্টারে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

ঘটনাস্থলে বাকৃবি রিসার্চ সিস্টেমের (বাউরেস) পরিচালক অধ্যাপক ড. আবু হাদী নূর আলী খান, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মহির উদ্দীন, সহকারী প্রক্টর ড. মো. শফিকুল ইসলাম ও ড. মো. রিজওয়ানুল হক উপস্থিত ছিলেন।

পরে সন্ধ্যার দিকে সাংবাদিক ওমর আসিফের উপর হামলার ঘটনায় ওই হলগুলোর বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী নেতা ইমতিয়াজ আবির, আবু রায়হান মিথুন, সজীব চন্দ্র সরকার, নিলয় মজুমদার ও মিফতাহ সাংবাদিকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা চান। ওই আন্দোলন ও ভাঙচুরের সাথে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলেও জানান তারা।

আহত সাংবাদিক ওমর আসিফ বলেন, ‘ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা গাড়ি ভাঙচুরের সময় পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলাম। এসময় শামসুল হক হল ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শাহীন সুমনসহ আরও কয়েকজন আমার উপর হামলা করে। আমি এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাই ও সুষ্ঠু বিচার চাই।’

তবে অভিযুক্ত শাহীন সুমন বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি আন্দোলনে উপস্থিত ছিলাম। কিন্তু আমি কারো গায়ে হাত তুলিনি।’ সাংবাদিক মারধরের বিষয়ে ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এ কে এম জাকির হোসেন বলেন, ঘটনাটি অনাকাঙ্খিত এবং বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখে অভিযুক্তের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।