খাবার হোটেলে বাকৃবি সাংবাদিককে পেটালেন ছাত্রলীগ নেতারা
- বাকৃবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২২ নভেম্বর ২০২৩, ০৬:২০ PM , আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৩, ০৬:৩৪ PM
আবারও সাংবাদিকের ওপর হামলা করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষি অনুষদীয় ছাত্রলীগের সভাপতি শাহীনুর রেজা (সুমন)। এবার তার হামলার শিকার হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ও দৈনিক সমকালের প্রতিনিধি আশিকুর রহমান। এর আগেও সাংবাদিকের ওপর হামলা, নিরাপত্তাকর্মী মারধরসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে শাহীন সুমনের বিরুদ্ধে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে জানা যায়, মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) দুপুর ৩টার দিকে আশিকুর রহমান দুপুরের খাবার খেতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জব্বার মোড়ে অবস্থিত সজীব হোটেলে গিয়েছিলেন। এসময় বাকৃবি কৃষি অনুষদ ছাত্রলীগ সভাপতি শাহীনুর রেজা, পশুপালন অনুষদ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৌরভ মেহেরাবসহ আরও অনেকে দোকানে উপস্থিত ছিলেন।
একপর্যায়ে আশিকুর রহমানের অর্ডারকৃত খাবার হোটেল বয় শাহীনুর রেজাকে দিয়ে দেয়। তখন আশিকুর রহমান খাবারের বিষয়ে দোকানদারের সাথে কথা বলতে গেলে শাহীনুর রেজা ও তার সঙ্গী সৌরভ মেহেরাব তাকে এলোপাথাড়ি চড়-থাপ্পর মারতে থাকে। এসময় ফুটেজে দোকানদারকে মারধর আটকাতে দেখা গেছে।
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা ও প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী আশিকুর রহমান। জানা যায়, শাহীনুর রেজা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মেহেদী হাসানের অনুসারী। তিনি আবাসিক শামসুল হক হল ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি।
ভুক্তভোগী আশিকুর রহমান জানান, আমি যে খাবার অর্ডার করেছিলাম, সেটি শাহীনুর রেজা পার্সেল নিয়ে নেয়। এ বিষয়ে দোকানদারের সাথে কথা বলছিলাম। সেসময় পেছন থেকে শাহীনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ নেতারা আমার উপর অতর্কিত হামলা করে। আমি বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েছি। প্রশাসন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আমি পরবর্তীতে আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হবো।
অভিযুক্ত শাহীনুর রেজা বলেন, খাবার নিয়ে আশিকুর রহমানের সাথে কথা কাটাকাটি ও কিছুটা ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। তবে সেখানে মারামারির কোনো ঘটনা ঘটেনি।
আরেক অভিযুক্ত সৌরভ মেহেরাব জানান, খাবার নিয়ে শাহীন ভাইয়ের সাথে তার (আশিকুর রহমান) কথা কাটাকাটি হয়। একসময় শাহীন ভাইয়ের সাথে বেয়াদবি শুরু করলে তার গায়ে হাত তুলি।
এ বিষয়ে বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মেহেদী হাসানের সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে ও ক্ষুদে বার্তায় যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। এছাড়া শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি খন্দকার তায়েফুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগ গ্রহণকালে অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ বলেন, আমরা ঘটনার বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ হাতে পেয়েছি। আমরা এ বিষয়ে আলোচনা করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এর আগে ২০২২ সালের ২৬ মার্চের একটি ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ দেখাকে কেন্দ্র করে ২৮ মার্চ বিকেল সড়ক অবরোধ করে ছাত্রলীগের কর্মীরা। এসময় তাদের গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনার ভিডিও করায় একজন সাংবাদিককে মারধর করে শাহীনুর রেজাসহ আরও অনেকে। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠিত হলেও এখন পর্যন্ত কোনো বিচার হয় নি। এছাড়া গত বছর মধ্যরাতে একজন নিরাপত্তা কর্মীকে মারধরের সাথেও শাহীন সুমনের সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে।