গুগলে চাকরির স্বপ্ন নিমেষেই শেষ বিভাগে প্রথম বাকৃবির ইফতির

বাকৃবিতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত মোরশেদুল ইসলাম ইফতি
বাকৃবিতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত মোরশেদুল ইসলাম ইফতি  © সংগৃহীত

পড়াশোনায় ভালো ছিলেন মোরশেদুল ইসলাম ইফতি। নিজ বিভাগের পরীক্ষায়ও প্রথম হয়েছিলেন। ইচ্ছা ছিল বিদেশে ডিগ্রি নিয়ে গুগলের প্রকৌশলী হবেন। বাবা-মায়ের স্বপ্নও ছিল আকাশছোঁয়া। কিন্তু এক নিমেষেই শেষ হয়ে গেছে সব। তাঁর মৃত্যুর খবরে থামছে না মায়ের কান্না।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) খানাখন্দে ভরা সড়কে প্রাণ হারিয়েছেন ইফতি। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গাফিলতিকে দায়ী করছেন পরিবার ও সহপাঠীরা। প্রক্টরের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবিতে সহপাঠীরা স্মারকলিপিও দিয়েছেন । গত সোমবার রাতে টিএসসির সামনের সড়কে মোটরসাইকেল নিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন ইফতি। তিনি ছিলেন কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।

আব্দুল জব্বার মোড় যাওয়ার সময় বন্ধুসহ মোটরসাইকেল নিয়ে রাস্তার গর্তে পড়ে যান। সেখান থেকে হাসপাতালে নেওয়া হলে মারা যান ইফতি। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ও পরে নিজ বাড়িতে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে তাকে।

ইফতির বাড়ি দিনাজপুরের কমলপুর ইউনিয়নের রাইহাই পশ্চিম পাড়ায়। ময়মনসিংহের কেওয়াটখালী ওয়াপদার মোড় এলাকায় পরিবারের সঙ্গে বসবাস করতেন ইফতি। দুই ভাইয়ের মধ্যে বড় ছিলেন তিনি। বাবা রিয়াজুল ইসলাম মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালকের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা ছিলেন।

বাবা রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ইফতির মৃত্যুর পর থেকে মায়ের কান্না থামছেই না। সব আশা-ভরসা ছিল ইফতি। বিশ্ববিদ্যালয়ের গাফিলতির কারণে ছেলের মৃত্যু হয়েছে। সড়কে অনেক জায়গাজুড়ে গর্ত, কোনো সিগন্যাল নেই। দুর্ঘটনাস্থলে ছেলের নামে স্তম্ভ নির্মাণের দাবি জানান তিনি।

ইফতির সহপাঠীদের দাবির মধ্যে রয়েছে নিহতের পরিবারের ক্ষতিপূরণ, প্রক্টরের পদত্যাগ, সড়কে ভারী যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ ও চলাচল নিয়ন্ত্রণ এবং ইফতির স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ।

শিক্ষার্থীরা জানান, সড়কটির কিছু অংশ ভেঙে মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। গর্ত করে রাখা হলেও কোনও সতর্কবার্তা, রোড ডিভাইডার বা নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা ছিল না। হাসপাতালে প্রশাসনের সঠিক তদারকির অভাবে দায়সারা চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ইফতি মারা যাওয়ার পর লাশ আনতে প্রক্টর অপারগতা প্রকাশ করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক লুৎফুল হাসান বলেন, সংস্কারের স্থানে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা আরও ভালো হতে পারত। তদন্ত করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


সর্বশেষ সংবাদ