ঢাবির ‘খ’ ইউনিটে প্রথম হওয়া নোয়েলের কখনো স্মার্টফোন ছিল না

নাহানুল কবীর নোয়েল
নাহানুল কবীর নোয়েল  © টিডিসি ফটো

২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কলা অনুষদভুক্ত ‘খ’ ইউনিটের অধীনে ১ম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষার ফল আজ সোমবার প্রকাশিত হয়েছে। এ বছর ভর্তি পরীক্ষায় ৫৬ হাজার ৯৭২ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। এর মধ্যে ৫ হাজার ৬২২ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন। পাসের হার ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ।

এবার ফলাফলে প্রথম হয়েছেন সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ ফরিদপুরের শিক্ষার্থী নাহানুল কবীর নোয়েল (২০)। পরীক্ষায় ১২০ নম্বরের মধ্যে তিনি ৯৬.৫ পেয়েছেন। তিনি ময়মনসিংহ সদরের ভাবোখালী ইউনিয়নের ঘাগড়া গ্রামের বাসিন্দা চাঁদপুর সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ আনোয়ারুল কবীরের একমাত্র সন্তান। তার মা নাজমুন নাহার মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার মৎস্য ও সম্প্রসারণ কর্মকর্তা।

ফল প্রকাশের পর নোয়েলের মা নাজমুন নাহার জানান, তিনি কখনো নিজের স্মার্টফোন ফোন ব্যবহার করেননি। ছেলের সফলতার অন্যতম কারণ এটাই বলে মনে করছেন তিনি।

তিনি বলেন, আমার ছেলে প্রতিদিন আট-নয় ঘণ্টা পড়াশোনা করত। ও এত বড় হয়েছে তবুও ওর বাবার পরামর্শে ওকে স্মার্টফোন দিইনি। আমার ছেলের সফলতার অন্যতম কারণ আমার কাছে এটাই মনে হচ্ছে ছেলের হাতে স্মার্টফোন না দেওয়া।

তিনি আরও বলেন, ওর বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ওকে ছোট একটা মুঠোফোন দেওয়া হয়েছিল। দিনের ২৪ ঘণ্টায় তিন বেলা খাওয়ার সময়ে হয়ত ২০/২৫ মিনিট আমার স্মার্টফোন ও চালাত। এখন ছেলে স্নাতক শ্রেণিতে উঠেছে এখন ওর হাতে স্মার্টফোন দিব।

জানা গেছে, নোয়েলের বাবা ও মা সরকারি চাকুরিজীবী হওয়ায় দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেছেন। পড়াশোনা করতে হয়েছে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। ২০০২ সালে ময়মনসিংহ শহরের চরপাড়া এলাকায় জন্ম গ্রহণ করেন তিনি। এরপর বাবার চাকরির কারণে শিশু থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন খুলনা শহরের একটি স্কুলে। 

এর মধ্যে ২০১২ সালে নোয়েলের বাবা আনোয়ারুল কবিরের বদলি হয়ে যায় ফরিদপুরে। তার কর্মস্থল ছিল ফরিদপুর সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট। সেখানে তিনি উপাধ্যক্ষ পদে চাকরি করেন। ২০১৪ সালে ফরিদপুর জেলা স্কুলে ভর্তি হয়ে সেখান থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়ে উর্ত্তীর্ণ হন। পরে বাবার পরামর্শে বিজ্ঞান বিভাগ পরিবর্তন করে মানবিক বিভাগে ২০১৯ সালে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হন সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ ফরিদপুরের মানবিক শাখায়। সেখান থেকে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে মানবিক বিভাগে ঢাকা বোর্ডের সমন্বিত মেধা তালিকায় ২৮তম হয়ে উত্তীর্ণ হন।


সর্বশেষ সংবাদ