একক ভর্তি পরীক্ষার চেষ্টা চলছে, সম্ভব না হলে আগের নিয়মেই

ভর্তি পরীক্ষার্থী
ভর্তি পরীক্ষার্থী  © ফাইল ফটো

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, একক ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে আমাদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা চলছে। এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে আমরা চেষ্টা করছি একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর জন্য। এ বছর একক ভর্তি পরীক্ষা সম্ভব না হলে আগের নিয়মেই ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করা হবে।

রোববার (২৬ নভেম্বর) রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা ফল প্রকাশ নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, একক ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে পর্যালোচনা চলছে। আমরা চেষ্টা করবো, গুচ্ছের মতো সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে একটি একক ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার। এ বছর সেটি সম্ভব না হলে আগামী বছর থেকে কার্যকর হবে। এবার একক ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করা না গেলে আগের নিয়মেই ভর্তি পরীক্ষা হবে।

এদিকে চলতি বছর এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৯২ হাজার ৫৯৫ জন। দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সব মিলিয়ে আসন রয়েছে ৪৯ হাজারের মতো। সে হিসেবে জিপিএ-৫ ধারী অন্তত ৪৩ হাজার শিক্ষার্থী এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন পাবেন না।

অবশ্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলোয় আসন রয়েছে পাঁচ লাখের বেশি। পাশাপাশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন সংখ্যর হিসাবে উচ্চশিক্ষায় ভর্তির সুযোগ পাবেন সবাই। তবে শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য হবে তীব্র লড়াই। এ ছাড়া স্নাতক পর্যায়ে দেশে প্রায় ১৩ লাখ আসন আছে। ফলে ভর্তিযোগ্য শিক্ষার্থী না পাওয়ায় প্রায় আড়াই লাখ আসন ফাঁকা থেকে যাবে।

জানা গেছে, এইচএসসি ও সমমানে ভালো ফলাফল করা শিক্ষার্থীদের মূল টার্গেট থাকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ার। দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যায়লগুলোতে আসন রয়েছে ৪৯ হাজার। সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজে আসন রয়েছে প্রায় ১৩ হাজার। ফলে জিপিএ-৫ পেলেও অনেক শিক্ষার্থী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পাবেন না।

শুধু তাই নয়, জিপিএ-৫ পাওয়া অনেকে ভর্তি পরীক্ষায় সুযোগ পাবেন না। কম জিপিএ নিয়েও অনেকে পাবলিকে চান্স পাবেন। ফলে সুযোগ না পাওয়া জিপিএ-৫ ধারীর সংখ্যা বাড়বে। তবে তাদের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজে ভর্তির সুযোগ থাকবে। অনেকে দেশের বাইরেও পড়াশোনো করতে যাবেন।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও এ ধরনের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর তথ্য অনুযায়ী, শিক্ষার্থীদের পছন্দের শীর্ষে থাকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। এসব প্রতিষ্ঠানে সর্বমোট আসন আছে ৪৯ হাজার ২৫৫টি। দেশে ৯৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় চালু থাকলেও হাতেগোনা ১০-১২টি প্রতিষ্ঠান ছাত্রছাত্রীদের কাছে আকর্ষণীয়।

যদিও এসব প্রতিষ্ঠানে সবার ভর্তির আর্থিক সঙ্গতি নেই, তবু এ ধরনের প্রতিষ্ঠান বিবেচনা করলে ২০ হাজার আসন যোগ করা যায়। এছাড়া মেডিকেল ও ডেন্টালে আসন আছে ১২ হাজার ও দুটি আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ে (গাজীপুরের আইইউটি ও চট্টগ্রামে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন) ৪৪০টি। শিক্ষার্থীদের অনেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশের পর বিশেষায়িত কারিগরি শিক্ষায় ভিড়ে যায়।

এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪টি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ৭২০, ছয়টি টেক্সটাইল কলেজে ৭২০, নার্সিং ও মিডওয়াইফারি প্রতিষ্ঠানে ৫ হাজার ৬শ এবং ১৪টি মেরিন অ্যান্ড অ্যারোনটিকাল কলেজে ৬৫৪টি আসন আছে। যারা ইসলামি বিশেষজ্ঞ হতে চায় তাদের জন্য ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনার্সে ভর্তির জন্য প্রায় ৬ হাজার আসন আছে। সবমিলে আসন সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ৯০ হাজার। যদি ধরে নেওয়া হয় যে, ভর্তি পরীক্ষায় সবগুলোতে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীরাই সুযোগ পাবে।


সর্বশেষ সংবাদ