‘অথেনটিক-ক্রেডিবল-কমপিটেন্ট হলে একক ভর্তি পরীক্ষায় আপত্তি নেই’

অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান
অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান  © টিডিসি ছবি

আগামী শিক্ষাবর্ষে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনকে (ইউজিসি) দায়িত্ব দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ পরীক্ষা আয়োজনের উদ্দেশ্যে সম্প্রতি দেশের ৫৩ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের মতামত চেয়ে চিঠিও দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দেখভালের দায়িত্বে থাকা এই সংস্থাটি। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের ৪৮ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এ নিয়ে কোন মতামত দেননি বলে ইউজিসি সূত্রে জানা গেছে।

সম্প্রতি একক ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সঙ্গে কথা হয় দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের। এসময় তিনি এই পদ্বতির পক্ষে মত দিয়ে বলেন, এই পদ্ধতি যদি ‘অথেনটিক’, ‘ক্রেডিবল’ এবং ‘কমপিটেন্ট’ হয় তাহলে আমাদের কোন আপত্তি থাকার কথা নয়।

একক ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে ইউজিসির চিঠির উত্তর না দেয়ার বিষয়ে অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, কোন চিঠির কথা বলছেন আমি বুঝতে পারছি না। এ বিষয়ে যদি আমার মতামত চাওয়া হয় মতামত না জানানোর বিষয় নেই। কিন্তু এমন কোনো চিঠির কথা আমার মনে পড়ছে না।

একক ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে তিনি বলেন, একটি পরীক্ষার মাধ্যমে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি সম্পন্ন করার সিস্টেম তৈরি করা গেলে সেটি অবশ্যই ভালো। তবে বর্তমানে যেসব পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে তার সবগুলোই কমবেশি ত্রুটিযুক্ত। সব বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি ভর্তি পরীক্ষার আওতায় আনতে হলে অবশ্যই একটি গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি তৈরি করতে হবে।  

অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, আমাদের একক ভর্তি পরীক্ষায় আপত্তি নেই। তবে সেই পরীক্ষা পদ্ধতি অবশ্যই ‘অথেনটিক’, ‘ক্রেডিবল’ এবং ‘কমপিটেন্ট’ হতে হবে।

ইউজিসি সূত্রে জানা গেছে, সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একক ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের বিষয়ে মতামত চেয়ে গত ৩০ এপ্রিল ৫৩টি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মতামত জানিয়েছিল শুধুমাত্র দুটি বিশ্ববিদ্যালয়। পরবর্তীতে ১৫ জুনের মধ্যে মতামত জানানোর নির্দেশনা জানিয়ে পুনরায় দ্বিতীয় দফায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে চিঠি দিয়েছিল ইউজিসি। কিন্তু বর্ধিত সময়সীমা শেষ হলেও এখনও এ বিষয়ে কোনো মতামত জানায়নি ৪৮টি বিশ্ববিদ্যালয়।

গত ৩০ এপ্রিল থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত মাত্র ৫টি বিশ্ববিদ্যালয় মতামত জানিয়েছে। মতামত জানানো ৫ বিশ্ববিদ্যালয় হল- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন এন্ড এরোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।

এদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন এন্ড এরোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় চিঠিতে তাদের বিশেষত্ব এবং একক ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের বিষয় উল্লেখ করেছে। এছাড়া অপর ৪ বিশ্ববিদ্যালয় একক ভর্তি পরীক্ষার বিষয়ে ইতিবাচক মতামত জানিয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ১৫ এপ্রিল সাবেক রাষ্ট্রপতি মো: আব্দুল হামিদের নির্দেশক্রমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. মাহমুদুল আলম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে একক ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনে ইউজিসিকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। 

এর আগে ৩ এপ্রিল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সাথে শিক্ষামন্ত্রী এবং ইউজিসির এক সভায় ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সির (এনটিএ) মাধ্যমে এ ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ