ভারতের কঠোর ৫ সিদ্ধান্ত, পাকিস্তানের প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়া
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৪৮ AM , আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৪৮ AM

ভারতের কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার জেরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বড় পাঁচটি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বুধবার (২৩ এপ্রিল) ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তাবিষয়ক কমিটির বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়। পরে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি সিদ্ধান্তগুলো সাংবাদিকদের জানান।
এ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার জেরে ভারতের কড়া অবস্থান এবং পরপর পাঁচটি বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনার ঝড় উঠেছে দুই দেশের মধ্যে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছেন, ‘এই হামলার জবাব কড়াভাবেই দেওয়া হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’
হামলার সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছে পাকিস্তান। তবে ভারত তা মেনে নেয়নি। বরং একের পর এক কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে নয়াদিল্লি। এতে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
ভারতের পাঁচটি বড় সিদ্ধান্ত হলো—
সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত
সর্বপ্রথম ও সবচেয়ে বড় সিদ্ধান্ত ছিল সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত করা। পাকিস্তানের বহু এলাকার কৃষিকাজ এবং পানীয় জলের উৎস হচ্ছে সিন্ধু অববাহিকার নদীগুলো, বিশেষ করে ঝিলম, চেনাব, রবি, বিয়াস ও সাতলুজ। এই সিদ্ধান্ত পাকিস্তানের জন্য একটি বড় ধাক্কা হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ ঘোষণা
ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে আটারি-ওয়াঘা চেকপোস্ট অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যারা সম্প্রতি সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে এসেছেন, তাদের আগামী ১ মের মধ্যে ফিরে যেতে নির্দেশ দিয়েছে ভারত।
ভিসা বাতিল ও পাকিস্তানি নাগরিকদের ৪৮ ঘণ্টার সময়
ভারতে থাকা পাকিস্তানি নাগরিকদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশ ছাড়তে বলা হয়েছে। পাশাপাশি, সব ধরনের ‘সার্ক ভিসা এক্সেম্পশন স্কিম’ (এসভিইএস) বাতিল করেছে ভারত সরকার। আপাতত নতুন কোনো ভিসাও দেওয়া হবে না।
প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের দেশে ফেরার নির্দেশ
নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত পাকিস্তানি প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের এক সপ্তাহের মধ্যে ভারত ছাড়তে বলা হয়েছে। একইভাবে ইসলামাবাদে থাকা ভারতীয় প্রতিরক্ষা, নৌ ও বিমান উপদেষ্টাদেরও দেশে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দূতাবাসে কর্মকর্তার সংখ্যা কমানো
ভারতের ইসলামাবাদ দূতাবাসে কর্মরত কর্মকর্তাদের সংখ্যা ৫৫ থেকে কমিয়ে ৩০ জনে নামিয়ে আনা হচ্ছে। এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে ১ মে থেকে।
পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া
ভারতের এই পদক্ষেপগুলোর প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বলেন, ভারতের কর্মকাণ্ড অনুপযুক্ত ও উসকানিমূলক।
তিনি আরও জানান, এই বৈঠকে দেশের শীর্ষ বেসামরিক ও সামরিক নেতৃত্ব উপস্থিত থাকবে এবং ভারতের ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ’ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে।
রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম রেডিও পাকিস্তান জানিয়েছে, বৈঠকে ভারতের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক ও প্রতিরক্ষামূলক পদক্ষেপের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
সূত্র : দ্য ওয়াল, দ্য ডন