যুক্তরাষ্ট্রের হামলার কয়েক ঘণ্টা পর তেলআবিবে ইয়েমেনের পাল্টা জবাব
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৩২ AM , আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৩২ AM

মার্কিন বাহিনী ইয়েমেনের উপকূলীয় হুদায়দা শহরের কয়েকটি বন্দরে বিমান হামলা চালিয়েছে। জবাবে শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) পাল্টা হামলা চালিয়েছে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুথি। ইসরায়েলের রাজধানী তেলআবিবের উপকণ্ঠে দখল করা জাফায় ‘জুলফিকার’ নামে অত্যাধুনিক ব্যালিস্টিক মিসাইল দিয়ে এ হামলা চালায় গোষ্ঠীটি।
ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারি শুক্রবার এক ঘোষণায় এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, এই হামলার লক্ষ্য ছিল ইসরায়েলের বেনগুরিয়ন বিমানবন্দরের আশপাশের একটি সামরিক ঘাঁটি। খবর বার্তা সংস্থা মেহেরের।
ইয়েমেন এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা এমন এক সময় চালাল, যার কয়েক ঘণ্টা আগেই মার্কিন বাহিনী দেশটির উপকূলীয় হুদায়দা শহরের কয়েকটি বন্দরে বিমান হামলা চালায়। এতে কমপক্ষে ৭৪ জন নিহত এবং ১৭১ জন আহত হয়েছেন।
ইয়াহিয়া সারি বলেন, আমরা একটি সম্মিলিত সামরিক অভিযান পরিচালনা করেছি, যেখানে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের দুটি বিমানবাহী রণতরী ট্রুম্যান ও ভিনসনকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছি।
এ ছাড়া ইয়েমেনি প্রতিরক্ষা বিভাগ সানা প্রদেশে একটি মার্কিন এমকিউ-৯ ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করার কথা জানিয়েছে।
যদিও ইসরায়েলের তরফ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে এই হামলা যদি সফলভাবে নির্ধারিত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে, তাহলে তা ইসরায়েলের জন্য এক নতুন মাত্রার হুমকি হিসেবে আবির্ভূত হবে।
যুক্তরাষ্ট্র এই ড্রোনগুলো ব্যবহার করে মধ্যপ্রাচ্যে গুপ্ত নজরদারি জোরদার করেছে। একই সঙ্গে তাদের হামলাগুলোও নিয়মিত করেছে। তবে ইয়েমেনের স্বাধীন প্রতিরক্ষাব্যবস্থার ক্রমবর্ধমান সক্ষমতা এই অঞ্চলে নতুন সামরিক ভারসাম্যের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
এদিকে ইসরাইলের দখল করা অঞ্চলে ছোড়া জুলফিকার ক্ষেপণাস্ত্র মূলত ইরানি প্রযুক্তিনির্ভর। এই ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে ইয়েমেন থেকে সরাসরি ইসরায়েলের মূল ভূখণ্ডে হামলা কেবল সামরিক বার্তাই নয়, এটি ইসরায়েলের জন্য একটি কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জও বটে।
ইসরায়েলি ভূখণ্ডে এই হামলা বিশেষভাবে প্রতীকীও। কারণ এটি বেনগুরিয়ন বিমানবন্দর এলাকা ঘিরে রাখা নিরাপত্তাবলয়ের প্রতিরোধের মুখেও আঘাত হানে।
মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক স্তরে ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের ছায়া স্পষ্টই ইয়েমেন হয়ে আরও বিস্তৃত হতে শুরু করেছে।
ইয়েমেনের তরফ থেকে স্পষ্ট হুঁশিয়ারি এসেছে, ‘যুক্তরাষ্ট্র যদি আরও সামরিক সরঞ্জাম পাঠায় এবং ইয়েমেনের বিরুদ্ধে আগ্রাসন চালায়, তাহলে আমাদের আঘাত আরও বাড়বে। সে ক্ষেত্রে এই অঞ্চল শান্তি নয়, সংঘাতের দিকে ধাবিত হবে।’
এই ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রভাব মধ্যপ্রাচ্যে শুধু সামরিক নয়, কূটনৈতিক আলোচনাকেও তীব্র করে তুলবে। যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল, ইরান ও ইয়েমেন এখন এমন এক জটিল সমীকরণে আটকে পড়েছে, যেখানে প্রতিটি প্রতিক্রিয়া নতুন বিপর্যয়ের জন্ম দিতে পারে।