রাবির ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি চক্রে ছিল ৩০ সদস্যের গ্যাং!

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়   © সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা শেষ হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ‘এ’ ইউনিটের পরীক্ষায় প্রক্সি দিতে গিয়ে আটক হয়েছেন চারজন। আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডাদেশ দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।  

আটক হওয়া ওই চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এসময় উঠে এসেছে ৩০ সদস্যের একটি গ্যাংয়ের তথ্য। যারা ভর্তি পরীক্ষায় প্রক্সি হিসেবে কাজ করেছেন। আর এই গ্যাংটি পরিচালিত হয়েছে নওগাঁর একটি হোটেল থেকে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির কাছ থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, প্রক্সি চক্রের চারজন আটক হলেও একাধিক ভুয়া প্রার্থী পার পেয়ে গেছেন। যারা প্রক্সি পরীক্ষা দিয়েছেন, তারা অধিকাংশই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক চতুর্থ বর্ষ ও মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। তাদের কেউ কেউ কোন না কোন কোচিং সেন্টারের শিক্ষক হিসেবে কাজ করেন। আর সেখান থেকেই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পরিচয় ও প্রক্সির জন্য দেন দরবার হয় তাদের।

তবে তাদের মূল হোতা হিসেবে কাজ করছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন প্রভাবশালী শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে একজন পুরো চক্রটির ‘লীজ’ হিসেবে কাজ করেছেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের যারা মূলহোতা হিসেবে কাজ করেছেন তাদের মধ্যে একজন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে আছেন। তার সঙ্গে রয়েছে লোক-প্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আরেক শিক্ষার্থী। তাদেরকে আটক করার জন্য কাজ করছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

তাদের সঙ্গে আরো কেউ জড়িত কিনা সেটারও খোঁজ নিচ্ছেন তারা।

আরও পড়ুন: পুরুষদের কোটা দেয়ার সময় এসেছে: শিক্ষামন্ত্রী

এদিকে, গতকাল মঙ্গলবার প্রক্সি দিতে গিয়ে আটক হওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জান্নাতুল মেহজাবিনের কাছ থেকেও পাওয়া গেছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। এর আগেও বিভিন্ন চাকরি পরীক্ষার প্রক্সি দিয়েছেন তিনি। গত প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় প্রক্সি দিয়ে তিনজনকে পাস করান তিনি।

এছাড়াও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় জান্নাতুল মেহজাবিনের সঙ্গে প্রক্সি দিতে যান রনি নামে আরেক ভুয়া প্রার্থী। পরীক্ষা শুরুর আগে রনি নামে সেই প্রার্থীর সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিক বার কথা বলেন জান্নাতুল মেহজাবিন। এছাড়াও পরীক্ষা শেষে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় গোপনে রনি নামে সেই প্রার্থীকে একটি খুদেবার্তাও পাঠিয়েছিলেন জান্নাতুল মেহজাবিন। সেখানে রনি নামে সেই প্রার্থীকে জান্নাতুল মেহজাবিন আটক হওয়ার বিষয়টি জানান। খুদেবার্তায় জান্নাতুল মেহজাবিন রনিকে লিখেন, ‘কই তুমি, আমি ধরা খাইছি।’

রনির সঙ্গে মেহজাবিনের ম্যাসেঞ্জারে বিভিন্ন সময়ের কথোপকথনের চ্যাট থেকে এর আগেও বিভিন্ন পরীক্ষায় প্রক্সি দেওয়ার বিষয়ে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, জালিয়াতির ঘটনায় অভিযুক্তদের পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে। এদের সঙ্গে কারা জড়িত তা খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কিছু তথ্য ইতোমধ্যে পেয়েছে।  


সর্বশেষ সংবাদ