‘পদ্মা সেতুর নাটবল্টু খুললে বিচার হয় কিন্তু যৌন নিপীড়নে প্রশাসন চুপ থাকে’

চবিতে যৌন নির্যাতনের প্রতিবাদে জাবিতে মানববন্ধ
চবিতে যৌন নির্যাতনের প্রতিবাদে জাবিতে মানববন্ধ  © টিডিসি ফটো

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ছাত্রীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ এবং নির্যাতনের প্রতিবাদে চলমান আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে ৪ দফা দাবী নিয়ে মানবববন্ধন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

আজ শনিবার বিকেল পৌনে পাঁচটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারসংলগ্ন সড়কে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

গত রোববার (১৭ জুলাই) রাত সাড়ে নয়টায় চবি ক্যাম্পাসে পাঁচ তরুণের হাতে ওই ছাত্রী যৌন নিপীড়ন ও মারধরের শিকার হন। নিপীড়নের শিকার ছাত্রীর ভাষ্যমতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকায় পাঁচ তরুণ ওই ছাত্রীকে বেঁধে বিবস্ত্র করে মুঠোফোনে ভিডিও ধারণ করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে থাকা এক বন্ধু প্রতিবাদ করলে তাঁকেও মারধর করা হয়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

মানববন্ধনে চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী নিপীড়নকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে যৌন নিপীড়নবিরোধী সেল গঠন, সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের হলে প্রবেশের সময়সীমার প্রথা বাতিল এবং সর্বত্র নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ ৪ দফা দাবী জানায় শিক্ষার্থীরা।

আরও পড়ুন: আকাশে উড়ে যাচ্ছে হাকালুকি হাওরের পানি, ভাইরাল ভিডিও

জাবি সংস্কৃতি জোটের সভাপতি সৌমিক বাগচি বলেন, ‘পদ্মা সেতুর নাটবল্টু খুললে বিচার হয় যখনতখন। কিন্তু যেসমস্ত বিষয়ে আরও শঙ্কিত হওয়ার কথা সেসব জায়গায় দেখি এই প্রশাসন চুপ থাকে। নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এই সরকারে দায়িত্ব। যে দায়িত্ব পালন করতে এই প্রশাসন ব্যর্থ।’

ছাত্রফ্রন্ট জাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক কনৌজ কান্তি রায় বলেন, ‘জাবি ক্যাম্পাসে এক ধর্ষক যখন ধর্ষণ করে সেঞ্চুরী করে সেও কিন্তু এই ছাত্রলীগ করতো। তার বিচার কিন্তু হয়নি বরং সে দেশের বাইরে চলে গেছে। আমরা লাগাতার একটা স্বৈরাতন্ত্রের ভিতর দিয়ে যাচ্ছি। এটা শুধু চবিতে ঘটেছে এমন না। জাবিতে রাতের আধারে অনেক ঘটনা চাপা পড়ে যায় এগুলো তদারকি করা দরকার। সরকারকে বলতে চাই,  যতো বড়ই স্বৈরাতান্ত্রিক হন না কেন ইতিহাস বলে এর একটা বিচার হবেই হবে। আপনাদের এই অপরাধেই  আপনাদের পতন হবে।’

ছাত্র ইউনিয়নের জাবি সংসদের সভাপতি রাকিবুল হক রনি বলেন, ‘চবির ওই ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী যদি মুখ খুলতে ভয় পেতো, যদি মিডিয়া কাভারেজ না পেতো তাহলে কি হতো? এই ঘটনা ধামাচাপা পড়ে যেতো এবং তেমনটি হয়েই আসছে। কোনো নারী নির্যাতিত হলে, ধর্ষণ হলে সবার আগে আমাদের মাথায় আসে তার ড্রেসের সমস্যা ছিল, এতো রাতে কেন চলাফেরা করলো সেসব তুলে ধরা হয়। এটা আমাদের মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা। চবিতে যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তারা সবাই ছাত্রলীগ। পর পর সব ঘটনাতেই ছাত্রলীগ জড়িত থাকছে এটার কারণ তাদেরকে সীমাহীন ক্ষমতা দিয়ে রেখেছে। আর তাদেরকে বাঁচানোর চেষ্টা করে প্রশাসন। এই প্রশাসন এবং ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন একে অপরের পরিপূরক।’

তিনি আরও বলেন, ‘মানুষকে মানুষ মনে করার প্রবণতা উঠে যাচ্ছে বিশেষ করে ক্ষমতাসীন ছাত্ররা মানুষই মনে করেনা। তারা ভাবে তারা আজীবন ক্ষমতায় থাকবে। কিন্তু ইতিহাস তা বলে না। আজকে এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে হুশিয়ারি করে বলতে চাই, শুধু বিল্ডিং, ব্রিজ আর নারীর ক্ষমতায়নের ফাঁকা বুলি ছুড়লে হবে না এখান থেকে বেরিয়ে আসুন। যারা চবির এই ঘটনার সাথে জড়িত এবং যারা ঘটনা ধামাচাপা দিতে চেয়েছেন সবার বিচার করতে হবে। চবি ছাত্রলীগের সভাপতিকেও বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। যদি এই ঘটনা নিয়ে কোনো রকম তালবাহানা করে অভিযুক্তদের বাচানোর চেষ্টা করা হয় তবে তার ফল ভালো হবে না।’


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence