রাবিতে শিক্ষিকা লাঞ্ছিতের ঘটনায় বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী গ্রেফতার

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগের শ্রেণিকক্ষে শিক্ষিকাকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় বহিষ্কৃত সেই শিক্ষার্থী আশিক উল্লাহকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার (২৯ জুন) বিকেলে নগরীর মতিহার থানার ওসি তুহিন তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষিকা অধ্যাপক বেগম আসমা সিদ্দিকার করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় তাকে আটক করা হয়।

এ বিষয়ে নগরীর মতিহার থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত) তুহিন বলেন, আজ দুপুরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষিকা অধ্যাপক আসমা সিদ্দিকা হয়রানি, লাঞ্ছনা ও হুমকির অভিযোগ এনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন। সেই প্রেক্ষিতে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

মামলার এজহারে সূত্রে জানা যায়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের চতুর্থ বর্ষে ক্লাস চলাকালে একই বিভাগের মাসটার্সের শিক্ষার্থী আশিক উল্লাহ শ্রেণিকক্ষে ঢুকে হয়রানিমূলক ও মানহানিকর কথাবার্তা বলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। তাকে ক্লাস থেকে বের হয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিলে সে রুমের দরজা বন্ধ করে আমাকে বাইরে যেতে বাঁধা দেয়। এ সময় ক্লাসে উপস্থিত চতুর্থ বর্ষের ছাত্ররা দরজা খুলে দিয়ে আমাকে বাইরে আসতে সাহায্য করে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভাগে চরম অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। তাছাড়া এমন হীন কর্মকাণ্ডের কারণে বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আন্দোলন পালনকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কাজ কর্ম ও আইন শৃঙ্খলা অবনতি ঘটেছে।

এছাড়া আশিক উল্লাহ তার ফেসবুক পেইজ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কুৎসা রটনা, মানহানিকর ও অশালীন উক্তি ও বক্তব্য প্রকাশ করার মাধ্যমে আমাকেসহ আইন বিভাগের অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দকে সামাজিক ও একাডেমিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করেছে। এমনকি আমাকে মুঠোফোনেও বিভিন্নভাবে হয়রানিও হুমকি প্রদান করায় নিজের নিরাপত্তা চেয়ে এ মামলা করেন তিনি।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, এই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে হয়রানি ও হুমকির অভিযোগ আগেও ছিল। এর আগে সে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টাসহ বিভাগের শিক্ষক ও সহপাঠীদের নানাভাবে হয়রানি করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। একইভাবে আজ নিজ বিভাগের ক্লাস রুমে শিক্ষিকাকে লাঞ্চিত ও এর প্রেক্ষিতে ক্যাম্পাসে অস্থিতিকর পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে আশিক উল্লাহ নামের শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

প্রক্টর বলেন, হয়রানি, হুমকি ও লাঞ্ছনার ঘটনায় নিজের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে আটক করেছে পুলিশ। তাছাড়া এ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটিতে গিয়েছে। শীগ্রই এবিষয়ে কার্যকরী ব্যবস্থা নিবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। 

এর আগে, বুধবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক বেগম আসমা সিদ্দিকা ৪র্থ বর্ষের ক্লাস নেয়ার সময় কক্ষে ঢুকে তাকে নানাভাবে হয়রানিমূলক ও মানহানিকর কথাবার্তা বলে লাঞ্ছিত করেন। ফলে বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ হয়ে আন্দোলন শুরু করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হয়ে এমন হীন কাজের দায়ে তাকে বহিষ্কারের দাবি জানান তারা। ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষার্থে তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।


সর্বশেষ সংবাদ