ঘুম থেকে তুলে বললেন—‘এটা পলিটিক্যাল সিট, এখানে থাকতে পারবা না’

সিট থেকে নিচে ফেলা হয় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী
সিট থেকে নিচে ফেলা হয় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী  © সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ হবিবুর রহমান হলে জাবের হোসেন নামে এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে সিট থেকে নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই হল ছাত্রলীগের সভাপতি মোমিন ইসলামের বিরুদ্ধে। সোমবার (১৬ মে) রাত সাড়ে ১১টার দিকে হলের ৪২৬ নম্বর কক্ষ থেকে ওই শিক্ষার্থীর বিছানাপত্র সিট থেকে নিচে ফেলে দেওয়া হয়।

হল প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী জাবের হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের তৃতীয়বর্ষের শিক্ষার্থী। গত সপ্তাহে হল প্রাধ্যক্ষের মাধ্যমে তিনি ৪২৬ নম্বর কক্ষে ওঠেন। সোমবার রাত সাড়ে ১১টায় ঘুম থেকে তুলে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী গিয়ে জোরপূর্বক জাবেরের বিছানাপত্র বেড থেকে নিচে ফেলে দেন। অভিযুক্ত সবাই হল সভাপতি মোমিন ইসলামের অনুসারী বলে জানা গেছে।

ভুক্তভোগী জাবের অভিযোগ করে বলেন, ‘রাতে ছাত্রলীগের ১০-১২ জন নেতাকর্মী কক্ষে আসেন। তখন আমি ঘুমে ছিলাম। ঘুম থেকে তুলে আমার বিছানাপত্র বইসহ অন্য জিনিসপত্র ফেলে দেন তারা। এ সময় তারা বলেন, এটা পলিটিক্যাল সিট, এখানে তুমি থাকতে পারবা না। এখনই সিট থেকে নেমে যাবে। তারা এপ্লাইড ম্যাথম্যাটিকস ১৯-২০ সেশনের এক ছাত্রকে আমার সিটে ওঠানোর কথা জানান। এ সময় সেও উপস্থিত ছিল।’

জাবের আরও বলেন, ‘আমি আমার আবাসিক কার্ড দেখালে তারা বলেন, এসব কার্ড দেখিয়ে কোনো লাভ নাই। প্রভোস্ট তোমাকে উঠিয়েছে, তার কাছে যাও। আমাদের কাছে বলে কোনো লাভ নেই। ঘটনার পরে হল ছাত্রলীগের সভাপতি মোমিন ভাই আমাকে তার কক্ষে ডেকে নিয়ে বলেন, এটা রাজনৈতিক সিট। এ সিটের আশা তুমি করো না। রাজনৈতিক সিটে তুমি বরাদ্দ কেমনে পাও? তুমি এসব কথা প্রভোস্টকে গিয়ে বলো। তখন আমি প্রভোস্টকে বিষয়টি জানাই। তিনি সেই এপ্লাইড ম্যাথম্যাটিকসের ওই ছাত্রকে ডেকে নিয়ে সিটে না ওঠার জন্য বলেন।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হল সভাপতি মোমিন হোসেন বলেন, ‘সিটটা পলিটিক্যাল, দীর্ঘদিন আমাদের দখলে ছিল। কিন্তু প্রভোস্ট নতুন করে সিট বরাদ্দ দিয়ে ওই শিক্ষার্থীকে তুলে দিয়েছেন। যেসব সিটে আমাদের পলিটিক্যাল নেতাকর্মীরা আগে থেকেই ছিলেন তাদের সিট বরাদ্দ না দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের তুলে দিচ্ছেন। আমরা স্যারকে অনেকবার বলার পরও তিনি পলিটিক্যাল সিটগুলোতে নতুন করে বরাদ্দ দিচ্ছেন।’

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ছেলেটার বিষয়ে জানি। কাল রাত থেকে সমাধানের চেষ্টা করছি। নতুন ছেলের সঙ্গেও কথা বলেছি। আমি সব সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে আছি এবং তাদের যে কোনো সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।’


সর্বশেষ সংবাদ