রাবি ছাত্রলীগ

লুটেরাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে, হতে পারেন বহিষ্কার

হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি চিরন্তন চন্দ ও সাধারণ সম্পাদক মোমিন ইসলাম
হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি চিরন্তন চন্দ ও সাধারণ সম্পাদক মোমিন ইসলাম  © টিডিসি ফটো

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে শহীদ শামসুজ্জোহা হলে আবাসিক ছাত্রদের জন্য বরাদ্দকৃত খাবার লুটে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছে হল প্রশাসন। ঘটনার পর শনিবার (২৬ মার্চ) সন্ধ্যায় হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক একরামুল ইসলাম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, খাবার পরিবেশনকালীন ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা টোকেন ছাড়াই আমাদের কাছে একজনের জন্য পাঁচটা করে খাবারের প্যাকেট দাবি করে। আমরা তাদের জনপ্রতি এক প্যাকেট করে খাবার দিতে রাজি হই। কিন্ত তারা আমাদের আদেশ অমান্য করে জোরপূর্বক প্রায় ১২০ প্যাকেট খাবার নিয়ে যায়। এতে অনেক শিক্ষার্থীর টোকেন থাকা সত্বেও তাদেরকে সময় মতো আমরা খাবার দিতে পারিনি। তবে পরবর্তীতে আমরা পার্শ্ববর্তী হোটেল থেকে খাবার ক্রয় করে তাদের খেতে দিয়েছি।

আরও পড়ুন: স্বাধীনতা দিবসের খাবার লুটে নিল ছাত্রলীগ

এর আগে, এদিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা হলের ডাইনিংয়ে টোকেনধারী আবাসিক শিক্ষার্থীদের খাবার বিতরণকালে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন- গত ২৪ মার্চ নতুন নেতৃত্ব পাওয়া হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি চিরন্তন চন্দ ও সাধারণ সম্পাদক মোমিন ইসলামসহ তাদের অনুসারীরা।

প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, হলে খাবার বিতরণকালে হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি চিরন্তন ও সাধারণ সম্পাদক মোমিনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী টোকেন ছাড়া জোরপূর্বক প্রাধ্যক্ষের সামনেই ১২০ প্যাকেটের মতো খাবার ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এতে খাবার সংকটের সৃষ্টি হয় এবং অধিকাংশ সাধারণ শিক্ষার্থীদের টোকেন থাকা সত্ত্বেও তারা খাবার পায়নি।

সংকটে খাবার না পাওয়া সারোয়ার নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, টোকেন নিয়ে খাবার নেওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে থাকাকালীন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের এমন আচরণ দেখে আমার কান্না চলে এসেছিল। তাদের এমন আচরণ দেখে হল প্রাধ্যক্ষের কাছে আমার টোকেনটি জমা দিয়ে খাবার না নিয়েই চলে আসি। ছাত্রলীগের মতো এমন ঐতিহ্যবাহী এক সংগঠন আজকে স্বাধীনতা দিবসের মতো দিনে সামান্য খাবার নিয়ে যে আচরণ করেছে তা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

শহীদ শামসুজ্জোহা হলের প্রাধ্যক্ষ বলেন, আমরা ৪৮০ জনের খাবার পরিবেশন করেছিলাম। এর বিপরীতে আমাদের থেকে ৩৯০ জন শিক্ষার্থী টোকেন ক্রয় করেছিল। সে হিসেবে হলের স্টাফদের খাওয়ানোর পরেও আমাদের আরও অতিরিক্ত খাবার থেকে যাওয়ার কথা। তারা টোকেন ছাড়াই ১২০ প্যাকেট খাবার নিয়েছে বলেই এই সংকট তৈরি হয়েছে।

আরও পড়ুন: লুট নয়, ‘প্রশাসনের অব্যবস্থাপনায়’ খাবারে সংকট: ছাত্রলীগ

তিনি বলেন, অভিযুক্তরা ছাত্রলীগ বা যে দলেরই হোক না কেন, তারা প্রথমত হলের শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থী হিসেবে তারা হলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছে। আমি এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে তাদের হল থেকে বহিষ্কার করাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এরা ছাত্রলীগকে শেষ করে দিচ্ছে। এরা নামধারী ছাত্রলীগ। যারা স্বাধীনতা দিবসের দিনে এই জঘন্য কাজ করতে পারে, আমার ধারণা এদের ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করলে ছাত্রলীগের সুনাম অক্ষুন্ন থাকবে।

তবে এসব অভিযোগ করে খাবার সংকটের পাল্টা দায় হল প্রশাসনকে দিয়েছে শাখা ছাত্রলীগ। এ বিষয়ে হল শাখা সভাপতি চিরন্তন চন্দ এবং সাধারণ সম্পাদক মোমিন ইসলাম বলেন, আমাদের সকল কর্মীদের জন্য আমরা একসঙ্গে খাবারের প্যাকেটগুলো নিয়েছিলাম। আর ১২০ প্যাকেট খাবার নেয়ার অভিযোগটি পুরোপুরি ভিত্তিহীন। আমরা ৭০ প্যাকেটের মতো খাবার নিয়েছি। খাবার সংকটের এই বিষয়টি হল প্রশাসনের অব্যবস্থাপনার জন্যই হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ