ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

রোকেয়া-শামসুন্নাহারের ফি ১০ টাকা, সুফিয়া কামালে ২৪৫০ কেন?

কবি সুফিয়া কামাল হল
কবি সুফিয়া কামাল হল  © ফাইল ফটো

শিক্ষার্থীদের পরিচয়পত্র নবায়নে অতিরিক্ত ফি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কবি সুফিয়া কামাল হল প্রশাসনের বিরুদ্ধে। ছাত্রীরা বলছেন, করোনার কারণে দীর্ঘ দেড় বছর হল বন্ধ থাকার পরও এ ধরনের অতিরিক্ত ফি আদায় অমানবিক ও অযৌক্তিক। সুফিয়া কামাল হলের সব ধরনের ফি অন্য সব হলের চেয়ে তুলনামূলক বেশি বলেও তারা অভিযোগ করেন।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, একই ধরনের নতুন পরিচয়পত্র তৈরি করতে রোকেয়া ও শামসুন্নাহার হলে ১০ টাকা এবং ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলে ৭০ টাকা করে নেওয়া হয়। করোনার আগে সুফিয়া কামাল হল ছাত্রীদের কাছ ১ হাজার ২৫০ টাকা করে নেয়া হত। দেড় বছর বন্ধ থাকার পর গত অক্টোবরে হল খোলার পর সেই ফি এখন ২ হাজার ৪৫০ টাকা ধার্য করেছে হল প্রশাসন। যা অন্য সব হল থেকে কয়েকগুণ বেশি বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। ২০২১ সালের জুন থেকে ২০২২ সালের জুন মাস পর্যন্ত এই ফি ধার্য করা হয় বলে জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই হলের এক ছাত্রী বলেন, পরিচয়পত্র নবায়ন করতে ব্যাংকে ২ হাজার ৪৫০ টাকা জমা দিয়েছি। ব্যাংক রসিদে ২৪০০ টাকা সংস্থাপন ফি এবং ৫০ টাকা পরিচয়পত্রের জন্য উল্লেখ থাকলেও পুরোটা পরিচয়পত্র নবায়নের জন্য নেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

আরেক ছাত্রী বলেন, করোনার কারণে গত এক বছরে আমরা কেউ হলে ছিলাম না। তারপরও যেভাবে অতিরিক্ত ফি নিচ্ছে, তা পুরোপুরি অমানবিক। কারণ, আমাদের বেশিরভাগই মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান।

বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক ‘অপরাজেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে ফেসবুক গ্রুপে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন উমামা ফাতেমা নামের এক শিক্ষার্থী। তিনি লেখেন, কবি সুফিয়া কামাল হলে অযৌক্তিকভাবে হল কার্ড রিনিউর জন্য ২৪৫০ টাকা নেয়া হচ্ছে। রোকেয়া হলে যেখানে ১০ টাকা, শামসুন্নাহারে ১০ টাকা আর ফজিলাতুন্নেসা হলে ৭০ টাকা সে জায়গায় সুফিয়া কামালে এই ধরনের প্রশাসনিক স্বৈরাচার চালানো হচ্ছে। 

“আমাদের হল কার্ড রিনিউ ফি আগে থেকেই ১২৫০ টাকা নেওয়া হত, যা অন্য হল থেকে অনেক বেশি। তার উপর এখন প্রশাসন দুই সেশনের ফি মিলিয়ে ২ হাজার ৪৫০ টাকা নিচ্ছে। অথচ ২০২০-২১ সেশনে আমরা হলে ছিলাম না।”

হলের নিরাপত্তার প্রসঙ্গ টেনে ওই ছাত্রী লেখেন, বন্ধের সময় রুমে চুরি হয়েছে, যেটার তদন্ত পর্যন্ত করেনি হল প্রশাসন। হলটি মূল ক্যাম্পাস থেকে দূরে হওয়ার পরও প্রশাসন এই এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিতে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। তাহলে কেন ছাত্রীরা বছরের পর বছর এত টাকা দেবে?

ফারিয়া তাবাসসুম জোতি নামে এক ছাত্রী ফেসবুকে লিখেছেন, কোভিডের সময় হলে না থেকেও সিট বাতিলের সময় ১৫০০ টাকা দিতে হয়েছে। এমনকি সার্টিফিকেট তোলার জন্য প্রভোস্টের সাইন নিতে গিয়ে ৪০০ টাকা দিতে হয়েছে। সঙ্গে বাসনাদি ফি হিসেবে ৭৫০ টাকা। অন্যান্য হলে যে কাজ করতে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা লাগে, এই হলে তা করতে ৪ হাজার টাকা লাগে।

এদিকে রোকেয়া হল ও শামসুন্নাহার হলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুটি হলে এ ধরণের অতিরিক্ত কোন ফি নেওয়া হয় না। নতুন পরিচয়পত্র তৈরি করতে মাত্র ১০ টাকা করে নেওয়া হয়। হলের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ তথ্য জানান। তাছাড়া রোকেয়া হলের দুই শিক্ষার্থীও এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, বাড়তি ফি নেওয়া হচ্ছে এই মর্মে কোন অভিযোগ হয়নি। তবে শিক্ষার্থীরা হল প্রভোস্টের কাছে অনুরোধ করেছে যাতে এক বছরের হল ফি মওকুফ করে দেয়া হয়। বেশি ফি নেওয়া হচ্ছে- এমন কোন তথ্য আমার কাছে নেই। বাড়তি টাকা নেওয়া হলে আমরা হল প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করবো।

অতিরিক্ত ফি নিয়ে জানতে কবি সুফিয়া কামাল হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক শামীমা বানুর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। একাধিক আবাসিক শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাননি তারা।

তবে হলের আবাসিক শিক্ষক ড. মহসিনা আক্তার খানম বলেন, আমি এই বিষয়ে কিছু জানি না। তিনিও প্রভোস্টের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence