দুর্ঘটনা এড়াতে ঢাবির সলিমুল্লাহ হলকে ‘বিশেষায়িত’ করার ভাবনা

পাশ্চাত্য ও মুঘল স্থাপত্যশৈলীতে তৈরি হয় সলিমুল্লাহ মুসলিম হল
পাশ্চাত্য ও মুঘল স্থাপত্যশৈলীতে তৈরি হয় সলিমুল্লাহ মুসলিম হল  © সংগৃহীত

বারান্দাসহ বেশ কয়েক জায়গায় ফাটল দেখা দেওয়ার পর শিক্ষার্থী সংখ্যা কমিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হলকে ‘বিশেষায়িত হল’ করার কথা ভাবছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রায় শতবর্ষী এই হলে তাই এবার থেকে নতুন শিক্ষাবর্ষের কোনো শিক্ষার্থীকে সিট বরাদ্দ দেওয়া হবে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান জানিয়েছেন, ব্রিটিশ আমলে তৈরি এই হলটি বড় ধরনের ঝুঁকিতে রয়েছে। পর্যায়ক্রমে এখানে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা কমিয়ে আনার বিষয়ে শিগগিরিই সিদ্ধান্ত নিবেন তারা। এই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটির বারান্দায় যাতে শিক্ষার্থীদের না থাকতে হয়, সে জন্য এ বছর থেকেই হলে নতুন শিক্ষার্থী অ্যালোটমেন্ট দেওয়া হবে না।

বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকালে ফাটল দেখা দেওয়া ওই হলটি পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান উপাচার্য আখতারুজ্জামান। এসময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিজামুল হক ভূঁইয়া।

সলিমুল্লাহ মুসলিম হল নিয়ে নতুন ভাবনার বিষয়ে উপাচার্য বলেন, এই হলে যারা থাকবে, তারা কেউ বারান্দায় থাকতে পারবে না। নির্ধারিত কক্ষেও ঠাসাঠাসি করে থাকতে পারবে না। যেহেতু হলটি গুরুত্বপূর্ণ, তাই হলটিকে দ্রুত হালকা করতে হবে। নচেৎ বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকবে।

জানা যায়, ব্রিটিশ আমলে ১৯৩১ সালের ১১ অগাস্ট পাশ্চাত্য ও মুঘল স্থাপত্যশৈলীর আদলে দুইতলা এই হলটি তৈরি করা হয়। ঢাকার নবাব স্যার সলিমুল্লাহর নামে করা হয় নামকরণ। হলটিতে শুরুতে ১৭৮ জন শিক্ষার্থী বরাদ্দ দেওয়া হলেও বর্তমানে সে সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৮৯১ জনে। আর হলটিতে নিয়মিত থাকছেন সাত শতাধিক শিক্ষার্থী। আসন সংকটের কারণে হলের দ্বিতীয় তলার বারান্দায় সারি সারি বিছানা পেতে থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা।

সম্প্রতি হলের বারান্দাসহ একাধিক জায়গায় ফাটল দেখা দিলে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. মজিবুর রহমানকে আহ্বায়ক করে ঢাবির দুজন প্রকৌশলী ও বুয়েটের তিনজন বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে একটি ‘বিশেষজ্ঞ কমিটি’ গঠন করে ঢাবি কর্তৃপক্ষ। একই সাথে আগামী ৭ অক্টোবরের মধ্যে হলের বারান্দা থেকে খাট, বিছানাসহ ভারী জিনিসপত্র সরিয়ে নিতে শিক্ষার্থীদের নির্দেশও দেয়া হয়।

এ বিষয়ে উপাচার্য আখতারুজ্জামান জানান, বিশেষজ্ঞ কমিটি হলটিকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ উল্লেখ করে রিপোর্ট দিয়েছে। তাই কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে তারা কাজ করছেন।

‘বিশেষজ্ঞ কমিটি’র আহ্বায়ক ও হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. মজিবুর রহমান বলেন, এটা একটা ঐতিহ্যবাহী হল, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই হলে অ্যালটমেন্ট পেয়েছিলেন। তাই হলটিকে ঐতিহ্যের স্মারক হিসেবে বিশেষায়িত করার কথা ভাবছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।


সর্বশেষ সংবাদ