রাবিতে ইফতারে একইসাথে ছাত্রদল-ছাত্রশিবির-বাম ছাত্র সংগঠন
- রাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৩ মার্চ ২০২৫, ০৮:০২ PM , আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২৫, ০৮:০৬ PM

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের ইফতার মাহফিলে এক ছাদের নিচে বসে ইফতার করেছেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির বাম ছাত্রসংগঠনসহ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা। মতাদর্শগত পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও ধর্মীয় ও সামাজিক সম্প্রীতির অংশ হিসেবে তারা এই ইফতারে অংশ নেন।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী ভবনের সিসিডিসি গ্যালারির রুমে প্রেসক্লাবের ইফতার আয়োজনে এ দৃশ্য দেখা যায়।
প্রোগ্রামের শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহী। এসময় ইসলামি সংগীত পরিবেশন করেন শাখা ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি আব্দুল্লাহ মাসুদ এবং ইফতারের পূর্বে মোনাজাত করেন শাখা ছাত্রশিবিরের প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক নওশাজ্জামান।
রাবি প্রেসক্লাবের নেতারা জানান, ভিন্ন মতাদর্শের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়তে তারা প্রতি বছরই এ ধরনের আয়োজন করে থাকেন। ভবিষ্যতেও সম্প্রীতির এমন আয়োজন অব্যাহত থাকবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন। এ ধরনের ইফতার আয়োজন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ ধরনের ইফতার আয়োজন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন বলেন, ‘আল্লাহ তায়ালা যে আয়াত দ্বারা আমাদের উপর রোজা ফরজ করেছেন তা হলো: ‘হে ইমানদারগণ, তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে যেমনিভাবে তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর ফরজ করা হয়েছিলো।’ এই রমাদান মাস আমাদের তাকওয়া, দ্বীনদারিতা ও পরহেজগারিতার শিক্ষা দেয়। কাঁটাযুক্ত পথের মধ্যে দিয়ে হেঁটে গেলে যেমন সাবধানতা অবলম্বন করা হয়, জীবনে সেরকম সাবধানতা অবলম্বন করার নামই তাকওয়া।’
তিনি আরও বলেন, ‘রমজান মাসে আল্লাহর ভয়ে আমরা যেরকম পানাহ থেকে বিরত থাকি, সারাজীবন আমরা যদি গুনাহ থেকে বিরত থাকতে পারি তবেই আমরা সফল। এছাড়া মুসলমান হিসেবে সবসময় আমরা অন্য মুসলিম ভাইকে দাওয়াত দিয়ে ইসলামের পথে আনার চেষ্টা করব।’
জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক আখতার হোসেন মজুমদার বলেন, ‘দৈনন্দিন জীবনে আমাদের হালাল-হারাম মেনে চলার চেষ্টা করা উচিত। শুধু শূকরের মাংসই হারাম না, যদি হারাম উপার্জনের টাকা দিয়ে একটা হালাল ফল কিনি সেটাও হারাম হয়ে যাবে।’ সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘একটা মিথ্যা সংবাদ অনেক বড় ক্ষতি করতে পারে। তাই তারা যেন সবসময় সত্য লেখার চেষ্টা করে।’
নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও রাবি প্রেসক্লাবের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. হাসানাত আলী বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবে সাংবাদিকদের ভূমিকা অপরিসীম। এই বিপ্লবের কারণে আমরা রাজনৈতিক পরিচয় ভুলে গিয়ে একই ছাদের নিচে বসে ইফতার করতে পারছি। দেশের ক্রান্তিলগ্নে সকল শিক্ষার্থীকে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানাই।’ এছাড়াও তিনি রাবি প্রেসক্লাবকে ইফতার আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানান।
সমাপনী বক্তব্যে প্রেসক্লাবের সভাপতি জুবায়ের জামিল বলেন, ‘সবাইকে আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে উপস্থিত হওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তাকওয়া অর্জনের মাস হচ্ছে রমজান মাস। আমরা এই একটা মাস নিজেদের সংযত রেখে বিভিন্ন পাপ থেকে নিজেদের বিরত রাখি। রমজান মাস সাংবাদিকতার উপরও ব্যাপক প্রভাব ফেলে; শিক্ষা দেয় সততা ও ন্যায়ের পথে অগ্রসর হওয়ার জন্য। রমজানের শিক্ষা নিয়ে আমরা সারাবছর চলতে পারব বলে আশাবাদ রাখছি।’
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মোহা. ফরিদ উদ্দীন খান, ফোকলোর বিভাগের সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম, অধ্যাপক এফ নজরুল, অধ্যাপক ফরিদুল ইসলাম-সহ অনেকে।
আরো উপস্থিত ছিলেন রাবি শাখা ছাত্রদলের নেতা-কর্মী, রাবি শাখা ছাত্রশিবিরের নেতা কর্মী, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ফ্রন্ট, ছাত্র মিশন, ছাত্র অধিকার পরিষদ, বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রী, ছাত্র গণমঞ্চ, ছাত্র ফেডারেশন, বাঁধন, উদীচি, ক্যারিয়ার ক্লাব, স্টুডেন্ট রাইটস অ্যাসোসিয়েশন, পিডিএফ, সায়েন্স ক্লাব, সাবেক সমন্বয়ক বৃন্দ, গন অভ্যুত্থান মঞ্চ, সোচ্চার রাবি ইউনিট, রাবি সাংবাদিক সমিতি ও রাবি রিপোর্টার্স ইউনিটির সদস্যবৃন্দ।