জাবিতে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ, প্রশাসনিক ভবন অবরোধ

জাবিতে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ
জাবিতে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ  © টিডিসি ফটো

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা সম্পূর্ণভাবে বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করেছে।  

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বটতলায় জমায়েত হন। সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ছেলেদের হল ঘুরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান নেন। এ সময় তারা বিভিন্ন স্লোগান দেন— কোটা না মেধা, মেধা মেধা!, প্রশাসনকে খবর দে, পোষ্য কোটা কবর দে!, জনে জনে খবর দে, পোষ্য কোটার কবর দে!

ইতিহাস বিভাগের ৫০তম আবর্তনের শিক্ষার্থী নিবির ভূঁইয়া বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য পোষ্য কোটার কোনো যৌক্তিকতা নেই। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের একজন কৃষকের সন্তান যদি মেধার ভিত্তিতে এখানে ভর্তি হতে পারে, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে বড় হওয়া একজন শিক্ষার্থীর জন্য আলাদা সুযোগ-সুবিধা থাকার দরকার নেই। তাই আমরা পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছি।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবি উঠেছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও সেই ধারাবাহিকতায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করে। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের একাংশ আমরণ অনশনে বসে। পরে প্রশাসন পোষ্য কোটার ন্যূনতম সংস্কারের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা অনশন থেকে সরে আসে। কিন্তু আজ পোষ্য কোটার সুবিধাভোগীরা আন্দোলন করে এক সাধারণ শিক্ষার্থীর উপর চড়াও হয় এবং তাকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করে। এর প্রতিবাদে আমরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি।

এর আগে গতকাল (৩ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১২টার দিকে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে অনশনরত শিক্ষার্থীদের সাথে বৈঠকে বসেন উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান। তিনি পোষ্য কোটার সংস্কারের একটি রূপরেখা উপস্থাপন করলে শিক্ষার্থীরা অনশন কর্মসূচি স্থগিত করেন।  

অন্যদিকে, পোষ্য কোটার সুবিধা পুনর্বহালের দাবিতে আজ সকাল ১২টার দিকে প্রতিবাদ মিছিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার সমিতি, কর্মচারী সমিতি এবং কর্মচারী ইউনিয়ন। তারা দাবি জানান, পূর্বের নিয়ম অনুযায়ী পোষ্য কোটার সব সুবিধা বহাল রাখতে হবে।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক আব্দুর রহমান বাবুল বলেন, পোষ্য কোটা সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোনো ক্ষতি করে না। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য একটি প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা, যা দেশের প্রায় সব প্রতিষ্ঠানে বিদ্যমান। এটা আমাদের অধিকার। তাই আমরা পূর্বের নিয়ম পুনর্বহালের দাবি জানাচ্ছি। যদি আমাদের দাবি মানা না হয়, তাহলে আগামীকাল থেকে লাগাতার কর্মবিরতি চলবে।

বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, আমি একা এই সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্ট অনুযায়ী সংশ্লিষ্টদের সাথে বসে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

একদিকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা পোষ্য কোটা সম্পূর্ণ বাতিলের পক্ষে আন্দোলন করছে, অন্যদিকে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই সুবিধা পুনর্বহালের দাবিতে কর্মবিরতির হুঁশিয়ারি দিচ্ছে। প্রশাসনের জন্য এখন বড় চ্যালেঞ্জ হলো—উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতা তৈরি করা।  

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে পোষ্য কোটার বিরোধিতা ও সমর্থন নিয়ে চলমান এই উত্তেজনা আরও বড় সংকটের দিকে যেতে পারে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence