পোষ্য কোটা পুনর্বহালের দাবিতে ফের কর্মবিরতিতে রাবি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়   © সংগৃহীত

পোষ্য কোটা পুনর্বহালের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ফের দুই দিনের কর্মবিরতি পালন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসনিক ভবনের পাশে লিচু চত্বরে দিনব্যাপী এ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। পূর্ণদিবস কর্মবিরতি চলবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত। 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার্স সমিতির সভাপতি মোক্তার হোসেন বলেন, 'পূর্বঘোষিত কর্মসূচির আওতায় এই কর্মবিরতি পালিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে সংকট নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শিক্ষক প্রতিনিধি ও শিক্ষার্থী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আলোচনায় আমরা বুঝাতে চেয়েছি, এটা কোন কোটা নয়। অন্য সরকারি চাকরিজীবীরা যেমন সুবিধা পান, এটাও তেমনই একটি সুবিধা। আমরাও কোটার বিরুদ্ধে। তবে এই সুবিধাকে কোটা বলে বিভ্রান্ত সৃষ্টির কোন সুযোগ নেই।' 

তিনি আরও বলেন, জরুরি পরিষেবা হিসেবে শুধু পরিবহন, বিদ্যুৎ, চিকিৎসা, পরীক্ষা, পানি ও নিরাপত্তা প্রহরী—এই ছয়টি বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পূর্ণদিবস কর্মবিরতির আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। তাছাড়া বাকি সব কর্মকর্তা-কর্মচারী পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন করছেন।

অফিসার্স সমিতি জানিয়েছে, গত ৯ জানুয়ারি চলমান জটিলতা নিরসনে সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে, গত ১২ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধি, ১৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রসংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং ১৪ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করেছেন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। তবে আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় ফের আন্দোলনে নেমেছেন তারা। 

এদিকে কোটা জটিলতায় ঝুলে আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম। গত ৫ জানুয়ারি থেকে ভর্তির প্রাথমিক আবেদন প্রক্রিয়া শুরুর কথা থাকলেও কোন কারণ উল্লেখ ছাড়াই অনির্দিষ্ট কালের জন্য এ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। পূর্ব ঘোষণা অনুসারে ১২ এপ্রিল ‘বি’ ইউনিট, ১৯ এপ্রিল ‘এ’ ইউনিট ও ২৬ এপ্রিল ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার দিন নির্ধারিত হয়েছে। তবে চলমান সংকটে নির্ধারিত সময়ে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। 

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, চলমান সংকট নিরসনে এখন পর্যন্ত তেমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তবে আলোচনা চলছে। শীঘ্রই একটি পদক্ষেপ নেয়া হবে। দাপ্তরিক কাজে জটিলতা বাড়ে এমন কর্মকাণ্ড থেকে সরে আসার আহ্বান জানান তিনি।

এর আগে, গত বছর সেপ্টেম্বর থেকেই পোষ্য কোটা বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছিল শিক্ষার্থীরা।  পোষ্য কোটা  ৪% থেকে কমিয়ে ৩% রাখার সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ১ জানুয়ারি সহায়তা ও সাধারণ কর্মচারীদের সন্তানের জন্য ১% কোটা রেখে ভর্তি  বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। কিন্তু এ সিদ্ধান্তও প্রত্যাখ্যান করে পরদিন প্রশাসন ভবন তালাবদ্ধ করে কিছু শিক্ষার্থী এবং শতাধিক কর্মকর্তা কর্মচারীকে প্রায় ১২ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। ওইদিন রাতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে উপাচার্য পোষ্য কোটা সম্পূর্ণ বাতিলের ঘোষণা দেন।  


সর্বশেষ সংবাদ