ভিসি কোটা বাতিল, পোষ্য কোটা সংস্কার চায় জাবি শিক্ষার্থীরা

ভিসি কোটা বাতিল ও পোষ্য কোটা সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন করেন জাবি শিক্ষার্থীরা
ভিসি কোটা বাতিল ও পোষ্য কোটা সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন করেন জাবি শিক্ষার্থীরা  © টিডিসি ফটো

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ভর্তি পরীক্ষায় উপাচার্য কোটা বাতিল ও পোষ্য কোটা সংস্কার চায় শিক্ষার্থীরা। এরই অংশ হিসেবে চার দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
 
রবিবার (০৮ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে ‘গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলন’ এর ব্যানারে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।

মানববন্ধন থেকে চারটি দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। দাবিগুলো হলো- উপাচার্য কোটা বাতিল, পোষ্য কোটার যৌক্তিক সংস্কার করা, অভিন্ন প্রশ্নপত্রে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া এবং ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফি কমানো।

সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘জাবিতে যখন প্রথম কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলা হলো, তখন অন্যন্য ক্যাম্পাসগুলোতে কোটা নিয়ে আন্দোলন শুরু হয়ে গেছে। তার মানে এটা শুধু আমাদের দাবি না, এ দাবি আপামর ছাত্র সমাজের। আমরা অনেকদিন থেকেই আন্দোলন করে যাচ্ছি। কিন্তু প্রশাসন আমাদের কোনো স্পষ্ট বক্তব্য দেয়নি। বর্তমান প্রশাসন আপামর ছাত্রসমাজের সঙ্গে গাদ্দারি করে যাচ্ছে।’

ইতিহাস বিভাগের ছাত্রসংসদের সহসভাপতি শাকিল আলী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় ভিসি কোটা ও মুক্তিযোদ্ধা নাতি-নাতনি কোটা প্রজ্ঞাপন দিয়ে বাতিল করতে হবে এবং পোষ্য কোটার যৌক্তিক সংস্কার করতে হবে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটা স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি কোটা থাকতে পারে না। অতীতে যারা ভিসি কোটায় ভর্তি হয়েছিল তাদের অপকর্ম দেখেছি। যেখানে একজন সাধারণ শিক্ষার্থী ৬০ নম্বর পেয়েও চান্স পায়নি সেখানে ক্ষমতার ব্যবহার করে একটা ফোন বার্তার মাধ্যমে অকৃতকার্য হয়েও অনেকে ভর্তি হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ‘বিসিএসের মতো পরীক্ষায় আবেদন ফি ২০০ টাকা। আর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরিক্ষায় আবেদন ফি ৭০০-১০০০ টাকা। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আসন্ন ভর্তি পরীক্ষায় ফি কমিয়ে একটা যৌক্তিক ফি নির্ধারণ করতে হবে।’

বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করা না হলে উপাচার্য ২৪-এর যে শহীদদের ম্যান্ডেট নিয়ে গদিতে বসেছেন সেই গদিতে থাকতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৫০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী জিয়া উদ্দিন আয়ান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ কোনো প্রকার ভিসি কোটার আইন নেই। দেশের চারটি স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর ছাড়া অন্য কোথাও অথর্ব ভিসি কোটা নাই। পোষ্য কোটায় মাত্র ২৬ নম্বর পেয়ে পাস না করে ভর্তির সুযোগ পায়। এই পোষ্য কোটা যৌক্তিক সংস্কার করে ন্যূনতম পার্সেন্টেজ মার্ক রাখতে হবে।’

গণ-অভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল ও সংস্কারের কথা বললেও প্রশাসন শুধু মৌখিক আশ্বাস দেয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই, প্রজ্ঞাপন দিয়ে কোটার সংস্কার করতে হবে। খুবই লজ্জার সঙ্গে বলতে হয়, গণ-অভ্যুত্থানের পরে যেখানে মেধাভিত্তিক ব্যবস্থা হওয়ার কথা সেখানে বৈষম্য দূর করতে এখনো আমাদের দাঁড়াতে হচ্ছে। মেধাভিত্তিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে বৈষম্য দূর না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলমান থাকবে।’

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ভর্তি পরিচালনা কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে এবারের ভর্তি পরীক্ষায় থাকছে না মুক্তিযোদ্ধা নাতি-নাতনি কোটা। তবে পোষ্য ও ভিসি কোটার বিষয়ে সভায় কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে।

নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শোয়াইব হাসানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৫০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী জিয়া উদ্দিন, ইতিহাস বিভাগ ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি (ভিপি) শাকিল আলী প্রমুখ।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence