ঢাবির এসএম হলে মাইকে আজান দিতে বাধা দেওয়ার দাবিটি ঠিক নয়

ঢাবির সলিমুল্লাহ মুসলিম হল
ঢাবির সলিমুল্লাহ মুসলিম হল  © ভিডিও থেকে নেয়া

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হলে মাইকে আজান দেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এর ক্যাপশনে বলা হচ্ছে, হলে রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের নেতাদের ঘুমে ব্যাঘাত ঘটায় মাইকে আজান দেওয়া বন্ধ করে দেন তারা। তবে এ দাবি সঠিক নয় বলে হল সূত্রে জানা গেছে। এছাড়া হলে আজান বন্ধ থাকার যে খবর ছড়িয়েছে, তাও সঠিক নয়। দীর্ঘদিন পর সম্প্রতি মাইকে আজান দেওয়া শুরু হয়েছে হলের মসজিদে।

হল প্রশাসন বলছে, ২০০২ সালের দিকে একবার মাইক লাগালেও কয়েক মাস পর তা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর আর মাইক লাগানো হয়নি মসজিদে। এসএম হলের ইমাম আবুল কালাম নাঈম বলেন, ‘হলে আমি ২৫ বছর ইমামতি করি। মসজিদে মাইক না থাকায় মুখে আজান দেওয়া হতো। কয়েকদিন আগে কিছু ছাত্র হলের মসজিদে মাইক লাগানোর জন্য আবেদন করেন হল প্রশাসনের কাছে। তখন আমাকে বলা হয়, অন্য হলেও খোঁজ নিতে। ’

তিনি জানান, ‘আমি খোঁজ নিয়ে অন্য হলে মাইক থাকার কথা জানালে এসএম হলেও লাগানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি ছেলে হল ও ছাত্রী হল ছাড়া সব হলেই এখন মাইকে আজান হয়। শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল, শহীদুল্লাহ হল এবং একুশে হলে এখনো মাইক নেই। তবে লাগানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে শুনেছি। অন্য হলের মধ্যে কয়েকটিতে চার-পাঁচ বছর আগে থেকেই মাইকে আজান হয়। ফেসবুকে যে তথ্য ছড়িয়েছে, তা সঠিক নয়। আজান দিতে কেউ কখনো বাধা দেয়নি।’

আরো পড়ুন: পাবিপ্রবিতে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের নামে ব্যানার টাঙিয়ে শাস্তি দাবি 

গত ২০ বছরের মধ্যে এসএম হলে ছিলেন এমন কয়েকজন ছাত্র জানান, তারাও হলের মসজিদে কখনো মাইকে আজান শোনেননি। তবে প্রতি ওয়াক্তে মাইক ছাড়া মুখে আজান দেওয়া হতো। নামাজও নিয়মিত হয়। মাইক সরিয়ে নেওয়ার কথা তারা জানেন না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, ২০টি ছাত্র ও ছাত্রী হল এবং তিনটি ছাত্রাবাস রয়েছে। এর মধ্যে ছাত্র হল ১৪টি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোনও হলের মসজিদে মুয়াজ্জিন নেই। ফলে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আগে মাইকে আজান দেওয়া কঠিন। এটি প্রায়ই ইমামদের দিতে হয়।

তারা ছুটিতে গেলে বা বাইরে থাকলে মাইকে আজান দেওয়া সম্ভব হয় না। তবে সম্প্রতি কিছু হলে কর্মচারীরা এ দায়িত্ব পালন করেন। সে জন্য তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় কিছু অর্থ দেওয়া হয় বলে জানা গেছে।

১৯৯৬-৯৭ শিক্ষাবর্ষে এসএম হলের ৪৯ নম্বর কক্ষের আবাসিক ছাত্র আহমেদ সাইমুম বলেন, ‘আমার ২০০৬ সাল পর্যন্ত হলে যাতায়াত ছিল। তবে মাইকে আজান শুনিনি। মুখে আজান হতো। নামাজে কোনও বাধা ছিল না।’

২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের দুই শিক্ষার্থী বলেন, তারা কখনো হলের মসজিদ থেকে মাইকে আজান শোনেননি। রিডিং রুম ও মসজিদের মাঝামাঝি জায়গায় দাঁড়িয়ে মুখে আজান দিতেন ইমাম বা ছাত্ররা। নামাজে তাদের সমস্যা হয়নি। মসজিদের ছাদে গেলে একটি খাচা দেখা যেত। তবে বাইরে থেকে সেটি সেভাবে চোখে পড়ে না।

এ বিষয়ে এসএম হলের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, তিনি যতটুকু জানেন- ২০০২ সালের দিকে হলের মসজিদে মাইক লাগানো হয়েছিল। কয়েক মাস চলার পর সেটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর আর মাইক লাগানো হয়নি। এ বিষয়ে আর কোনো তথ্য নেই হল অফিসে।

ফেসবুকে ছড়ানো একটি ভিডিও দেখুন নিচে-


সর্বশেষ সংবাদ