১০০ বছরে ৩৩ লাখ শিক্ষার্থীকে উচ্চশিক্ষা প্রদান করেছে ঢাবি: উপাচার্য

  © জনসংযোগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের চেয়ারম্যান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেছেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে ১০০ বছরের বেশি সময় এই বিশ্ববিদ্যালয় মানবিক, মৌলিক ও প্রায়োগিক শিক্ষার সমন্বয়ে এ অঞ্চলে উচ্চশিক্ষা বিস্তার করে আসছে। এ পর্যন্ত এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রায় ৩৩ লাখ শিক্ষার্থীকে উচ্চশিক্ষা প্রদান করেছে। বাঙালি জাতির মুক্তির দিশারী এবং ইতিহাস-ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক, দেশের সর্বপ্রাচীন এ বিদ্যাপীঠ প্রতিষ্ঠার দ্বিতীয় শতকে পদার্পণ করেছে।

আজ বুধবার (২৬ জুন) নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের বার্ষিক অধিবেশনে সভাপতির অভিভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।

উচ্চশিক্ষা এবং উচ্চপ্রবৃদ্ধি ওতপ্রোতভাবে সম্পর্কিত উল্লেখ করে অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, জনমিতির লভ্যাংশ অর্জনের জন্য প্রয়োজন মানবিক ও প্রযুক্তির ব্যবহারে দক্ষ ও যুগোপযোগী মানবসম্পদ তৈরি করা। এই লক্ষ্যে একাডেমিক ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান ও ফিজিক্যাল মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন করা হয়েছে। এই দুটি পরিকল্পনা-সহ গৃহীত উদ্যোগগুলো বাস্তবায়ন করা গেলে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় বিশ^শিক্ষা-মানচিত্রে অনন্যসাধারণ অবস্থানে উপনীত হবে। আন্তর্জাতিক বাজার-উপযোগী বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত শিক্ষার্থী প্রস্তুত করাই আমাদের লক্ষ্য ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বৈশ্বিক মানদণ্ডে উন্নীত করতে নতুন নতুন উদ্ভাবনের উপর গুরুত্বারোপ করে উপাচার্য বলেন, নলেজ ইকোনমি’র যুগে টিকে থাকতে হলে অবশ্যই আমাদের নতুন ধারণা উপস্থাপন ও উদ্ভাবনে মনোযোগী হতে হবে। তিনি বলেন, যুগোপযোগী শিক্ষাকার্যক্রম, গবেষণা ও উদ্ভাবন, ইন্ডাস্ট্রি-ইউনিভার্সিটি সম্পর্ক, কোলাবরেশন-কোঅপারেশন, অটোমেশন এবং নেটওয়ার্কিং তথা আন্তর্জাতিক যোগাযোগ, ইন্টিগ্রেশন ও ইন্টিগ্রিটি, সাসটেইনেবিলিটি এবং নেতৃত্ব তৈরি বিশ^ব্যাপী উচ্চশিক্ষার অপরিহার্য অংশ। উচ্চশিক্ষা বিশ্লেষণাত্মক চিন্তা ও গবেষণার মাধ্যমে নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করে এবং বিশেষায়িত দক্ষতা বৃদ্ধি করে।

উপাচার্য বলেন, তরুণ শিক্ষকদের পেশাগত উৎকর্ষ সাধনের লক্ষ্যে একটি আবশ্যিক প্রশিক্ষণ কোর্স চালু করা হয়েছে। এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি আধুনিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। এছাড়া, শ্রেণিকক্ষে পঠন-পাঠনে শিক্ষার্থীদের আরও সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণ এবং শিখন-শেখানো পদ্ধতি বিশ্বমানে উন্নীত করার লক্ষ্যে ‘টিচিং ইভাল্যুয়েশন’ পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। মননশীল ও দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টি এবং সামাজিক উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে তিনি উচ্চশিক্ষার উপর গুরুত্বারোপ করেন। উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে উপাচার্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

অধিবেশনে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ ও উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার উপস্থিত ছিলেন। উপাচার্যের অভিভাষণ ও কোষাধ্যক্ষের বাজেট বক্তৃতার উপর সিনেট সদস্যগণ আলোচনায় অংশ নেন। 

অধিবেশনে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের ৯৪৫ কোটি ১৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকার রাজস্ব ব্যয় সংবলিত প্রস্তাবিত বাজেট এবং ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরের ৯৭৩ কোটি ৫ লাখ ৭৮ হাজার টাকার সংশোধিত বাজেট অনুমোদন করা হয়। উপাচার্যের অভিভাষণের পর কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ এই বাজেট উপস্থাপন করেন।


সর্বশেষ সংবাদ