পিস্তল দিয়ে ভয় দেখানোর ঘটনা বানোয়াট-মিথ্যাচার: রাবি ছাত্রলীগ সম্পাদক

রাবি ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক
রাবি ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক  © সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের এক নেতাকে ক্যাম্পাস থেকে ধরে নিয়ে হলকক্ষে আটকে রেখে মারধর, শারীরিক-মানসিক নির্যাতন ও পিস্তল ঠেকিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগকে বানোয়াট ও মিথ্যাচার বলেছেন অভিযুক্ত শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব। 

আজ বৃহস্পতিবার (৯ মে) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এ ঘটনা অস্বীকার করে তিনি একটি পোস্ট দেন। 

ফেসবুকের সেই পোস্টে তিনি বলেন, গত দুইদিন থেকে বিভিন্ন পত্রিকায় লেখা হচ্ছে আমি নাকি ছাত্রদলের নেতাকে পিস্তল দেখিয়ে ভয় দেখিয়েছি যা পুরোপুরি বানোয়াট ও মিথ্যাচার।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ৭ই মে সন্ধ্যার দিকে বেগম রোকেয়া হলের সামনে একটি বাইকে দুইজন ছেলে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মীকে দেখামাত্রই পালানোর চেষ্টা করে। ছাত্রলীগের নেতারা ছিনতাইকারী ভেবে তাদের পথরোধ করে ধরে ফেলে ও তারা কারা এবং কেন পালাচ্ছিল সেটা জানার জন্য মাদার বখ্শ হলে নিয়ে আসে। আমাকে আমার বন্ধু ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মনু মোহন বাপ্পা ফোন দিয়ে বলে ছিনতাইকারী সন্দেহে দুইজনকে আমরা ধরেছি। আমি ওদের প্রক্টরকে ফোন দিতে বলি ও তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে বলি। প্রায় ৩০ মিনিট পর আমি মাদার বখ্শ হলে গিয়ে তাদের জিজ্ঞাসা করি তারা কারা? একজন বলে তার নাম নাফিউল জীবন ছাত্রদলের সদস্য ও দপ্তর সম্পাদকের দায়িত্বে আছে আর আরেকজন পরিচয় দেয় তার নাম ইউনুস, এস. এম. হলে থাকে। কিন্তু সে ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে জড়িত না।

আমি তাকে জিজ্ঞাসা করি তুমি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দেখে চোরের মতো পালাচ্ছিলে কেন? সে জানাই সে সার্টিফিকেট তুলতে এসেছিল এবং সে আরো জানাই সে অসুস্থ ছিল দীর্ঘদিন আজকেই এসেছে হঠাৎ ছাত্রলীগ দেখে ভয় পেয়ে পালিয়েছে। আমি তার পরিচয় জানার জন্য তার নেতাদের ফোন দিতে বলি সে ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহী ও যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদুল মিঠুকে ফোন দেয়। ফোন লাউডস্পিকারে ছিল। তারা দুইজনই সনাক্ত করে নাফিউল জীবন তাদের কর্মী এবং তারা অনুরোধ করে আমরা যেন তাকে মারধর না করি। সে খুব অসুস্থ। 

ইতোমধ্যেই আমার রুমের সামনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ কমপক্ষে ১৫জন সাংবাদিক আসেন। আমি তাদের সবাইকে আমার রুমে করে এবং তাকে জিজ্ঞাসা করে আমি বা আমার কোনো নেতাকর্মী তাকে কোনো ধরনের মারধর বা নির্যাতন করেছি কি না। তখন সে সবাইকে বলেছে আমি তাকে কোনো মারধর করিনি এমনকি আমি যখন সহকারী প্রক্টর স্যারদের কাছে তাকে হস্তান্তর করি তখনও স্যারদের কাছে সে স্বীকারোক্তি দিয়েছে তাকে আমরা কেউ মারধর করিনি ,আর পিস্তলের কথা ত প্রশ্নই আসে না।  

এই ঘটনা নিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, "নিজ কক্ষে ৩ ঘন্টা আটকে রেখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের ২ নেতা নাফিউল ইসলাম ও তার বন্ধু ইউনুস খানকে মারধর ও চরম নির্যাতন করে। বিভিন্ন পোর্টাল ও অনলাইন পত্রিকায় এ ভয়ংকর নির্মমতার দৃশ্যটি আপনারা দেখেছেন। পিস্তল দেখিয়ে পায়ে গুলি করার হুমকি দেওয়া হয়। অবৈধ সরকারের অনাচারমূলক স্বার্থ সিদ্ধি সুসভিত সন্ত্রাসী বাহিনীতে পরিণত করা হয়েছে ছাত্রলীগকে। ক্যাম্পাসে এরা হিংস্র হায়নার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ছে। এরা হামলা চালাচ্ছে। গণতন্ত্রমনা মানুষের উপরেও। ছাত্রলীগ যুবলীগ দেশের সবচেয়ে খাতারনাক বিপদ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।"

বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিবের এসব মন্তব্য মিথ্যাচার দাবি করে ছাত্রলীগের এই সম্পাদক বলেন, বিএনপির রুহুল কবির রিজভীর মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা জানাই। সেই সাথে সবাইকে জানাতে চাই এই ভীতু নাফিউল জীবন সস্তা জনপ্রিয়তা পাওয়ার জন্য সাংবাদিক ভাইদের কাছে ভুল তথ্য ও মিথ্যাচার করেছে।

উল্লেখ্য, গত সোমবার (৬ মে) রাত ১০টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখ্শ হলের ২১৫ নম্বর কক্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক নাফিউল ইসলামকে ক্যাম্পাস থেকে ধরে নিয়ে নিজ হলকক্ষে তিনঘণ্টা আটকে রেখে মারধর, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ-হিল-গালিব  ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে। এসময় পিস্তল ঠেকিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ তুলে ছাত্রদল নেতা। ঘটনার পরপরই তিনি ফেসবুকে লেখেন, 'রুম নাম্বার ২১৫,মাদার বখশ হল, রাবি৷ রাত ১০ থেকে ১ টা, জোর করে তুলে নিয়ে আমার এবং বন্ধুর প্রতি যে নির্যাতন, অত্যাচার, জুলুম করা হলো এর ভার সহ্য করতে পারবে তো ছাত্রলীগ..!'


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence