অভিযোগ ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে

জাবি ক্যাম্পাসে মাভাবিপ্রবি ছাত্রকে দফায় দফার মারধর

আলী আক্কাস আকাশ ওরফে আকাশ তুহিন
আলী আক্কাস আকাশ ওরফে আকাশ তুহিন

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) এক শিক্ষার্থীকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। রবিবার (৩১ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন শেখ হাসিনা জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটে তাকে মারধর করা হয়। পরে প্রধান ফটকে (ডেইরি গেইট) এনে আরেক দফা মারধর করা হয়। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী।

ভুক্তভোগী লিটন মাহমুদ মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। অন্যদিকে অভিযুক্ত আলী আক্কাস আকাশ ওরফে আকাশ তুহিন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের (৪৭তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী এবং সাধারণ সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান লিটনের অনুসারী।

 

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী লিটন ও অভিযুক্ত আকাশ একসঙ্গে শেখ হাসিনা জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটে মাল্টিমিডিয়া ডিজাইন কোর্সে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। গত ৩১ মার্চ টি শার্ট বিতরণ নিয়ে আকাশের সাথে লিটনের বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে লিটনকে ক্লাসের ভেতর হেনস্তা করে আকাশ। এমনকি নিজেকে জাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের ছোটভাই পরিচয় দিয়ে ভুক্তভোগীকে মারধর করতে উদ্যত হন।

এরপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ডেকে নিয়ে লিটনকে টেনে হেঁচড়ে শেখ হাসিনা জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের গেইটে নিয়ে মারধর করা হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে (ডেইরি গেইট) এনে আরেক দফা মারধর করা হয়। এছাড়া আকাশের পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয়। এমনকি জাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লিটনের প্রভাব দেখিয়ে ভুক্তভোগীকে হলে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়। এ সময় অভিযুক্তরা বলতে থাকেন, ‘লিটন ভাই ব্যাক করেছে, এখন দেখি আমাদেরকে কে কি করতে পারে।’

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী লিটন মাহমুদ বলেন, ‘আকাশের সাথে সামান্য একটু কথা কাটাকাটি হয়েছিল। পরে সে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের বন্ধুদের নিয়ে এসে আমাকে মারধর করে। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের ক্ষমতা দেখিয়ে আমার কান ও মাথায় সজোরে আঘাত করে। আমি রোজা রেখেছিলাম, তাদেরকে বারবার বলেছি যে ভাই আমি রোজা। তারপরও আমাকে তারা মারধর করেছে।’

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আলী আক্কাস আকাশ ওরফে আকাশ তুহিন বলেন, ‘বাজার করে একটু দেরিতে ফেরায় লিটন আমাদের টি-শার্ট দিতে অস্বীকৃতি জানায়। তাই একটু কথা কাটাকাটি হয়েছিলো। পরবর্তীতে সে আমার দিকে তেড়ে আসে। এ সময় দায়িত্বরত শিক্ষকদের উপস্থিতিতে বিষয়টি মীমাংসা হয়। তবে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাময়িক দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক মোহাম্মদ আলমগীর কবির বলেন, ‘ভুক্তভোগীর অভিযোগপত্র পেয়েছি। কিন্তু আমরা কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছি না। কারণ ঘটনাটি শেখ হাসিনা জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটে প্রশিক্ষণরত অবস্থায় ঘটনা ঘটেছে।’


সর্বশেষ সংবাদ